প্রকৃত কারণ বলছেন না কেউ
- ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০৫, আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:৫০
দেশে অপ্রতিহত উন্নয়নের বয়ান ক্রমে ফাঁকা বুলিতে পর্যবসিত হচ্ছে। অর্থনীতিতে ভাটার টান দেখা দিতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ী শিল্পপতি উদ্যোক্তারা এখন আর উন্নয়নের চটকদার কথার আড়ালে বাস্তবের বিবর্ণ চিত্র লোকাতে পারছেন না। পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসানের বক্তব্যে সেই ধসের খবর প্রকাশ পেয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, গত সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি কমেছে এক-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ৩৩ শতাংশ। আর ইউরোপের বাজারে কমেছে ১৪.৫০ শতাংশ।
মঙ্গলবার পোশাক শিল্পের অবস্থা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। জানান, বছরের প্রথম সাত মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। অন্য দিকে পরিমাণের দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক আমদানি ২৮ শতাংশ কমেছে। যেখানে বাংলাদেশ থেকে কমেছে ২৯ শতাংশ।
একই সময়ে ইউরোপের বৈশ্বিক আমদানি কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে কমেছে প্রায় ১২ শতাংশ। পাশাপাশি পরিমাণ অনুযায়ী পুরো বিশ্ব থেকে আমদানি কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে কমেছে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
আমরা জানি, বাংলাদেশের রফতানির ৮০ শতাংশ যায় উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে। এ দু’টি বাজার হারালে আমাদের শিল্পের ভিত্তি নিশ্চিত ধসে পড়বে। পরিস্থিতি এখনই এমন যে, নতুন মজুরি বোর্ড কার্যকর করতেও তারা চাপে পড়বেন।
এ অবস্থার জন্য ফারুক হাসান নানা বৈশ্বিক সঙ্কট যেমন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনেছেন। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতির নেতিবাচক প্রবণতার কথা বলেছেন। সেসব ঠিক আছে। কিন্তু তিনি যেটি উল্লেখমাত্র করেননি সেটি হলো- বাংলাদেশে পোশাক শিল্প বা সার্বিকভাবে শিল্প ও বাণিজ্য খাত কী কী সমস্যার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। দেশে সুশাসনের অভাব, আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা-নৈরাজ্য, সমন্বয়হীনতা, বেপরোয়া মানিলন্ডারিং, বে-লাগাম চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতি, সরকারি নীতি-সমর্থনের অভাব ও অপপ্রয়োগ কিংবা আইনশৃঙ্খলার মতো সমস্যা তার কাছে গুরুত্ব পায়নি। অথচ অর্থনীতি, শিল্প-বাণিজ্য, ব্যাংকিং খাতের যেকোনো বিশেষজ্ঞ এসব বিষয়ের দিকে আঙুল তুলেছেন সব সময়।
একজন শিল্পপতি যিনি দেশের শিল্প খাতের শীর্ষ সংগঠনের প্রধান তার কাছে মানুষ শুধু সমস্যার কথা জানতে চান না, সমস্যার কারণও জানতে চান। তাতে সঙ্কট মোচনের দায়িত্বে নিয়োজিতদের ওপর জনমতের চাপ তৈরি হয়।
সমস্যা হলো, আমাদের ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের বড় অংশ গত ১৫ বছরের ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে নানা ধরনের অন্যায় সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। অভিযোগ যে অসত্য নয়; তার প্রমাণ তারা দিয়েছেন গত ১৫ জুলাই এফবিসিসিআইয়ের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ীদের করণীয়’ শীর্ষক সম্মেলনে। তারা সুর মিলিয়ে গানে গানে বর্তমান সরকারকে আবার ক্ষমতায় দেখার ব্যাকুলতা ব্যক্ত করেন। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের পছন্দের সরকার ক্ষমতায় আসবে এটিই হতে পারে নাগরিক সমাজের একমাত্র চাওয়া। সেই স্বাভাবিক আচরণ ভুলে যাওয়া বিস্ময়কর।
অর্থনীতির পশ্চাদমুখিতার আসল কারণ জনগণের জানার অধিকার আছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা