২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
৬ ইউপি নির্বাচনে ৬ টিতে আ'লীগের জয়

ইভিএম হচ্ছে শতভাগ স্বচ্ছতার প্রতীক : নির্বাচন কমিশনার

৬ ইউপি নির্বাচনে ৬ টিতে আ'লীগের জয় - ছবি : নয়া দিগন্ত

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ছয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। কেন্দ্র পরিশর্দনে নির্বাচন কমিশনার সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) হচ্ছে শতভাগ স্বচ্ছতার প্রতীক।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ভোট শেষে রাত ১০টার পর বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: কামরুল হাসান ও মেজর আহমেদ। এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে উথলী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার।

ওই দিন সকাল ৮ থেকে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন থাকায় নির্ধারিত সময়ের পরেও ভোটগ্রহণ করতে হয়।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, এখানে কোনো পক্ষপাতিত্ব করার সুযোগ নেই। আমরা ছয় শতাধিক নির্বাচন করেছি। কিন্তু কোনো পক্ষপাতিত্ব করিনি।

নির্বাচনে তেমন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর না মিললেও বাঁকা, হাসাদাহ ও উথলী ইউনিয়নে কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'আমি ঢাকা শহর থেকে ভোটের পরিস্থিতি দেখতে ইউনিয়নে এসেছি। এখানে সার্বিকভাবে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোট হচ্ছে। সবার সহযোগিতা এখন পর্যন্ত ৩০ ভাগ ভোট হয়ে গেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে নারী, পুরুষ ও বৃদ্ধ ভোটারের সাথে কথা বলেছি। তারা খুব খুশি হয়ে ভোট দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এ পর্যন্ত ৬০০-এর বেশি ইভিএমে ভোট গ্রহণ করেছি।

তিনি আরো বলেন, ইভিএম স্বচ্ছ। ভোটারের উপস্থিতি ছাড়া কেউ ভোট দিতে পারে না। আমি এখানে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও এজেন্ট সবার সাথেই কথা বলেছি। তারা এটি যে স্বচ্ছভাবে হচ্ছে তা তারা স্বীকার করেছে।

কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই এ পর্যন্ত। শুধু তাই নই! এক চেয়ারম্যান প্রার্থী অভিযোগ করেছিল তার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। আমি সরেজমিনে ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখি তা সঠিক নয়। অন্য এজেন্টদের সাথে কথা বলেছি তারা বলেছেন তারা আসে নাই। তাদের আরো অভিযোগ ছিল একজনের ভোট অন্যজন দিয়েছে- সেটাও সঠিক নয়। পরে সে ক্ষমা চেয়ে চলে গেছে।’

বাঁকা ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে যখন অভিযোগ আসে অভিযোগ পাওয়ার পর পরই সেখানে দায়িত্ব থাকা ম্যাজিস্ট্রেট গেছে, পুলিশ গেছে। তারা সেখানে পৌঁছে ১০০ ভাগ নিশ্চিৎ করেছেন যে সেখানে ভোটার, এজেন্ট সকলে পৌঁছেছে। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই। হয়তো কিছুটা শুরু হতে পারে কিন্তু সেই শুরুতে সম্পূর্ণ হতে পারে নাই।’

জীবননগর উপজেলা ছয় ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে ছয় জন নির্বাচিত হয়েছেনে তরা হলেন, উথলী ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল হান্নান পাঁচ হাজার ৩৬৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিদ্রোহী প্রার্থী আনসার প্রতীক নিয়ে আফজাজুল রহমান ধীরু পেয়েছেন তিন হাজার ৪০৫ ভোট।

বাঁকায় ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে পাঁচ হাজার ৭২০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো: আব্দুল কাদের প্রধান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হাফিজুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন দুই হাজার ৫৩৪ ভোট।

কেডিকে ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাত হাজার ৬৭৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত প্রার্থী খায়রুল বাশার শিপলু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এক হাজার ৬১ আনারস প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন তানভির হোসেন রাজিব।

হাসাদাহ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে ছয় হাজার ৪৪৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো: রবিউল ইসলাম বিশ্বাস। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি শামসুল আলম আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন এক হাজার ৫৬৫ ভোট।

রায়পুর ইউনিয়নে তিন হাজার ৫৬২ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো: তাহাজ্জাত হোসেন মির্জা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আনারস প্রতীক নিয়ে মো: সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন এক হাজার ৬৫২ ভোট।

মনোহরপুর ইউনিয়নে ছয় হাজার ৩০৫ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো: সোহরাব হোসেন খান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কামরুজ্জামান আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন দুই হাজার ৪৯২ ভোট।

জেলা সদর নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, সুষ্ঠু এ নির্বাচনে সাধারণ মানুষ খুশি। ইউনিয়নগুলোতে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট নেয়া হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল