১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
মাছ মরছে, চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত

তাপদাহের পরিণাম

-

দৈনিক নয়া দিগন্তের মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, মিরসরাইয়ে তাপদাহে মাছ মরে যাচ্ছে। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মাছচাষিরা। কয়েক দিন ধরে তীব্র অতিরিক্ত গরমে মাছ মরে ভেসে উঠছে।
জানা গেছে, বেশির ভাগ জেলার ওপর দিয়ে কয়েক দিন ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বিপাকে পড়েছেন মাছচাষিরা। লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছেন শত শত মাছচাষি।
সরেজমিন মহুরী প্রজেক্টের খন্তাকাটার বিভিন্ন দীঘিতে দেখা গেছে, পুরো দীঘির মাছ মরে ভেসে উঠে সাদা হয়ে আছে। কয়েকজন শ্রমিক নৌকা নিয়ে মাছ দ্রুত সরিয়ে পাড়ে মাটি চাপা দিচ্ছেন। অনেক মাছচাষি মাছ বাঁচানোর সেচসহ আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে মরে যাচ্ছে মাছ।
মৎস্যবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মতে, গরমে পানিতে পিএইচের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে মাছ মারা যাচ্ছে।
মিরসরাই উপজেলা মৎস্য অফিসে জানা গেছে, প্রায় সাত হাজার ৮০৬ একর জলাশয়ে বাণিজ্যিকভাবে মিঠা পানির মাছ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৭৪৬ একর জলাশয় ইছাখালী, ওচমানপুর, ধুম ইউনিয়ন ও মুহুরী প্রকল্প এলাকার। উপজেলায় এ বছর মাছ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার টন।
মাছচাষিরা জানান, এই উপজেলার গত ৩০ বছরে জমিতে বাঁধ দিয়ে কয়েক শ’ একর মাছের খামার করা হয়েছে। অধিকাংশ জলাশয়ের গভীরতা কম। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে জলাশয়ে পানি কমে যায়। অন্য বছরগুলোতে তাপমাত্রা কম থাকায় মাছের বড় ক্ষতি হয়নি। এ বছর বৈশাখ মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং তাপপ্রবাহ বাড়ার কারণে মাছ মরতে শুরু করেছে। অধিকাংশ খামারিরই দিশাহারা অবস্থা।
চাষি খুরশিদ আলম বলেন, ২০ বছর পর্যন্ত এখানে মাছ চাষ করে থাকি। কয়েক দিনে অতি তাপমাত্রার কারণে আমার এক একর পুকুরে ৪০ হাজারের মতো বাদি মাছ মরে গেছে। এতে প্রায় ৮-১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার অন্য চাষিদেরও এ অবস্থা।
চাষি রিযাদ বলেন, তাপমাত্রার কারণে মাছ মরে যাচ্ছে, মাছের অনেক রোগ হচ্ছে, মাছ ঠিকমতো খাবার খায় না, খেলেও হজম হয় না। এতে আমাদের লাখ লাখ টাকার মাছ মারা যাচ্ছে।
মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। দীঘিতে বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি দেয়ার ব্যবস্থা ও পরিমিত মাত্রায় চুন প্রয়োগ করে এবং জরুরি অবস্থায় অক্সিজেন ট্যাবলেট বা পাউডার ছিটিয়ে উপকার পাওয়া যেতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement