২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বলিউডে বাড়ছে দক্ষিণের তারকাদের প্রভাব

-

গল্প এবং নির্মাণশৈলীর কারণে দক্ষিণ ভারতের সিনেমার জনপ্রিয়তা এখন উপমহাদেশ জুড়ে। এই জনপ্রিয়তাই হিন্দি ছবির বাজারে বড় ধাক্কা দিয়েছে। কন্নড়, মালয়ালাম, তামিল, তেলেগু এবং তুলু চলচ্চিত্র শিল্পকে একত্রে দক্ষিণের চলচ্চিত্র বলা হয়। যেগুলোর জনপ্রিয়তা দেখে হিন্দি ছবির প্রযোজকরা এখন চোখ দিয়েছেন দক্ষিণে। সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে দক্ষিণের ছবিকে বলা হয়েছে উপমহাদেশের জীবনঘনিষ্ঠ গল্পের কারখানা হিসেবে। অন্যদিকে হিন্দি ছবির হলিউড অনুকরণের সমালোচনা করা হয়েছে।
এছাড়া অনেক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে মিম ঘুরে বেড়াত যে বলিউড মানে দক্ষিণী সিনেমার রিমেক ইন্ডাস্ট্রি। তার পরও দক্ষিণের তারকাদের বলিউডে সেভাবে দেখা যায়নি। কিন্তু বাহুবলীর সাফল্য বদলে দিয়েছে ভারতের চলচ্চিত্র দুনিয়াকে। এখন বলিউড পরিচালকরা বেশ আগ্রহ নিয়ে দক্ষিণের তারকাদের দিয়ে ছবি করার কাজ করছেন। রাম গোপাল ভার্মার মতে, ‘দক্ষিণের বাণিজ্যিক তারকারা বলিউডের নাকের নিচে বসেই বেশ কয়েক বছর ধরে হিন্দি চলচ্চিত্রের বাজারে বড় প্রভাব ফেলেছেন। তাদের ছবি অনেক দামে ভাষান্তর করা হচ্ছে। বলিউড এসব কিছুই জানত না। কারণ তাদের দুনিয়া মোটামুটি বান্দ্রার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বান্দ্রা থেকে বেরোলে তারা যান লন্ডন। কিন্তু এখন বাহুবলী টু কিংবা কেজিএফ চ্যাপ্টার টুর মতো ঝড় তাদের মনোযোগ কেড়েছে। নাগার্জুনার মতো দক্ষিণের তারকাদের নিয়ে যখন আমি কাজ করেছি তখন সেগুলো ছিল চরিত্রনির্ভর কাজ। কিন্তু এখন প্রভাস কিংবা যশ মূল ধারার তারকা হওয়ার মতো অভিনেতা!’
ভারতীয় চলচ্চিত্র সাংবাদিক উদয়া তারা নায়ার অনেকদিন থেকেই অভিযোগ জানাচ্ছিলেন যে দক্ষিণের তারকারা হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের প্রাপ্য পাচ্ছেন না। কিন্তু তার মতে এখন দারুণ সময় চলছে। ‘বিভিন্ন আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রি থেকে প্রতিভাবান তারকাদের বলিউডে নিয়ে আসার এটাই উপযুক্ত সময়। আমি দুলকার সালমান, ফাহাদ ফাজিল, নিভিন পাউলি ও বিনীত শ্রীনিবাসনকে হিন্দি ছবিতে শক্তিশালী চরিত্রে দেখতে চাই। দুকার সালমান কিংবা ধানুশ এরই মধ্যে বলিউডে তাদের পা রেখেছেন। এটা ধারাবাহিক হওয়া প্রয়োজন।’
তবে বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, কোনো ট্রেন্ডই টেকে না বাণিজ্যিকভাবে সফল না হলে। ট্রেন্ড অ্যানালিস্ট অতুল মোহনের মতে, ‘পুরনো দিন ভিন্ন ছিল। কিন্তু এখন দিন বদলেছে। এখন তারকাদের ভারতজুড়েই দর্শকরা চেনেন। এক্ষেত্রে প্রভাসের কথাই বলা যায়। দক্ষিণের তারকাদের হিন্দি ডাব হওয়া ছবিগুলোর টিআরপি অনেক বেশি এবং সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও খুব জনপ্রিয়। এটাও তাদের সহায়তা করেছে।’
রজনীকান্ত, কমল হাসান, রোজা জানেমানের অরবিন্দ স্বামী কিংবা মেরি জংয়ের মাচো নাগার্জুনকে বলিউডের দর্শকরা নিশ্চয়ই ভোলেননি। কিন্তু তারা নিজেদের স্থানীয় ইন্ডাস্ট্রিতে যতটা জনপ্রিয় বলিউডে তেমনটা হতে পারেননি। অর্জুন রেড্ডিখ্যাত দক্ষিণী তারকা বিজয় দেবরাকোন্ডা করণ জোহারের একটি ছবির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ছবিটি মুক্তি পাবে দুটি ভাষায়। আর পর্যবেক্ষকরা একে দেখছেন সহায়ক কৌশল হিসেবে, যার মাধ্যমে দক্ষিণী তারকারা সহজে বলিউডে কাজ করতে পারবেন। সর্বোপরি টানতে পারবে অনেক দর্শককে।
বনি কাপুর দক্ষিণের অনেক ছবি বলিউডে রিমেক করেছেন। তার কথায়, ‘সময় বদলেছে। মানুষ এখন গ্ল্যামারের চেয়ে কনটেন্টের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। মাধবনকে ভারতের সব অঞ্চলের দর্শকরাই গ্রহণ করেছে।’


আরো সংবাদ



premium cement