০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরি
`
অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতের তাগিদ

পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতার প্রশ্ন

-

গণতান্ত্রিক সমাজের সুষ্ঠু বিকাশে অবাধ তথ্যপ্রবাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। জনগণের তথ্যপ্রাপ্তি ব্যাহত হলে তারা সিদ্ধান্ত নিতে অপারগ হন। নাগরিকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারার ওপর নির্ভর করে গণতান্ত্রিক সমাজের অগ্রগতি, উন্নতি ও বিকাশ।
সম্প্রতি ঢাকার পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বক্তৃতা করতে গিয়ে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে কারসাজি রোধে তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা জরুরি। এই গুরুত্বপূর্ণ কথাটি এমন সময় উচ্চারিত হলো যখন ঢাকার পুঁজিবাজারে ন্যূনতম স্বচ্ছতা নেই। সর্বশেষ তথ্য হলো, পুঁজিবাজারে এখন এমন সব প্রতিষ্ঠান, সংস্থার শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ যেগুলোর পেছনে সুনির্দিষ্ট কারসাজি আছে। অর্থাৎ অবৈধ কারসাজির মাধ্যমে ওইসব শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন, তারা পুঁজি হারাচ্ছেন এবং একশ্রেণীর ফটকাবাজ পুঁজিপতি বা ব্যবসায়ী ফাঁকতালে বিপুল অর্থ লোপাট করে লাভবান হচ্ছেন।

ডিএসইর এমডি ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেন, একটি সুন্দর ও স্বচ্ছ পুঁজিবাজার তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে তার সংস্থা। তার এ বক্তব্য ইতিবাচক সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, কারা বাজারে কালো থাবা বিস্তার করছে, কারা কারসাজি করে নি¤œমানের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে সে বিষয়ে ডিএসই কি কোনো তথ্য প্রকাশ করেছে? অথবা অপরাধীদের বিষয়ে কোনোরকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে?

গত ১৫ বছরে অন্তত তিনবার পুঁজিবাজারে ভয়াবহ শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। অসংখ্য বিনিয়োগকারী সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন। অনেকের স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, কেউ আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন। সেসব কেলেঙ্কারির কিছু তদন্তও হয়েছে। কিন্তু ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। কারা মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলেছে তাদের চেহারা জনসমক্ষে উন্মোচন করা হয়নি। বলা যেতে পারে, এটি ক্ষমতাসীন সরকারের বিষয়। সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ আছে। দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দায়িত্বে থাকা অনুচিত। কিন্তু ব্যর্থতার দায় নিয়ে কেউ পদ ছেড়ে দিয়েছেন এমন নজির নেই।
শুধু পুঁজিবাজার নয়, আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি পর্যায়ে তথ্যপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত। সে কারণে মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার আজ ভূ-লুণ্ঠিত। এমনকি গণমাধ্যম, যাদের কাজ তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা, তারাও আজ নানা কারণে হাত-পা বাঁধা।

তথ্যপ্রবাহ অবাধ হলে সমাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত হয়। কিন্তু এগুলোর সব আজকের বাংলাদেশে অবর্তমান। এর একমাত্র কারণ রাজনৈতিক দুর্বলতা। দেশে তথ্য চেপে রাখার একটি প্রাচীন সংস্কার আমাদের সরকারের মানসিকতায় প্রোথিত। যে কারণে, তথ্য অধিকার আইনেও তথ্য পাওয়া অনিশ্চিত। তথ্য প্রকাশের দায়ে সাংবাদিকের হয়রানি এমনকি জীবনহানির ঘটনা অহরহ ঘটছে।
এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে হলে, রাষ্ট্রের সর্বস্তরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সেটি কিভাবে সম্ভব তাই এখন জানা ও মানার বিষয়।


আরো সংবাদ



premium cement
মেসির মুখে হঠাৎই সৌদির প্রশংসা কিন্তু কেন? বাংলাদেশে খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তার উন্নয়নে এফএও ও ইআরডির ৪ প্রকল্প চুক্তি সই নকল ডিটারজেন্ট তৈরির কাঁচামাল ও মেশিনসহ গ্রেফতার ১ কাহালুতে প্রতিবন্ধী তরুণী ধর্ষণ মামলায় বৃদ্ধ গ্রেফতার বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ওষুধ উপকরণ কারখানা স্থাপন করবে চীনা কোম্পানি ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুফতি তাকি উসমানির ঐতিহা‌সিক ভাষণ আ'লীগের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মনোবাসনা পূরণ হতে দিবে না জনগণ : এটিএম মা’ছুম সিলেটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে স্থবিরতা প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩য় দিনে ১৫৫ জনের আপিল নাটোর কারাগারে অসুস্থ বিএনপি নেতার রামেক হাসপাতালে মৃত্যু ঝালকাঠিতে বাস-মাহিন্দ্র গাড়ির সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৫

সকল