শাবিপ্রবিতে আন্দোলন : যা বলছে আটক সাবেক ৫ শিক্ষার্থীর পরিবার
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:২৬
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসির পদত্যাগের জন্য যে আন্দোলন হচ্ছে সেখানে অর্থ সহায়তা দেয়ার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ বিবিসিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটক ব্যক্তিদের সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানায় হস্তান্তর করা হবে।
আন্দোলনে অর্থ সহায়তা করা অপরাধের মধ্যে পড়ে কিনা, এমন প্রশ্নে নিশারুল আরিফ বলেন, ‘এর মধ্যে ইনসাইড কোনো স্টোরি আছে কিনা সেটা আমরা তদন্ত করে দেখবো। এখানে সহায়তাকারী যারা থাকে- আইনে তো আছে- অনেকে কাছে থাকে না, (কিন্তু) অপরাধ সংগঠন যখন হয় তখন তাদেরকে সহায়তা করে বিভিন্নভাবে। তাহলে তারাও আওতার (অপরাধের) মধ্যে চলে আসে। অর্থ দিয়ে সহায়তা করে যদি কেউ অনিষ্ট ঘটায় সেক্ষেত্রে তো তারাও আসামি হয়।’
নিশারুল আরিফ বলেন, ‘তারা কিসের জন্য টাকা দিচ্ছে সেটা তো আমরা এখনি বলতে পারবো না। খাবারের জন্য যে দিচ্ছে সেটা তো বলা যাচ্ছে না। জঙ্গিরাও তো অর্থ সংগ্রহ করে, বিভিন্নভাবে সেগুলো নিয়ে কাজ হয়েছে অতীতে। এখন কিসের জন্য দিচ্ছে, এটা নিয়ে তারা কী করবে এখনি বলা যাচ্ছে না। এখানে আসলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আটক ব্যক্তিদের পরিবার যা বলছে
এর আগে, সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর উত্তরা ও ফার্মগেট এলাকা থেকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক তিনজন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে তাদের পরিবার। কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) পুলিশ পাঁচজনকে আটক করার কথা নিশ্চিত করেছে।
যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেজা নূর মুঈন। তিনি স্থাপত্য বিভাগের সাবেক ছাত্র।
তার স্ত্রী তাকরিম বিবিসিকে বলেন, গতকাল রাতে উত্তরা থেকে তার স্বামীকে সিআইডি পরিচয়ে কয়েকজন নিয়ে যায়। তিনি বলেন, তারা দুজনই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী এমন একটা মানুষ তাকে যদি কেউ বলে আমি অসুবিধায় আছি, আমাকে টাকা ধার দাও সে দেবে। এটা সবাই জানে। সে যেটা করেছে আবেগ থেকে করেছে।’
‘আমরা সাবেক স্টুডেন্ট। আমাদের একটা আবেগ থেকে মনে হয়েছে তারা খেতে পারছে না এটা ভেবেই করেছি। কিন্তু কেন এত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয় একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা কোনো অপরাধ করিনি, এখন আমাদের কী করা উচিত সেটাই বুঝতে পারছি না,’ বলছেন তাকরিম।
তিনি জানান, এখন তিনি সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে
সাত দিন ধরে আমরণ অনশন করছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রীদের একটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রভোস্টের দুর্ব্যবহার এবং হলে বিছানা সংকট ও খাওয়ার সমস্যা সমাধানের দাবিতে দিন দশেক আগে শুধু ওই হলের ছাত্রীদের যে আন্দোলন শুরু হয় তা দুদিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়।
ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়া ছাত্রীদের উপর ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার অভিযোগ ওঠে।
গত ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের বেধড়ক পিটুনি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটার পর থেকে আন্দোলন জোরালো রূপ নেয়। উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি।
আন্দোলন সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে এবং শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলো ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সেটিও মেনে নেয়নি শিক্ষার্থীরা।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ভিসিসহ বেশ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
তবে ভিসির পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ বর্ণনা করে বাংলাদেশের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, এমন দাবি সম্পর্কে রাষ্ট্রের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা