২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

১০ মাস পর উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

১০ মাস পর উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা - ছবি : সংগৃহীত

অর্থ সঙ্কট ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের জটিলতার কারণে প্রায় ১০ মাস ধরে বন্ধ প্রাথমিক পর্যায়ের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি। নতুন দায়িত্ব পাওয়া ডাক বিভাগের মোবাইল লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ এর মাধ্যমে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে এ উপবৃত্তির টাকা তুলে দেয়া হবে।

ওইদিন উপবৃত্তি প্রদানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। দীর্ঘ ১০ মাস পরে ২০২০ সালের এপ্রিল-জুন কিস্তির উপবৃত্তির টাকা পাবে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বৃত্তি পাওয়ার তথ্য এন্ট্রির সময় চতুর্থ দফা বাড়িয়েছে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প। শিক্ষার্থীদের তথ্য সার্ভারে ইনপুট দিতে আরো বাকি থাকায় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এরপর আর কোনো সময় বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা এবং ১ ফেব্রুয়ারি দুই মন্ত্রী নতুন নিয়মের উপবৃত্তির উদ্বোধন করবেন বলেও জানানো হয়।

প্রকল্পের তথ্যমতে, সোমবার তৃতীয় দফায় তথ্য এন্ট্রির শেষ দিন ছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে ৬৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান তথ্য এন্ট্রি করেছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত শিক্ষার্থীদের জন্মসনদের জটিলতায় পড়েছে।

সর্বশেষ তথ্য নিয়ে সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুলের সাথে বৈঠক করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম এবং প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়) পরিচালক মো. ইউসুফ আলী। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে তথ্য এন্ট্রির সর্বশেষ তথ্য নিয়ে আলোচনা হয় এবং চতুর্থ বারের মতো সময় বাড়ানো, উপবৃত্তি বিতরণের তারিখ নির্ধারণ হয়।

সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর তথ্য এন্ট্রি হয়েছে। বাকিদের তথ্য এন্ট্রির সময় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে এরপরে আর কোনো সময় বাড়ানো হবে না। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে উপবৃত্তির বিতরণের উদ্বোধন হবে।

গত ১৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণের জন্য সার্ভিস চার্জ দশমিক ৭৫ পয়সা ধরে নগদের সঙ্গে চুক্তি করে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প। চুক্তি অনুযায়ী, জিটুপি (সরকার টু পাবলিক) পদ্ধতিতে উপবৃত্তি টাকা বিতরণ করবে নগদ। চুক্তিতে উপবৃত্তির সুবিধাভোগী অর্থাৎ শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন এবং শিক্ষার্থীর মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ডাটা এন্ট্রি করা বাধ্যতামূলক করা হয়।

২৮ ডিসেম্বর থেকে ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরুর পর নানা জটিলতার পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের। এরমধ্যে অন্যতম স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন না থাকা। ভর্তির সময় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন না নেওয়া, অভিভাবকদের কাছে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন না থাকা। এছাড়াও তারা ইউনিয়ন পরিষদ বা ওয়ার্ডে জন্মনিবন্ধন আনতে গিয়েও সার্ভার জটিলতায় পড়েছে।

এরসঙ্গে নগদের সার্ভারে সমস্যা, মফস্বল এলাকায় ইন্টারনেটের ধীরগতি, মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের খুঁজে না পাওয়ার কারণে ডাটা এন্ট্রির কাজ চলে কচ্ছপ গতিতে। শিক্ষার্থীদের তথ্য এন্ট্রির হার কাঙ্ক্ষিত না হওয়ায় এ পর্যন্ত চার দফা সময় বাড়ানো হলো। সর্বশেষ ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য সার্ভারে ইনপুট দেয়ার সময় ছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমদিকে নগদের সার্ভার সমস্যা, পরে জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত নানা জটিলতায় আশাব্যঞ্জক ডাটা এন্ট্রি হয়নি। সার্ভারের সমস্যা অনেকটা কেটে গেলেও জন্মনিবন্ধনের সমস্যা থেকেই যায়। সর্বশেষ নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে চা বাগানের শিশুদের ডাটা এন্ট্রি নিয়ে। কারণ চা বাগানের কাজ করা বাবা-মা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় এসব শিশুদের তথ্য এন্ট্রি দেয়া যাচ্ছে না। তবে যারা জন্ম সনদের জটিলতায় তথ্য এন্ট্রি করতে পারবে না তাদের জন্য বিকল্প পদ্ধতিতে উপবৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement