১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লকডাউনে মারাত্মক সঙ্কটে পড়েছেন অনেক মাদরাসাশিক্ষক

-

বৈশ্বিক মহামারী করোনার সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে চলমান লকডাউনে মাদরাসার শিক্ষকদের অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। বিশেষত প্রাইভেট বা ছোট মাদরাসাগুলো বন্ধ থাকার কারণে যেসব খাত থেকে তাদের আয় হতো সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যান্য বছর রমজান মাসে জাকাতের টাকা আসে মাদরাসার লিল্লা ফাণ্ডে, লকডাউনের কারণে জাকাতদাতাদের ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা যাওয়ার অজুহাতে অনেকেই এবার জাকাত দিচ্ছেন না।

এসব কারণে মাদরাসার সব ধরনের আয়ের পথ এখন বন্ধ বলা চলে। তাই মাদরাসার ভবন ভাড়া ও শিক্ষকদের নির্ধারিত বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন এসব মাদরাসার মুহতামিমরা। বাধ্য হয়ে ছাঁটাই করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। আর্থিক সঙ্কটে পড়ে অনেক মাদরাসা পুরোপুরি বন্ধও হয়ে যাচ্ছে।

এসব মাদরাসার শিক্ষকরা পড়ছেন চরম বিপাকে। সাধারণত ছোট মাদরাসায় যারা চাকরি করেন, তাদের উপার্জনের উৎস থাকে একটাই। মক্তব, নাজেরা ও হিফজ বিভাগের শিক্ষকরা নামমাত্র বেতন পান। চলমান লকডাউনে সেটাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক সঙ্কটে পড়েছেন তারা। পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও আলেমদের মধ্যে অনেকের ঘরেই খাবার নেই। তারা অন্যকোনো কাজও করতে পারছেন না। সরকারকে দ্রুত দেশের সব মাদরাসা খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এসব শিক্ষকরা।

নোয়াখালীর একটি হিফজ মাদরাসায় চাকরি করেন হাফেজ ফারুক। তার পরিবারে মা-বাবা ছাড়াও স্ত্রী ও দুই সন্তান আছে। মা-বাবা দুজনই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাদের জন্য মাসে কমপক্ষে দুই হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়। বাবা তেমন কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। পুরো পরিবারের আর্থিক জোগান দিতে হয় হাফেজ ফারুককেই। তিনি মাদরাসা থেকে বেতন পান মাসে ১৪ হাজার টাকা। রমজানের আগ মুহূর্তে সরকারি নির্দেশনায় মাদরাসা বন্ধ করে দেয়া হলে ওই মাদরাসার আয়ের সব উৎস বন্ধ হয়ে যায়। আটকে যায় হাফেজ ফারুকের বেতনও। তিনি এখন নিরুপায় হয়ে বাড়িতেই আছেন। পরিবারে চরম অর্থ সঙ্কট দেখা দিয়েছে তার। মা-বাবার ওষুধ ও পরিবারের অন্যান্য খরচ কীভাবে নির্বাহ করবেন বুঝতে পারছেন না তিনি। চক্ষুলজ্জার কারণে কারো কাছে সাহায্যও চাইতে পারছেন না।

কথা হয় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার মাদরাসাতুল ঈমানের এক শিক্ষকের সাথে। তিনিও চাকরি করতেন হিফজ মাদরাসায়। রমজানের আগ মুহুর্তে সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ ও পরবর্তীতে লকডাউন শুরু হলে তাদের মাদরাসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কর্মহীন হয়ে পড়েন একসাথে প্রায় আটজন শিক্ষক। লকডাউন শেষে সরকার মাদরাসা খুলে দিলে অন্যকোনো প্রতিষ্ঠানে তাদের চাকরি খুঁজতে হবে। এ পর্যন্ত বেকার বসে থাকতে হবে তাদের।

ময়মনসিংহের ভালুকার এক মাদরাসাশিক্ষক জানান, লকডাউন শুরু হলে তাদের মাদরাসার সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিজেদের বাড়িতে চলে যায়। মাদরাসার আয়ের সব পথ বন্ধ থাকলেও মুহতামিম শিক্ষকদেরকে নির্ধারিত বেতনের অর্ধেক করে দিয়ে যাচ্ছেন। লকডাউন কত দিন চলবে, মাদরাসার মুহতামিমই বা কত দিন বেতন চালাতে পারবেন, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন এই শিক্ষক। বলছেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তিনি যেন সব ঠিক করে দেন।

কওমি মাদরাসার সমন্বিত সর্বোচ্চ শিক্ষা বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহুদ্দীন রাজু এ বিষয়ে বলেন, রমজান মাস কওমি মাদরাসা- শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তির সময়। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ মুসলমানদের সহযোগিতায় চলে। রমজান মাসে লিল্লাহ ফান্ডে বড় ধরনের সহযোগিতা আসে। মাদরাসা বন্ধ থাকায় সেটাও আসছে না। সবমিলিয়ে কওমি মাদরাসা অনেক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দ্রুত মাদরাসাগুলো খুলে দেয়ার জন্য আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা তদবির করছি।

এছাড়াও গত সোমবার কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশের ৪৫তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সময় মুফতি রুহুল আমীন ঈদের পর যথাসময়ে মাদরাসার কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন সিরিয়ায় আইএস-এর হামলায় সরকার সমর্থক ২০ সেনা সদস্য নিহত ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু জনসমর্থনহীন সরকার জনগণের আওয়াজ নির্মমভাবে দমন করে : রিজভী সরিষাবাড়ীতে স্কুলছাত্র হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি

সকল