১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আত্মজীবনী লেখা নিয়ে ব্যস্ত ফেরদৌসী রহমান

-

একজন ফেরদৌসী রহমান, বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের পথিকৃৎ। একাধারে একজন পল্লীগীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত ও প্লেব্যাক সিঙ্গার। সঙ্গীত জীবনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা সেই যে ছোটবেলায় শুরু হয়েছিল তা এখনো বহমান। জীবন চলার পথে গানে গানে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা, সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশের নানান পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন আমাদের দেশের সঙ্গীতাঙ্গনের এই গর্বিত ব্যক্তিত্ব। সবার প্রিয় ফেরদৌসী রহমান জীবনের প্রথম রেডিওর ‘খেলাঘর’ অনুষ্ঠানে গান করেন ১৯৪৮ সালে। ‘আসিয়া’ সিনেমাতে তারই বাবা পল্লী সম্রাট আব্বাসউদ্দিনের সুরে আবদুুল করিমের লেখা ‘ও মোর কালারে’ গানটি গান। অবশ্য তার আগেই ‘এ দেশ তোমার আমার’ সিনেমা মুক্তির মধ্য দিয়ে একজন প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে তার অভিষেক হয়। ফেরদৌসী রহমানের জন্ম কোচবিহারে ১৯৪১ সালের ২৮ জুন। জন্মের পর সেখানে বহুবার গিয়েছেন। কখনো একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গান পরিবেশন করার জন্য, আবার কখনো ভাওয়াইয়া উৎসবের বিচারক হিসেবে। ফেরদৌসী রহমান বলেন, ‘আমরা যারা বলা যায় একসাথে কাজ শুরু করেছিলাম তাদের অনেকেই আজ নেই। সে কারণে মন খারাপই থাকে। আবার করোনার কারণে দীর্ঘ দিন যাদের সাথে একসাথে কাজ করেছি সেসব প্রিয়মুখও চলে গেলেন। শ্রদ্ধেয় আনিসুজ্জামান স্যার, শ্রদ্ধেয় কামাল লোহানী, মোস্তফা কামাল সৈয়দসহ আরো বেশ কিছু প্রিয় মানুষ আমরা হারিয়েছি। এ ত এত চেনা মানুষ বিগত মাত্র কয়েকটি দিনে আমরা হারিয়েছি যে, মনটা সত্যিই ভেঙে গেছে। আমি চাই আল্লøাহ যেন সবাইকে সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন। আবার যেন সবার সাথে প্রাণ খুলে গল্প করতে পারি, সবার মুখে যেন হাসি দেখতে পারি। অন্যের হাসির মাঝেই নিজের সুখ না হয় খুঁজে নেবো।’ ফেরদৌসী রহমান বেশ কিছুদিন হলো নিজের আত্মজীবনী লিখছেন। তবে গত দু’বছর যাবত তিনি নিয়মিতই তার আত্মজীবনী লেখা নিয়ে ব্যস্ত। এই সময়ের সঙ্গীতশিল্পীদের গায়কী প্রসঙ্গে ফেরদৌসী রহমান বলেন, ‘এখন যারা গান করছেন তাদের মধ্যে অধ্যবসায়টা খুবই কম। মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, সৈয়দ আবদুল হাদী, খন্দকার ফারুক আহমেদের মতো বরেণ্য শিল্পীরা চাকরি করার পাশাপাশি গান করেছেন। তারা গানে অধ্যবসায়ী ছিলেন। আর এখন যারা গান করছেন তারা তো, শুধুই গান করছেন। যদি তাই হয় তাহলে সাধনা কেন করবে না? আমার কথায় রাগ হলেও আমি বলব, সঙ্গীত এমন একটি বিষয়Ñ যে যত বেশি সাধনা করবে সে তত বেশি স্থায়ী হতে পারবে।’ ফেরদৌসী রহমান তার নিজের বয়স নিয়ে কখনো লুকোচুরি করেননি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, মৃত্যুর পর বয়স নিয়ে অনেকের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়, তার ক্ষেত্রে যেন এমনটি না হয়। ফেরদৌসী রহমান বাংলাবাজার স্কুল থেকে এসএসসি, ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে ইউনেস্কো ফেলোশিপ নিয়ে লন্ডনের ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিক থেকে স্টাফ নোটেশন কোর্স সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘এসো গান শিখি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খালামনি হিসেবেও এখনো দারুণ জনপ্রিয় তিনি।
ছবি : মোহসীন আহমেদ কাওছার

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল