২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিএনপির ছেড়ে দেয়া ৬ আসনের ভোট কেমন হলো

বিএনপির ছেড়ে দেয়া ৬ আসনের ভোট কেমন হলো। - ছবি : সংগৃহীত

বিরোধী দল বিএনপির এমপিদের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া জাতীয় সংসদের ছয়টি আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল দৃশ্যত একেবারেই কম। ছয়টি আসনেরই অনেক কেন্দ্রে দিনভর কর্মকর্তারা ভোটারের জন্য অপেক্ষা করলেও ভোটার উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা কয়েকজন।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে বগুড়া ৪ ও ৬, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ঠাকুরগাঁও-৩ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২ ও ৩ আসনে। এসব আসনেই ভোট হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি আসন ছাড়া আর কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবরও পাওয়া যায়নি। তবে বগুড়া-৪ আসন ছাড়া বাকি সব আসনেই কেন্দ্র দখল, এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে আওয়ামী লীগ বা তাদের জোটের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিক থেকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে।

তবে ঢাকায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাংবাদিক রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, ভোট চলাকালে অনেকগুলো কেন্দ্রে গিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া গেলেও ভোটারদের তেমন একটা উপস্থিতি তার চোখে পড়েনি।

তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো কেন্দ্রে দেখেছি এক/দু’জন ভোটার ভোট দিচ্ছেন বা ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসছেন।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ অর্থাৎ সদর আসনের ভোট চলাকালে সদর উপজেলা এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানায়, বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদের পদত্যাগের কারণে এ আসনটি শূন্য হয়েছিল। এখন উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার দলেরই একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। উভয় প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) ফাঁকাগুলি ছুঁড়তে হয়েছে।

বগুড়া-৪ ও ৬ আসনেও ইভিএমে ভোট হয়েছে। দু’টি আসনের মধ্যে বগুড়া-৬ আসনটি সদর আসন হিসেবে পরিচিত। ওই আসন থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও কয়েকবার নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তার দলেরই এক নেতা। এ আসনে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন প্রার্থীর দিক থেকে। যদিও আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।

তবে ছয়টি আসনের মধ্যে যে আসনটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে সেটি হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২। বিএনপির এমপি হিসেবে পদত্যাগ করা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া এ উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। তবে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আবু আসিফ আহমেদ গত কয়েক দিন ধরে ‘নিখোঁজ’ বলে তার দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল।

তার স্ত্রী ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নির্বাচনকে অসুস্থ আখ্যায়িত করে ভোট না দিয়েই ফিরে গেছেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন যে সব কেন্দ্রেই একজনের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিচ্ছে। যদিও নির্বাচনী কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

স্থানীয় সাংবাদিক মাসুক হৃদয় বলেন, এ আসনের দু’টি উপজেলার মধ্যে আশুগঞ্জে তারা ভোটার দেখেননি বললেই চলে। আর সরাইলে ভোটার আসলেও তা ছিল সংখ্যায় খুবই কম।

তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো কেন্দ্রে ছবি তোলার জন্যও কাউকে পাইনি আমরা।’

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement