২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

পাবলিক পরীক্ষায় কমবে সময়, জিপিএ’র পরিবর্তে হবে সিজিপিএ

পাবলিক পরীক্ষায় কমবে সময়, জিপিএ’র পরিবর্তে হবে সিজিপিএ - ফাইল ছবি

নিম্নমাধ্যামিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাবলিক পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনা হবে। একই সাথে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের মান জিপিএ ৫-এর পরিবর্তে সিজিপিএ ৪ করা হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড এ দু’টি বিষয়ে পৃথক দু’টি প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করেছে বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র নয়া দিগন্তকে জানান। সূত্র জানান, আগামী ২৬ জুন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির সাথে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের পরবর্তী বৈঠকে ওই দু’টি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হবে। এ বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া গেলে, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) সাথে মতামত গ্রহণ করে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) থেকেই এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে আন্তঃবোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

উপরোক্ত দু’টি বিষয়ে প্রস্তাবনা প্রণয়ন এবং চূড়ান্তকরণ বিষয়টি স্বীকার করে আন্তঃবোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল। সে আলোকেই সময় কিভাবে কমানো যায় তার একটি রূপকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। বোর্ড চেয়ারম্যান আরো বলেন, দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সার্টিফিকেটের মান নিয়ে বিদেশে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অনেক দিন থেকেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া জিপিএ ৫ নিয়ে দেশের শিক্ষাবিদদের মধ্যেও নানা বিতর্ক রয়েছে। তাই সার্টিফিকেটের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাথে সঙ্গতি রেখে আগামীতে জিপিএ ৫-এর পরিবর্তে সিজিপিএ ৪-এর মান করার সুপারিশ করা হবে। সে আলোকেই প্রস্তাবনা প্রণয়ন করা হয়েছে। 

আন্তঃবোর্ড সূত্রে বলা হয়েছে, পাবলিক পরীক্ষাগুলোর মধ্যে জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সময় লাগে ১৫ দিন। এখানে পাঁচ দিন কমিয়ে ১০ দিনে সম্পন্ন করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২৮ থেকে ৩০ দিন সময় নেয়া হয়। ১০ দিন কমিয়ে ২০ দিনে সম্পন্নের প্রস্তাব করা হবে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণে সময় লাগে ৪৫ দিন। এখানে ১৫ দিন কমিয়ে ৩০ দিনে সম্পন্নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে সরকারি ছুটির কারণে বা জরুরি কারণে প্রস্তাবিত সময়ে দু-এক দিন বেশি লাগতে পারে।
শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বড় কেন্দ্র না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করতে হয়। যে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় থাকতে হয়।। পাবলিক পরীক্ষার সময় কমানো গেলে এ অবস্থার অবসান ঘটবে। অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমেরও সুযোগ বাড়বে। এ ছাড়া পরীক্ষার সময় বেশি পাওয়া গেলে প্রশ্নফাঁসের চক্রগুলোও তেমন একটি সময় পাবে না। 

জিপিএ ৫-এর পরিবর্তে নতুন সিজিপিএ গ্রেড বিন্যাসের প্রস্তাব পাবলিক পরীক্ষায় প্রতি পাঁচ নম্বর ব্যবধানে জিপিএ পরিবর্তন হবে। এ ছাড়া বর্তমান পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ নম্বরের জিপিএ ৫ কমিয়ে তা সিজিপিএ ৪ গ্রেড করার প্রস্তাবনা প্রণয়ন করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়, পাবলিক পরীক্ষায় বিশ্বের সাথে আমাদের (বাংলাদেশ) নম্বরের বিন্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে বহির্বিশ্বের সাথে সমন্বয় রেখে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল পদ্ধতি পরিবর্তন জরুরি। 

নতুন পদ্ধতিতে জিপিএ ৫ পরিবর্তন করে সিজিপিএ ৪ করা হবে এবং বর্তমানে ৮০ থেকে ১০০ নম্বরে জিপিএ ৫ দেয়ার পদ্ধতি থাকছে না। পরীক্ষার ফলের পাঁচ নম্বর ব্যবধানে গ্রেড পরিবর্তন করা হবে।

প্রস্তাবনায় নতুন গ্রেড হিসেবে দেখা যায়, পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর ১০০ রাখা হয়েছে। তবে জিপিএ ৫ পরিবর্তন করে তা সিজিপিএ ৪ করা হচ্ছে। তার মধ্যে ১০০ থেকে ৯৫ নম্বর পেলে নতুন গ্রেড হিসেবে ‘এক্সিল্যান্ড গ্রেড’ করার সুপারিশ করা হয়েছে। পরবর্তী প্রতি পাঁচ নম্বর কম ব্যবধানে যথাক্রমে ‘এ প্লাস’, ‘এ’, ‘এ মাইনাস’, ‘বি প্লাস’, ‘বি’, ‘বি মাইনাস’, ‘সি প্লাস’, ‘সি’, ‘সি মাইনাস’, ‘ডি প্লাস’, ‘ডি’, ‘ডি মাইনাস’, ‘ই প্লাস’, ‘ই’, এবং ‘ই মাইনাস’ গ্রেড করা হবে। অকৃতকার্য বা ফেল হিসেবে থাকছে ‘এফ’ গ্রেড। সর্বনি¤œ পাস নম্বর ৩৩ নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব গ্রেডের সাথে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৪ থেকে পরবর্তী গ্রেড নির্ধারণ করা হবে। তবে পাস নম্বর ৪০ বা তার কম করা যায় বলেও প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও এটি ৩৩ নম্বর রাখার পক্ষে অধিকাংশ বোর্ড চেয়ারম্যান মতামত দিয়েছেন। 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেডিং পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা গেলে শিক্ষার্থীদের নম্বরভিত্তিক বৈষম্য কমবে। একই সাথে জিপিএ ৫ নিয়ে এক শ্রেণীর অভিভাবকের অসুস্থ প্রতিযোগিতা থামতে পারে। আর শিক্ষাবিদরা মনে করেন, পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েই নতুন এ পদ্ধতি চালু করা উচিত। শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

সকল