১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
গবাদিপশুর মৃত্যুতে খামারিরা দিশেহারা

মূল্যবান সম্পদ ধ্বংস হতে দেবেন না

-

একটি সহযোগী দৈনিকের পার্বতীপুর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে খামারিরা দিশেহারা। অধিদফতরে এই রোগের চিকিৎসা না থাকায় ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক। আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাসে পার্বতীপুরে শতাধিক গরু মারা গেছে। সরকারি প্রাণিসম্পদ দফতরের এ রোগ সম্পর্কে নেই কোনো সভা-সমাবেশ।
খামারিদের দাবি, পার্বতীপুর উপজেলার পল্লীতে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা গরুর চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত সহস্রাধিক গরু। আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে চলায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা না থাকলেও দুই শতাধিক পল্লী প্রাণী চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ওষুধ ও প্যারাসিটামল দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। একজন পল্লী প্রাণী চিকিৎসক জানান, ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসের চিকিৎসা না থাকায় রোগ বুঝে ওষুধ দিয়ে নিরাময়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের দাবি, ‘কিছু’ গরু ভালোও হচ্ছে। জটিল ও আক্রান্তগুলো মারা যাচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছোট বাছুর বা অল্প বয়সের গরুই বেশি মারা যাচ্ছে। ভাইরাস আক্রান্ত গরু সস্তায় কিনে নিয়ে কসাইরা হাট-বাজারে জবাই করছেন। বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। মারা যাওয়া গরু তিলাই নদী কিংবা খোলা আকাশের নিচে ফেলে দেয়া হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, অফিসিয়ালি কাগজে-কলমে পার্বতীপুরে ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৫। মারা গেছে ১৩টি গরু।
ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর গায়ে ছোট ছোট গুটি উঠে ও ফুলে যায়, পা ফুলে যায়, দেহের বিভিন্ন স্থানে ঘা হয়। এই রোগ মানুষের মধ্যে না ছড়ালেও গরুর ক্ষেত্রে এটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে। সাধারণত বর্ষার শেষে শরতের শুরুতে অথবা বসন্তের শুরুতে মশা-মাছির বংশ বিস্তারে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর-বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় ও খাওয়া বন্ধ করে দেয়।
জ্বরের সাথে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয়; পা ফুলে যায়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পিণ্ডের আকৃতি ধারণ করে, শরীরের লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। গরু ঝিম মেরে থাকে ও কাঁপতে শুরু করে। কিডনির ওপর প্রভাব পড়ার ফলে মারাও যায়। চণ্ডিপুর ইউনিয়নের কালিকাবাড়ি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, শাহিওয়াল বাছুর এই রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসার পেছনে প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তারপরও বাছুরটা মারা গেছে। গরুগুলো নিয়ে আমরা সবাই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা: মো: হামদুল্লাহ জানান, রোগাক্রান্ত অসুস্থ গরুর গোশত খাওয়া ঠিক হবে না।
পার্বতীপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মাহফুজার রহমান বলেন, রোগ প্রতিরোধের জন্য অফিসে ওষুধ নেই। ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসটি কয়েক মাস আগেও দেখা দিয়েছিল। কোরবানির ঈদের আগে এর ব্যাপকতা বাড়ছে।


আরো সংবাদ



premium cement