২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বন্ধ হল : বাড়ি যাওয়ার পথে মারধরের শিকার কুবির সাবেক হল সভাপতি

বন্ধ হল : বাড়ি যাওয়ার পথে মারধরের শিকার কুবির সাবেক হল সভাপতি - ছবি : নয়া দিগন্ত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করায় বাড়িতে ফেরার পথে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের অনুসারীদের মারধর করা হয়েছে।

রোববার (০২ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কোটবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহীর (২০১৫ সালে গঠিত কমিটি) অনুসারীরা তাদের মারধর করেছে।

জানা যায়, ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির জেরে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোববার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন। সন্ধ্যায় হল ত্যাগ করে বাড়ি ফেরার পথে মারধরের শিকার হয় ইলিয়াস হোসেনের অনুসারী কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন। এ সময় তার মাথায় আঘাত পেলে প্রক্টরিয়াল টিম তাকে হাসপাতালে পাঠায়। ইমরান হোসেন ছাত্রলীগের আগামী কমিটিতে শীর্ষ পদ প্রত্যাশী। এর আগে শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ আবির রায়হানকেও মারধর করা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, এ সময় তাদের ফোন কেড়ে নিয়ে ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিতে বাধ্য করা হয়। রেজা এ এলাহীর অনুসারী ও খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিপ্লব চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে এ ঘটনা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।

প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুমিল্লা সিটি কলেজ এলাকায় অটোরিকশায় থাকা একজনের সাথে মোটরবাইকে থাকা দু’জনের ধস্তাধস্তি হয়। পরে ওই দু’জন আরো চার থেকে পাঁচজন মিলে অটোরিকশায় থাকা ব্যক্তিকে কিলঘুষি মারতে থাকে। পরে তাকে পাশের গলির ভেতরে টেনে নিয়ে মারধর করে চলে যায়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইমরান হোসাইন বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমি বাড়ি ফেরার পথে কোটবাড়ি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফয়সালসহ কিছু স্থানীয় ছেলে আমাকে মারধর করে। এতে আমি মাথায় আঘাত পাই। এ সময় বিপ্লব চন্দ্র দাস আমার ফোন কেড়ে নিয়ে আমার ফেসবুক ওয়ালে একটা স্ট্যাটাস দেয়। কি দিছে আমি এখনো জানি না। আমি ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী হওয়ায় তারা আমাকে মারধর করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে মারধরের বিষয়টি অবগত। এখন তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।’

আরেক ভুক্তভোগী আহমেদ আবির রায়হান জানান, আমি বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে কোটবাড়ি এলাকায় গেলে বিপ্লব নামে একজন আমাকে তার বাইকে জোরপূর্বক উঠাতে চেষ্টা করে। কিন্তু আমি বাইকে উঠতে না চাইলে সে আমাকে হুমকি দেয়। পরে আমার কাছ থেকে ফোন নিয়ে আমার ফেসবুক আইডি থেকে একটা স্ট্যাটাস দেয়। আমাকে তাদের গ্রুপের সাথে কাজ করতে বলে এবং ফোন ফেরত দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে প্রক্টরিয়াল বডির গাড়ি আমাকে নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত বিপ্লব চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা দু’টি ঘটনা জানতে পেয়েছি। সন্ধ্যায় এক শিক্ষার্থীকে কোটবাড়িতে মারধরের কথা শুনতে পেয়ে সেখানে গিয়ে তাকে নিয়ে আসি। পরে ইমরানকে মারধরের ঘটনা শুনে তাকে দেখতে আসি। এখন তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তবে ঘটনাস্থলে কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি দাবি করে তিনি বলেন, আমি ফিন্যান্স বিভাগের ছাত্র ইকবালের (রেজা এলাহী অনুসারী) কাছে ঘটনাটি জানতে পেরে সেখানে যায়। তবে কাউকে আমি চিনি না।

এ ঘটনায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকলে আমরা ব্যবস্থা নিব। তবে বহিরাগত থাকলে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, আমরা ঘটনা শুনে সেখানে যায়। আগে থেকে আমাদের মোবাইল টিম রেডি ছিল। ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল টিমের সাথে আমাদের সদস্যরা সেখানে যান। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখছি। আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।


আরো সংবাদ



premium cement