২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অভিভাবক শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে কমে গেছে ক্লাসের উপস্থিতি

অভিভাবক শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে কমে গেছে ক্লাসের উপস্থিতি - নয়া দিগন্ত

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা করোনা আতঙ্কে দিন কাটালেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। এ নিয়ে গত দু’দিন ধরে সরকারের উচ্চপর্যায়ে একাধিক বৈঠক হলেও স্কুল-কলেজ বন্ধের ঘোষণা কেউই দিচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানের পরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে কিনা সে বিষয়ে একটি ঘোষণা আসতে পারে। সম্প্রতি দেশের প্রায় অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই কমে গেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। অনেক স্কুলের অর্ধেক শিক্ষার্থীও ক্লাসে হাজির হচ্ছে না।

যদিও গতকাল রোববার শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার মতো জটিল কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার নিরিখে গতকাল রোববার সকালে সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। এ রিটে দেশের স্থল-নৌ এবং বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে দেশে করোনাভাইরাস চিহ্নিত হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই বলে আসছে বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা পেলেই বন্ধ ঘোষণা করা হবে সব স্কুল-কলেজ। বিশেষজ্ঞ বলতে মূলত তারা আইইডিসিআরকেই বুঝাতে চাইছে। আর এই সংস্থাটি কাজ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে।
দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তার বিষয়ে নানা পরামর্শ দিলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল রোববার সচিবালয়ে ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। আমরা আমাদের অবজারভেশন তাদেরকে বলে দিয়েছি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সুপারিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কেন করছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আজকেও (রোববার) এ বিষয়ে ক্লোজ ডোর আলোচনা হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্ত তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় গ্রহণ করবে। নিরাপত্তাজনিত যা যা বিষয় রয়েছে আমরা তাদের অবহিত করেছি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে করোনার রোগী শনাক্তের পর বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের। এ পরিস্থিতিতে গতকাল গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে স্কুল, কলেজ বন্ধের যে দাবি উঠেছে তা সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনায় আছে। আমাদের ভাবনায়ও আছে। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সময় মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি উঠেছিল। ৮ মার্চ ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর কথা জানালেও শনিবার দুপুরে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী নেই। যে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের সবাই এখন করোনামুক্ত। পরে রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক জানান, দেশে আরো দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্ত দু’জনের একজন ইতালি থেকে এবং অন্যজন জার্মানি থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement