২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যবসা ফেরাতে বাইডেনের সহায়তা চায় হলিউড

-

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গনগুলোর একটি সিনেমা বাজার। পৃথিবীর নানা প্রান্তের সিনেমা সংশ্লিষ্টরা এই ক্ষতি কাটাতে নিজ দেশের সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রযোজক ও হল মালিকদের জন্য স্বল্প সুদে এক হাজার কোটি টাকার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। পাশের দেশ ভারতেও সিনেমার বাজার চাঙ্গা করতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে সরকার। তবে বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় পোস্টার হলিউডে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার কোনো খবর এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। তবে কাজ হারিয়ে হলিউডের অনেক কর্মী অন্য পেশায় চলে গেছেন এমন খবর এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। ঠিক এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠি লিখেছেন হলিউডের স্টুডিওগুলোর কমান্ডার ইন চিফ। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ সিনেমা হলগুলো। কিছু হল খুললেও দর্শক নেই আগের মতো। ঝুঁকির মুখে সিনেমা এবং টেলিভিশনের সাড়ে চার লাখের বেশি কর্মসংস্থান।’
হলিউড স্টুডিও এবং বিনোদনসংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনগুলোর একটি বড় দল যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে সহায়তা চেয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রোডাকশন আগের মতো স্বাভাবিক হবে না। তাই এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিকে পুনরুদ্ধারের জন্য এবং সিনেমা, টেলিভিশন ও স্ট্রিমিং সার্ভিসের দর্শকদেরকে আরো ভালো কনটেন্ট দেয়ার জন্য আপনার সাথে মিলে একটি পলিসি অ্যাজেন্ডা তৈরি করতে আমরা প্রস্তুত।’
হলিউড রিপোর্টার পত্রিকার খবরে বলা হয়, কপিরাইট আইন আরো শক্তিশালী করার জন্যও জো বাইডেনকে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ করোনা মহামারীতে পাইরেসির সমস্যাও মহামারী আকার ধারণ করেছে।
এদিকে আগামী ৫ মার্চ থেকে নিউইয়র্কে সিনেমা হলগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রিউ কুমো সীমিত আসন পূর্ণ রাখার শর্তে শহরের সিনেমা হলগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছেন।
সম্প্রতি নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্কের গভর্নর বলেছেন, কর্তৃপক্ষ সিনেমা হলগুলোর ২৫ শতাংশ আসন পূরণ করে হল খুলতে পারবে। তবে কোনো হলেই ৫০ জনের বেশি দর্শক একসঙ্গে ছবি দেখতে পারবে না। এর সঙ্গে বিভিন্ন সুরক্ষাবিধি যেমনÑ সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক ব্যবহার, স্যানিটাইজিং নিশ্চিত করতে হবে।
সীমিত পরিসরে খুললেও নতুন এ সিদ্ধান্তে খুশি নিউইয়র্কের হল মালিকরা। হবেনইবা না কেন। প্রায় ১২ মাস ধরে সুনসান পড়ে আছে হলগুলো। পর্যবেক্ষকদের মতে, নিউইয়র্ক উত্তর আমেরিকার অন্যতম একটি সিনেমা হাব। এ শহরের হলগুলো খুলে গেলে তা প্রযোজকদের বড় বড় ছবি মুক্তি দিতে উৎসাহী করবে।
নিউইয়র্কে হল খোলার সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসতেই বেড়েছে থিয়েটার চেইন এএমসি ও সিনেমার্কের শেয়ারের দাম। এএমসির বেড়েছে ১৩ শতাংশ ও সিনেমার্কের সাড়ে ৭ শতাংশ।
করোনা মহামারী দুনিয়াজুড়ে চলচ্চিত্র ব্যবসাকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। গত বছরের মার্চ থেকে সিনেমা হলগুলো বন্ধ, ফলে তাদের আয় শূন্য। গত কয়েক মাসে হল খুলে না দেয়ায় গভর্নর অ্যান্ড্রিউ কুমোর সাথে হল মালিকদের প্রকাশ্যেই কয়েক দফা তর্ক হয়েছে। হল মালিকদের কথা ছিল ইনডোর রেস্টুরেন্ট, খেলাধুলার এরেনা খোলা থাকলে সিনেমা হল কী দোষ করল!
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার নিউইয়র্কে বেশ কমে এসেছে। এছাড়া ভ্যাকসিনেশন শুরু হওয়ায় প্রশাসনও বিধিনিষেধ শিথিল করতে শুরু করেছে। তবে কিছু জটিলতা এখনো আছে। যেমন হলের কর্মীরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশনে কোনো অগ্রাধিকার পাচ্ছেন না। নিউইয়র্কের গভর্নর বলেছেন, কোনো প্রতিষ্ঠান খুললেই তাদের কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়া যাচ্ছে না। কারণ ভ্যাকসিনের সরবরাহে ঘাটতি আছে। নিউইয়র্কে সিনেমা হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে এএমসি থিয়েটার চেইনের সিইও অ্যাডাম অ্যারন বলেছেন, ‘এটা মুভি থিয়েটার ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ উল্লেখ্য, এএমসি দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সিনেমা চেইন। যুক্তরাষ্ট্রের পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক ও ক্যালিফোর্নিয়ায় দেশটির অন্য সব অঞ্চল থেকে বেশি টিকিট বিক্রি হয়।

হলিউড রিপোর্টার ও ভ্যারাইটি অবলম্বনে

 


আরো সংবাদ



premium cement