২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাবি : গবেষণা চুরির শাস্তিতে পৃথক ২ ট্রাইব্যুনাল, উন্নয়ন ফি অর্ধেক মাফ

-

চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০১৯-২০) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর উন্নয়ন ফি ৫০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। সভায় তিন শিক্ষকের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির শাস্তি নির্ধারণে পৃথক দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। সেই সাথে কমিয়ে আনা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ছুটি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিন্ডিকেটের এক নিয়মিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান ও অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের যৌথ গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির শাস্তি নির্ধারণে এর আগের সিন্ডিকেট সভায় ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হলেও ট্রাইব্যুনালে কারা থাকবেন তা সেদিন নির্ধারিত হয়নি। বৃহস্পতিবারের সভায় আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো: রহমত উল্লাহকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালের বাকি দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন হবেন বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের প্রতিনিধি থেকে এবং অন্যজন হবেন অভিযুক্তদের (সামিয়া-মারজান) পক্ষ থেকে। শিগগিরই ওই দুই সদস্যের নাম ঠিক করে ভিসি মো: আখতারুজ্জামান ট্রাইব্যুনালকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেবেন। এটি সর্বোচ্চ আট সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে।

তারা জানান, চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে ২০১৮ সালে সিন্ডিকেটের এক সভা থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি একাডেমিক কোনো শাস্তি পাননি। তার শাস্তি নির্ধারণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী ও সিন্ডিকেট সদস্য এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিনকে চেয়ারম্যান করে আরো একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এর বাইরে কিছু নিয়োগ-পদোন্নতি-চাকরিচ্যুতির বিষয়ে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীষ্মকালীন ছুটি ৪০ দিন থেকে কমিয়ে ২০ দিন করা হয়েছে। অন্যদিকে শীতকালীন ছুটি ১৭ দিন থেকে কমিয়ে ৭ দিন করা হয়েছে। এছাড়াও বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকের কথা বিবেচনায় নিয়ে সভায় চলতি শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন ফি অর্ধেক (৫০ শতাংশ) কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে অনেকদিন ধরেই উন্নয়ন ফি কমানোর দাবি করে আসছিল। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের উন্নয়ন ফি ৫০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এদিকে, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন ও অধ্যাপক ড. আবদুস সবুর খানের ফল জালিয়াতির তিন বছর পার হলেও সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায় আসা অধ্যাপক বাহাউদ্দিনের ভুলে ভরা গবেষণা ও একই গবেষণায় দুই ডিগ্রি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান ওরফে বাহালুলের যৌন নিপীড়নে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ এবং সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ড. লীনা তাপসী খান (মুহসীনা আক্তার খানম)-এর পিএইচডি গবেষণায় জালিয়াতির বিষয়গুলো সিন্ডিকেটে ওঠেনি। এদের অনেকেই ভিসির আস্থাভাজন বলে বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানকে মোবাইলে ফোন দিলে তিনি বলেন, এগুলোর কোনো ফরমাল অভিযোগ আমরা পাইনি। পত্রিকায় নিউজের বিষয়ে বলা হলে তিনি বলেন, পত্রিকা তো কত কথাই বলতে পারে সবকিছু তো আর আমলে নেয়া যায় না। তাছাড়া এগুলো প্রোপার ওয়েতে না আসলে আমরা কিছু করতে পারি না।


আরো সংবাদ



premium cement