০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরি
`
সুদ দিতে না পারায় পায়ে শিকল

গরিবের মুক্তি মিলবে কবে

-

রাজনীতিকরা জোরগলায় দাবি করেন, দেশের মানুষকে তারা মুক্ত করেছেন। সত্য যে, উপনিবেশের নিগড় থেকে দেশবাসী মুক্ত। কিন্তু জনগণের মুক্তি মানে শুধু রাজনৈতিক মুক্তি নয়। আর্থ-সামাজিক নানা বাধা-বিপত্তি, অপশাসন-দুঃশাসনের শিকল তাদের পায়ে। কথিত উন্নয়নের অপ্রতিহত জোয়ার তাদের মুক্তি আনেনি। তাদের জীবন এখনো নিগড়ে বাঁধা। এটি আক্ষরিক অর্থেও অনেক সময় সত্য হয়ে দেখা দেয়, যেমন নাটোরের গুরুদাসপুরে।
গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মশিন্দা শিকারপাড়া গ্রামে একজন বয়স্ক কৃষক ঋণের সুদ দিতে পারেননি। তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পায়ে শিকল বেঁধে সারা দিন আটকে রাখা হয়েছে সুদের কারবারির বাড়িতে। ওই ঘটনা জাতীয় দৈনিকে শিরোনাম হয়েছে। সুদের কারবারি আব্দুল আজিজকে পরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু দেশে ব্রিটিশ আমলের মহাজনী কায়দায় সুদ ও দাদনের কারবার যে এখনো অবাধে চলছে সেই সত্যটি স্পষ্ট হয়ে গেছে।
এটি একটিমাত্র ঘটনা নয়। দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে, আনাচে-কানাচে এখনো অশিক্ষিত, গরিব, দুস্থ মানুষ অহরহ এ ধরনের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। রাষ্ট্র-প্রশাসন, থানা-পুলিশ, রাজনীতিক ও কথিত সমাজসেবকদের চোখের সামনে এসব অকথ্য নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। সব ঘটনা প্রকাশ্যে আসে না। কোনো বিচার-আচারও হয় না। এটি কেবল ব্যক্তিপর্যায়ের সুদের কারবারিদের ক্ষেত্রে সত্য এমন নয়। অনেক এনজিওর ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমেও এমন অসংখ্য নির্যাতনের কাহিনী সবার জানা। কখনো ঋণগ্রহীতার ঘরের চালের টিন খুলে নেয়া, কখনো গবাদিপশু ছিনিয়ে নেয়া, কখনো শারীরিক নিপীড়নের নজির আমরা অনেক দেখেছি।
পাঁচ হাজার টাকার ঋণ মহাজনী কায়দায় কাগজপত্রে পাঁচ লাখ টাকা দেখিয়ে নির্যাতনের ঘটনাও আমাদের অজানা নয়। নিপীড়ন সইতে না পেরে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেন অনেক অভাবগ্রস্ত মানুষ। অথচ রাজনীতিকদের মুখে জনগণের সার্বিক মুক্তি হাসিল করার গালভরা গল্পের কোনো শেষ নেই।
শুধু সুদের কারবারি কিংবা এনজিও নয়, খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও এ রকম ঘটনার নজির রয়েছে। এই কিছু দিন আগেই পাবনার ঈশ্বরদীতে ঋণের টাকা ফেরত দিতে না পারার অভিযোগে গ্রেফতার হন ১২ কৃষক। গ্রেফতারের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন অন্তত ২৫ জন। যারা গ্রেফতার হন তাদের মধ্যে কেউ আবার ঋণ শোধও করেছিলেন। ওই ঘটনা ঘটে ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামে। আর ওই ঘটনায় জড়িত সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক। এ বিষয়ে যেসব খবর গণমাধ্যমে এসেছে তাতে জানা যায়, ব্যাংক থেকে স্বল্পসুদে ঋণ দেয়া হচ্ছে জেনে কৃষকরা ২৫-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেন। পরে ব্যাংক এ ঋণের সুদ নির্ধারণ করে ১৫ শতাংশ যা কোনোভাবে স্বল্পসুদের শ্রেণীতে পড়ে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের প্রতারণামূলক আচরণ অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়। প্রতারিত কৃষকরা ক্ষুব্ধ হলেও ঋণ শোধ করেন। অথচ মামলায় সবাইকে গ্রেফতার করা হয়।
এসব ঘটনা থেকে স্পষ্টত প্রমাণিত, দেশবাসী এখনো অর্থনৈতিকভাবে জুলুমের শিকার। সামাজিক ঋণের শৃঙ্খলে তাদের হাত-পা আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা।


আরো সংবাদ



premium cement
ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে: বাহাউদ্দিন নাছিম মেসির মুখে হঠাৎই সৌদির প্রশংসা কিন্তু কেন? বাংলাদেশে খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তার উন্নয়নে এফএও ও ইআরডির ৪ প্রকল্প চুক্তি সই নকল ডিটারজেন্ট তৈরির কাঁচামাল ও মেশিনসহ গ্রেফতার ১ কাহালুতে প্রতিবন্ধী তরুণী ধর্ষণ মামলায় বৃদ্ধ গ্রেফতার বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ওষুধ উপকরণ কারখানা স্থাপন করবে চীনা কোম্পানি ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুফতি তাকি উসমানির ঐতিহা‌সিক ভাষণ আ'লীগের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মনোবাসনা পূরণ হতে দিবে না জনগণ : এটিএম মা’ছুম সিলেটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে স্থবিরতা প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩য় দিনে ১৫৫ জনের আপিল নাটোর কারাগারে অসুস্থ বিএনপি নেতার রামেক হাসপাতালে মৃত্যু

সকল