১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
জেলেদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর গুলি

অপরাধীদের জবাব দিতে হবে

-

বাংলাদেশের সীমান্ত এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। মাত্র দু’টি দেশ আমাদের প্রতিবেশী। এই দু’টি দেশের সাথে আমরা আস্থা-বিশ্বাস ও মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারছি না। প্রতিবেশী দেশগুলোকে আমরা বন্ধুজ্ঞান করছি। সরকারি পর্যায়ে বন্ধুত্বের গালভরা বুলির শেষ নেই। অন্ততপক্ষে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে দুই দেশের পক্ষ থেকে অনন্য সম্পর্ক বলে উভয় সরকার উল্লেখ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বাস্তবে দেশ দু’টির মধ্যে কোনো কিছু মসৃণভাবে চলে না। তারা সীমান্তে ক্রমাগত বাংলাদেশীদের হত্যা করে। এর একটি ধারাবাহিকতা আছে। নতুন করে মিয়ানমারও সীমান্তে নানাভাবে ঝুঁকি তৈরি করছে, এমনকি তাদের বিভিন্ন বাহিনী আমাদের নাগরিকদের আক্রমণ করছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে কিন্তু কোনো প্রতিকার করা যাচ্ছে না। একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র্র হিসেবে এগুলো আমাদের আত্মমর্যাদা ক্ষুণœ করে।
গত রোববার সকালে মিয়ানমার নৌবাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিতে দুই বাংলাদেশী গুরুতর আহত হয়েছেন। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের কয়েকজন জেলে সাগর থেকে ফিরছিলেন। নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা অতিক্রম করার সময় তাদের ট্রলারের ওপর গুলি চালানো হয়। জেলেরা এ সময় বাংলাদেশের জলসীমাতেই ছিলেন। বেপরোয়া আক্রমণকারীরা কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা করেনি। তাদের কাছে বাংলাদেশীদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে গুলি করার সময় জেলেরা হাত উঁচিয়ে গুলি না করার ইশারা করছিলেন। তাদের ট্রলারে বাংলাদেশী পতাকা ছিল। কিন্তু মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের অনুরোধের তোয়াক্কা করেনি। অথচ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমার বাহিনীর পরাজিত সদস্যদের আমরা সম্মানের সাথে ফিরিয়ে দিচ্ছি।
ভারতের পর মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক নিয়েও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সরকার ভারতকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুজ্ঞান করে আসছে। এখন মিয়ানমারের সাথেও সম্পর্ক একই পর্যায়ের দিকে গড়াচ্ছে কিনা সেই সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। কারণ সীমান্তে মিয়ানমার বাহিনী অব্যাহত উসকানিমূলক তৎপরতা চালিয়ে যেতে পারছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ছোড়া অস্ত্র ও গোলার আঘাতে সীমান্তে বাংলাদেশী বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তার আগে দেশটির বিমান বেশ কয়েকবার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের নীতি নমনীয়। তারা এসবের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয়নি।
মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যরা পরাস্ত হয়ে দফায় দফায় বাংলাদেশে ঢুকছে। এরা এদেশে ঢুকতে অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। সরকার তাদের সদয়ভাবে গ্রহণ করে নিরাপদে আবার মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ এরাই রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন করেছে। আর তার শতভাগ খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। সেই নিপীড়ক সেনাদের প্রতি অমানবিক আচরণ আমাদের কাম্য নয়। তবে পরিস্থিতি পরিবর্তনের সুযোগ আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করা উচিত।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কোনো ধরনের আইন-কানুন মানবাধিকারের ধার ধারে না। অপরাধের বিষয়ে তাদের কোনো অনুশোচনাও নেই। বাংলাদেশী নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করে পার পেয়ে গেলে তাদের আগ্রাসী আচরণ আরো বাড়বে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশী জেলের ওপর গুলি চালানোর দায়ে অভিযুক্তদের জবাব দিতে হবে। এজন্য অবিলম্বে কূটনৈতিক ও অন্যান্য উপায় গ্রহণ করতে হবে। সার্বভৌমত্বের জন্যই এটি জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে ইউজিসির তাগিদ সিদ্ধিরগঞ্জে জিএম কাদের-শামীম ওসমানসহ ১৪৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা হত্যাকারীদের রক্ষা করতেই বুদ্ধিজীবী হত্যার তদন্ত হয়নি : বিআরজেএ ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে ভাঙচুর ফুটপাতে নবজাতকের লাশ, টানাহ্যাঁচড়া করছিল কুকুর মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান : আসিফ নজরুল জর্দানে বৃদ্ধাশ্রমে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৬ আর কোনো শহীদের লাশ উত্তোলন করতে দেয়া হবে না সিরিয়ায় গম রফতানি স্থগিত রাশিয়ার পাকিস্তানে এমপি ও মন্ত্রীদের বেতন-ভাতার তথ্য প্রকাশ খাগড়াছড়িতে নিকাব পরা ছাত্রীকে পরীক্ষার হল থেকে বহিষ্কার

সকল