আইনের তোয়াক্কা করছে না
- ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০৫
ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের জন্য আইন-কানুনের প্রয়োগ শিথিল। ক্ষেত্রবিশেষে একেবারেই প্রয়োগ নেই। ফলে তারা বেআইনি কাজ করতে কোনো দ্বিধা করে না। এখন আওয়ামী লীগের কয়েক ডজন সহযোগী সংগঠন রয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদবাজিসহ পেশিশক্তি প্রদর্শনের সব কাজেই যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ যেন পরস্পরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এর মধ্যে ছাত্রলীগ যে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। সংগঠনটির বিরুদ্ধে প্রতিদিন দেশের কোনো না কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেআইনি কাজ করার অভিযোগ আসছে। গতকাল সোমবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের নেত্রী নিয়োগ না পাওয়ায় ভিসিকে অবরুদ্ধ করেছে। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যত গুরুতর অভিযোগ আসছে; সে তুলনায় এ দু’টি মামুলি ব্যাপার। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় প্রতিদিন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে। গত তিন দিনে আটবার তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। লক্ষ্যটাও অভিনব- প্রতিপত্তি দেখিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পদবি বাগানো। আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, রামদা, কিরিচ, লাঠিসোটা নিয়ে পক্ষগুলো একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি, হলের কক্ষ দখল, কর্মকর্তাদের মারধর, যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অপরাধ করছে। খুনোখুনির পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তির বিনাশ ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে হলগুলোতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় পাঁচ বহিরাগত আটক হলেও কিছুক্ষণ পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। যদিও প্রক্টর বলেন, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বর্তমান সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সহজে অপরাধ করতে পারার মূল কারণ এটিই, অপরাধীকে ছাড় দেয়া। সন্ত্রাস করে যারা পরিবেশ নষ্ট করছে তাদের প্রত্যেকেই চিহ্নিত। পুলিশ তাদের চেনে কিন্তু ব্যবস্থা নেয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ মুখে মুখে হুঙ্কার দেয় কিন্তু আসল কাজটি করে না। ফলে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে।
সন্ত্রাস ও বেআইনি কাজ করার সংবাদ করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে, আর যেন এসব নিয়ে কোনো সংবাদ তিনি না করেন। এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডকে সভা করতে বাধা দিয়েছে ছাত্রলীগ। নিয়োগ প্রার্থীদের বের করে দিয়ে উপাচার্যকে তার দফতরে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রোভিসির নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগদানের বদলে তারা চাচ্ছেন দলের নেতাদের যেন নিয়োগ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন প্রার্থীর যোগ্যতা যাচাই করার পর প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে কাউকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এই কাজ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। দেখা যাচ্ছে, ছাত্রলীগ এসব কিছুই মানছে না। তারা চাচ্ছে অবৈধভাবে নিজেরা নিয়োগ পেতে।
ছাত্রলীগের ওপর আওয়ামী লীগের কোনো নিয়ন্ত্রণ দেখা যাচ্ছে না। সরকারি প্রশাসনও রাজনৈতিক কারণেই আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে না। ফলে ছাত্রলীগ সম্পূর্ণ পরোয়াহীন। এভাবে দেশ চলতে পারে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা