১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
পাল্পউড বাগান উজাড়

এভাবে কেপিএম বাঁচানো যাবে না

-

কাপ্তাইস্থ পাল্পউড বাগান উজাড় করে প্রতিদিন শত শত ঘনফুট কাঠ পাচার হচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে পাল্পউড (নরম কাঠ) বাঙ্গাল হালিয়া-রাইখালী-লিচু বাগান ও কোদালা সড়ক দিয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে। যেন দেখার ও প্রতিরোধ করার কেউ নেই।
কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের সৃজিত বনায়নের হাজার হাজার ঘনফুট পাল্পউড চোরাইপথে পাচারের কারণে কাঁচামালের অভাবে কর্ণফুলী পেপার মিলস (কেপিএম) উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে বলে ব্যবস্থাপনা সূত্রে জানা গেছে। বিনা বাধায় কাঠ পাচারে সরকার এ খাত থেকে মাসে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
কর্ণফুলী পেপার মিল জানায়, বিসিআইসির অন্যতম প্রতিষ্ঠান চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী পেপার মিলে (কেপিএম) কাগজ উৎপাদনের প্রধান সহায়ক কাঁচামাল পাল্পউড জোগান দেয়ার লক্ষ্যে পাল্পউড বাগান বিভাগের আওতায় লাখ লাখ একর বনভূমিতে নরম কাঠের বাগান তৈরি করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর ধারাবাহিকভাবে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান থেকে কাঁচামাল পাল্প সরবরাহ করার ফলে কেপিএম কাগজ উৎপাদন সচল রাখতে সক্ষম হয়। কারখানায় অনিয়ম, দুর্নীতি, গাফিলতি ও বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ২০১৭ সাল থেকে নরম কাঠ (পাল্পউড) ও বাঁশ দিয়ে কাগজ উৎপাদন বন্ধ। কয়েক বছর যাবৎ বিদেশী পাল্প ও ছেঁড়া কাগজ দিয়ে সীমিত আকারে কেপিএমে কাগজ উৎপাদন চলছে।
পেপার মিলের সাবেক পাল্পউড সরবরাহকারী এক ঠিকাদার বলেন, কেপিএমে পাল্পউড দিয়ে কাগজ উৎপাদন বন্ধ থাকার সুযোগে বনদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে পাল্পউড বাগান থেকে শত শত কাঠুরিয়া কচি গাছ পাচার করে সরাচ্ছে। নতুন পেপার মিল প্রতিষ্ঠা করে বাঁশ ও পাল্পউড দিয়ে কাগজ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন রাইখালী সড়কে হাজার হাজার টন পাল্পউড যেই হারে পাচার হচ্ছে, অচিরেই সব বনভূমি ন্যাড়া ভূমি হবে। পাল্পউড বনায়ন রক্ষায় কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর ছত্রছায়ায় শাসক দলের নাম ভাঙিয়ে কথিত প্রভাবশালী চক্র বন বিভাগকে জিম্মি করে বীরদর্পে কাঠ পাচার চালিয়ে যাচ্ছে।
জনবলের অভাবে শত শত কাঠপাচার ঠেকানো যাচ্ছে না বলে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। রাইখালী রেঞ্জের ভালুকিয়া এলাকায় ১৬ মার্চ বিজিবি সদস্যদের সহায়তায় পাল্পউড বাগান বিভাগের রাইখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে বন বিভাগের কর্মচারীরা অভিযান চালিয়ে ২৩০ ঘনফুট জ্বালানি কাঠ আটক করেন। ১৭ মার্চ কোদালা বাজারে অভিযান চালিয়ে ৫৩৫ ঘনফুট সেগুন ও গামারি কাঠ জব্দ করা হয়েছে।
এমন করে এশিয়ার বৃহত্তম কাগজ কল কেপিএমকে বাঁচানো যাবে না। তাই অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়া দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement