২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
করোনাকালে শিক্ষা ঝুঁকি

আগামী বছরও শিক্ষাপঞ্জি নড়বড়ে হওয়ার আশঙ্কা

- প্রতীকী ছবি

চলতি বছরের মধ্যে দেশের করোনা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও আগামী এক বছরেও শিক্ষাপঞ্জিতে স্থিতিশীলতা আসছে না। বরং বর্তমান শিক্ষাবর্ষের মতো আগামী বছরেও শিক্ষাপঞ্জি নড়বড়ে হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থগিত হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণ এবং উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়েও বড় ধরনের চাপে থাকবে শিক্ষার্থীসহ বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অন্য দিকে আগামী বছরের মার্চ মাসের পূর্বনির্ধারিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠান নিয়েও যথেষ্ট সংশয়ের কারণ রয়েছে। কেননা করোনার কারণে কোনো স্কুলই নিয়মমতো তাদের শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা নিতে পারেনি। ফলে শিক্ষার্র্থীদের মধ্যে কারা এবং কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে সেটি নিয়েও নতুন করে ভাবতে হবে সব স্কুল কর্তৃপক্ষকেই।

এ দিকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর স্থগিত হওয়া পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষার্থীরা অটো প্রমোশনের পর উপরের ক্লাসে গেলেও তাদের মেধা এবং দক্ষতার জন্য বিশেষ নজর দিতে হবে। ফলে নতুন ক্লাসে প্রমোশনের পর তাদেরকে আলাদাভাবে ক্লাসে মূল্যায়ণ পরীক্ষার ওপরও জোর দিতে বলা হয়েছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আগামী বছরে পালাক্রমে ক্লাসে ফেরানোর পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে।

এতে যেসব ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি সেসব ক্লাসে পালাক্রমে ক্লাস নেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ফলে এই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাও নেয়া হবে আলাদাভাবে। ফলে মূল ক্লাস এবং পরীক্ষা গ্রহণে স্কুলগুলোকে বাড়তি চাপের মধ্যে থাকতে হবে। আর যার ফলে পর্যায়ক্রমে আরো আঘাত আসবে পুরো বছরের শিক্ষাপঞ্জিতে।

জাতীয় কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) মো: ফরহাদুল ইসলাম এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে জানান, করোনার এই চলমান সঙ্কট কেটে গেলে বর্তমান শিক্ষাবর্ষের বাকি সময়ের জন্য নতুন একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। এই পরিকল্পনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খোলার পর মোট কর্মদিবসের ওপর ভিত্তি করেই মূলত ৩০ দিন বা ৫০ দিনের শ্লট (ভাগ) করে সেই সময়ে ক্লাসগুলো কিভাবে হবে কিংবা করোনার দীর্ঘ ছুটির সময়কার ছুটে যাওয়া ক্লাসগুলো কিভাবে রিকভারি হবে সেটি নিয়ে কাজ করছে একটি কমিটি।

উচ্চ ক্ষমতার এই কমিটি আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্যও একটি পাঠ পরিকল্পনা বা নির্দেশনা তৈরি করবে। কেননা এখন যে শিক্ষার্থী ক্লাস সেভেনে পড়ছে সেই শিক্ষার্থী আগামী বছরে ক্লাস এইটে উঠবে। কাজেই আমাদের দায়িত্ব হবে এই ছাত্রটি যেন পেছনের ক্লাসের ছেড়ে আসা পাঠটিও উপরের ক্লাসের বা পাঠ্যসূচির সাথে আয়ত্বে নিতে পারে তার জন্যও একটি পরিকল্পনা করা।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক মনে করেন, করোনা চলে গেলেও আমাদের পূর্বেকার শিক্ষাপঞ্জি কখনোই আর আগের অবস্থানে ফিরে যাবে না।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করে জানিয়ে দিয়েছে যে, করোনার এই দুর্যোগ আগামী আরো দু’বছর এই পরিস্থিতি থাকতে পারে। তাই শিক্ষকদের দূরশিক্ষণ আর অনলাইনে অভ্যস্থ হতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আরো কিভাবে সেবা দেয়া যায় সেটি উদ্ভাবন করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement