২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জবির মাঠে সিটি করপোরেশনে মার্কেট, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ বেদখল ও খননকার্য বন্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও রাস্তা অবরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এই কর্মসূচি শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তা অবরোধ করে ও বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা মাঠ রক্ষার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর পুলিশ এলে শিক্ষার্থীদের সাথে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে যেতে বাধ্য হন।

সমাজতন্ত্র ছাত্র ফন্ট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহ-সভাপতি সুমাইয়া সোমা বলেন, আমাদের হলগুলো সব হাজী সেলিমের মতো দখলদাররা দখল করে নিয়েছে। এমনিভাবে আমাদের খেলার মাঠও তারা দখল করে নিচ্ছে। জগন্নাথ ইতিহাসের যা কিছু আছে সবকিছু দখল করে নিচ্ছে মনে হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন- ডিএসসিসি যদি এই মাঠের দিকে হাত দেয় তাহলে আমরা সেই হাত ভেঙে দেবো। প্রশাসন যদি এই দাবি না মানে তাহলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হল আন্দোলনের মতো আরেকটা আন্দোলন দেখবে।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী গাজী মুহাম্মদ শামসুল হুদা বলেন, এই ধূপখোলা মাঠের সাথে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রাণের স্পন্দন এই মাঠ। আমরা প্রয়েজনে সব বাধা ঠেলে আমাদের সম্পদকে রক্ষা করবো।

মাঠ আন্দোলনের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের এই আন্দোলনের সাথে কোনো ধরনের কুচক্রী মহল হাত দিলে তা আমরা প্রতিহত করবো। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়েছে। কিন্তু আগামীতে বন্ধ হবে না। আমরা কঠোরভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে। আমরা রোববার ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ করে মাঠে যাবো, ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করবে তাদের নির্দিষ্ট জায়গায়। রাস্তা অবরোধ করে বেআইনিভাবে আন্দোলন করলে পুলিশের দায়িত্ব সে আন্দোলন তুলে দেয়া। রাস্তায় আন্দোলন করে জনসাধারণের ভোগান্তি হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষণ করি। মাঠকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরাও প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। তারা আমাদের এখনো কিছু জানায়নি।

জানা যায়, গত ২৬ অক্টোবর গভীর রাতে সিটি করপোরশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ খননের কাজ শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সিটি করপোরেশনের মেয়র আশ্বাস দিলেও তাদের না জানিয়েই মাঠে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করা হয়েছে। এদিকে কাজ থামাতে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার কথা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য নিজস্ব কোনো মাঠ না থাকায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করে এক ভাগ তৎকালীণ সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ব্যবহার করার জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দেন। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি খেলার মাঠ হিসেবে ধূপখোলা মাঠটিকে ব্যবহার করছে। এই মাঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement