২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সব দেশেই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে : সিইসি

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল - ফাইল ছবি

সব দেশেই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, যখন নির্বাচনীকালীন সরকার হবে, তখন বর্তমান সরকারের ধরনও পাল্টে যাবে।

সোমবার (১৩ জুন) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) একটি প্রতিনিধিদল ইসির সাথে সাক্ষাৎ করার পর, রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন হিসেবে সকল নির্বাচনেই আমরা সরকারের কাছে সহায়তা চাইবো এবং অবশ্যই সরকার সে সহযোগিতাগুলো করবে বলে আশা করি।

তিনি বলেন, নির্বাচনীকালীন সরকার যখন হবে, তখন বর্তমান যে সরকার তার ধরণও পাল্টে যাবে, তখন পলিসি নিয়ে উনারা কাজ করবেন না। পৃথিবীর সব দেশেই এটা আছে। নির্বাচনের কাজে আমাদেরকে সহায়তা করতে হবে। আইন অনুযায়ী, সরকার আমাদের সহযোগিতা করতে বাধ্য।’

তিনি আরো বলেন, ‘সব দেশেই তো দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হচ্ছে। ভারতেও হচ্ছে, বিলেতেও হচ্ছে, আমেরিকাতে হচ্ছে। সরকার কিন্তু সরকার। দল ভিন্ন জিনিস। আমরা যদি এই বিভাজনটা স্পষ্ট করতে পারি, এই মেসেজটা দিতে পারি, যখন কেবিনেট যেটাকে বলা হয়- রাষ্ট্রপতি থেকে বা প্রধানমন্ত্রী থেকে ডেপুটি.., এটাই কিন্তু মূল সরকার। বাকি যারা আছে সেটা কিন্তু আমলাতন্ত্র। কাজেই সরকার যেটা আছে, তারা কিন্তু শপথ নিয়েছেন যে, সংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবো, সমআচরণ করবো, পক্ষিপাতিত্ব করবো না। উনারা বলেন নাই যে, আমরা আমাদের দলকে আগামীতে আরো বেশি করে হেল্প করবো। স্বভাবই উনারা বলেন না। আমরা বিশ্বাস, উনারা উনাদের শপথটা জানেন। নির্বাচনের সময় অন্তত একটা সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচনের স্বার্থে, উনারা নির্বাচনকালীন সরকারের মতোই আচরণ করবেন। সরকারের মন্ত্রী হিসেবে, কোনো দলের মন্ত্রী হিসেবে নয়।’

‘সহায়তা মূলত পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রশাসনকেন্দ্রিক, আর রয়েছে ডিফেন্স মিনিস্ট্রি। অন্য কোনো মিনিস্ট্রি নিয়ে আমাদের মাথাঘামনোর কোনো দরকার নেই। জনপ্রশাসন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে হ্যান্ডেল করে, আর পুলিশ প্রশাসনকে হ্যান্ডেল করে হোম মিনিস্টি। সন্ত্রাসী বাহিনীকে যদি ইনভলব করা হয়, তাহলে ডিফেন্স মিনিস্ট্রি লাগবে,’ বলেন হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হওয়া খুবই প্রয়োজন। যেভাবেই হোক, যদি মূল বিরোধী দল নির্বাচনে না আসে, তাহলে নির্বাচন স্বচ্ছ হোক, অস্বচ্ছ হোক- যাই হোক ওটার কিন্তু গুরুত্ব, গ্রহণযোগ্যতা অনেক কমে যাবে। কারণ ডেমোক্রেসির মূল কথাই হচ্ছে পজিশন এবং অপজিশন।’

সিইসি বলেন, ‘উনাদের (টিআইবি) বলেছি, আপনারাও যারা পলিটিকস করেন না, পলিটিক্সের ঊর্ধে একটা অবস্থান আপনাদের আছে। প্রতিদিন যে আক্রমণাত্মক কমেন্টগুলো করা হচ্ছে, সেখান থেকে তাদের সরিয়ে নিয়ে এসে যদি টেবিলে মুখোমুখি করা যায়, তাহলে আলোচনা হবে গঠনমূলক। টেবিলের বাইরে গিয়ে যদি ধারাবাহিকভাবে আক্রমণাত্মক বক্তব্য পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে দেয়া হয়, তাহলে কিন্তু দূরত্ব কমবে না। কারণ আমরা চাচ্ছি, নির্বাচনে সকল পার্টি অংশগ্রহণ করুক।’

তিনি বলেন, তারা নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে- সেটাই নির্বাচনকালীন সরকার। অপজিশন থেকে যে দাবিগুলো করা হচ্ছে, এগুলো নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। কে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কে এই সব বিভিন্ন সরকার, সেটা কিন্তু আমাদের বিষয় নয়। এটা সাংবিধানিক বিষয়, পলিটিক্যাল লিডাররা যদি একমত হন, তারা দেখবেন। আমার কাছে মনে হয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বর্তমানে যা আইনে আছে, সেটাই নির্বাচনকালীন সরকার। তার সাথে আমাদের ইন্টারঅ্যাকশন বেড়ে যাবে। একটা দল থেকে তারা আসলেও, তারা কিন্তু দলের না। তখনো নয়, এখনো নয়। একজন মন্ত্রী কিন্তু দলের নয়। আমরা চাই তারা আমাদের সহযোগিতা করুক।’

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement