২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মেহেদীর বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার গল্প

মেহেদীর বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার গল্প - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঘুরনগাছের আবুল হোসেন ও নাসিমা বেগম দম্পতির বড় ছেলে মেহেদী হাসান।

ছোটবেলা থেকেই মেহেদী দেখে আসছেন বাবাকে চালের মিলে কুলির কাজ করতে। মা দিনমজুরি করে অনেক কষ্টে সংসারটি আগলে রেখেছেন। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় মেহেদী স্কুল বন্ধ করে কাজও করেছেন ভাই-বোনসহ। এতে সংসারে একটু অর্থ জোগান হতো। তাই লেখাপড়ায় বেশি মনোযোগ দিতে পারেননি। অষ্টম শ্রেণিতে যখন জিপিএ–৫ পেলেন। তখন ভাবেন আমি তো ভালো ছাত্র, একটু মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করি। মা পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়েছেন। মেধা ও আর্থিক অবস্থা দেখে রুহিয়া ব্রাইট স্টার স্কুলের শিক্ষককেরা বেশি করে যত্ন নিয়েছেন এবং ফ্রি প্রাইভেট পড়িয়েছেন।

জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পাওয়ার পরও অর্থাভাবে পড়ালেখা বন্ধ হতে বসেছিল। গিয়ে ছিলেন ঢাকায় চাচাতো ভাইয়ের কাছে। কারণ একটি কাজ জুগিয়ে দিনমজুর বাবা ও মাকে সহযোগিতা করার আশায়। চাচাতো ভাই তার মেধা দেখে কোনোমতেই কাজ করতে দিলেন না। অনেক বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন। এসএসসি পরীক্ষায় দেখা গেল জিপিএ–৫ পেয়েছেন। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় ভর্তি হয়েছিলেন দিনাজপুর সরকারি কলেজে।

কলেজের বিজ্ঞান শাখায় মেহেদী হাসান সহপাঠীদের প্রাইভেট পড়িয়েছে। বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে কোনো রকমে দিনযাপন করেছেন। নিজে নিজে পড়ে কলেজে পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফল হওয়ায় স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা তার কাছ থেকে কোনো বেতন বা
পরীক্ষার ফি নিতেন না।

এইচএসসি পরীক্ষার পরে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানে বৃত্তির জন্য পরীক্ষা দেন মেহেদী হাসান। ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে একমাত্র তিনি বৃত্তি পান। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোচিং, চার মাস থাকা খাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ফরম খরচ ও পরীক্ষা দিতে আসা-যাওয়ার খরচ পেয়েছে। সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারী মেহেদী হাসান স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে প্রকৌশলী হবেন।

নিজের চেষ্টায় লেখাপড়া শিখে জীবন সংগ্রামে হার না মানা মেহেদী আজ বুয়েটে চান্স পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা কোথায় থেকে আসবে সেটাই এখন পরিবারের চিন্তা।

মেহেদী হাসান বলেন, ব্রাইট স্টার স্কুলের পরিচালক অশ্বীনি চন্দ্র বর্মন, দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক মানিক, চাচাতো ভাই ইসহাক, সাফি, রায়হানসহ কয়েকজন তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন।

মেহেদী হাসানের মা নাসিমা বেগম জানান, ছেলেতো বুয়েটে চান্স পেয়েছে কিন্তু ভর্তির টাকা কোথা থেকে আসবে এই টেনশনে তিনি অসুস্থ হয়ে গেছেন।

রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক বলেন, অদম্য মেহেদী হাসান একদিন দেশের মুখ উজ্জ্বল করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল