২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম

৭৪ হাজার জনবল পাবে বর্ধিত বেতন

-

সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সরকার। ফলে সপ্তম পর্যায়ের এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৭৪ হাজার পরিবার উপকৃত হবে। বর্ধিত হারে বিভিন্ন পর্যায়ের এই ৭৪ হাজার জনবল বেতন পাবে। করোনার কারণে একনেক না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে প্রকল্পটি সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছেন। গত ২৭ বছর ধরে ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশন থেকে জিও জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের ষষ্ঠ পর্যায় গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। কার্যক্রমের ধারা চলমান রাখতে জানুয়ারি থেকে সপ্তম পর্যায়ের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে একনেকের বৈঠক বিলম্বিত হওয়ায় প্রকল্পের অনুমোদন আটকে ছিল। ফলে চলমান এই কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত জনবল ও তাদের পরিবারগুলো কষ্টে জীবনযাপন করছে। তাই মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী সোমবার প্রকল্পের অনুমোদন দেন। আর গতকাল বুধবার পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগ থেকে জিও দেয়া হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তিন মাসের বেতন তারা একসাথে পাবে। প্রকল্পের সাথে জড়িত সারা দেশের ৭৩ হাজার ৭৬৮টি মসজিদ ও মক্তব উপকৃত হবে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ইফার এই প্রকল্পের সাথে ৭০ হাজারের বেশি মসজিদের ইমাম এবং ২ হাজার ৫০টির মতো রিসোর্স সেন্টারের কর্মচারীরা রয়েছেন। এছাড়াও রয়েছে পাঠাগারের কর্মীরা। প্রতি বছর এই কার্যক্রমের শিক্ষকদের মধ্য থেকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের পুরস্কারেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ হিসাবে সাড়ে ১১ লাখের বেশি শিক্ষক আগামী ৪ বছরে এই পুরস্কার পাবেন। এজন্য ২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। তারা ব্যক্তির পদ ভেদে ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাবেন। বেতন ৫০০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। সারা দেশে ৩২ হাজার প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে ৪৮ লাখ শিক্ষার্থীকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, ৪৬ হাজার সহজ কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে ৭৬ লাখ সাড়ে ১২ হাজার জন স্কুলগামী ও ঝরেপড়া শিক্ষার্থীকে শিক্ষা, ৭৬৮টি বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে ৯৬ হাজার জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরীদের সাক্ষরতা ও ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হবে। এতে প্রকল্পের আওতায় এক কোটি ৩৩ লাখ ৯২ হাজার ২৫০ জন শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষভাবে সুবিধাভোগী হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কার্মকা- ও শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যেই এ প্রকল্পটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করছে সরকার। এই প্রকল্পে মসজিদের ইমামরা শিক্ষা কেন্দ্রে শিশু শিক্ষার্থীদের বাংলা, অঙ্ক, ইংরেজি, আরবি, নৈতিকতা ও মূল্যবোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে আসছেন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হার বেড়েছে। প্রকল্পটির আওতায় অধিকাংশই সমাজের অবহেলিত, দরিদ্র ও নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা দেয়া হবে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে দুইটি করে দারুল আরকাম মাদরাসা পরিচালনা করা হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বলছে, আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকা- ও শিক্ষা বিস্তারের কাজে মসজিদের ইমামদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে সরকার ১৯৯৩ সালে মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় প্রাক-প্রাথমিক এবং ঝরেপড়া (ড্রপ-আউট) কিশোর-কিশোরী ও অক্ষরজ্ঞানহীন বয়স্কদের জন্য মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। এ প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে এ কার্যক্রম ষষ্ঠ পর্যায় শেষ করে সপ্তম পর্যায়ে পদার্পণ করেছে। এ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় প্রতিটি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ জন, সহজ কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ জন এবং বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ জন। ধারাবাহিকভাবে চলমান এ প্রকল্পটির আওতায় প্রথম পর্যায়ে ৯৪ হাজার ৫৯০ জন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭ লাখ ২৩ হাজার ৮৮০ জন, তৃতীয় পর্যায়ে ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৪০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাদান করা হয়। একই ধারাবাহিকতায় চতুর্থ পর্যায়ে প্রকল্পের মাধ্যমে ২৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাক-প্রাথমিক ও পবিত্র কুরআন শিক্ষা দেয়া হয়। পঞ্চম পর্যায়ে জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬৫ লাখ ৩৫ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাদান করা হয়েছে। যার অগ্রগতি শতভাগ। এ হিসাবে প্রকল্প কার্যক্রম খরচ অর্থাৎ প্রথম পর্যায় ১৯৯৩ সাল থেকে পঞ্চম পর্যায়ের ২০১৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক, সহজ কুরআন শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা স্তরসহ এক কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৯৫০ জনকে শিক্ষা দান করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, সারা দেশে চলমান মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম। এটি দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপদাহে পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির ৬ জেলায় বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ, সিলেট বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা মাতামুহুরিতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ২ আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতি নিয়োগ ফেনীতে ইসতিসকার নামাজে মুসল্লির ঢল গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে ইসরাইলের সামরিক ব্যয় মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা : কাদের গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে মানববন্ধন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

সকল