ব্যবসায়ী সংগঠনও একই ধারায়
- ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
দেশবাসীর ভোটের অধিকার আগে কেড়ে নেয়া হয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন তার উদাহরণ। এ ছাড়া স্থানীয় সরকারের শত শত নির্বাচনেও একই দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থীদের পুলিশ ও দলীয় ক্যাডার দিয়ে এলাকাছাড়া করার ভূরি ভূরি নজির জাতীয় গণমাধ্যমের রিপোর্ট থেকে জনসমক্ষে এসেছে। কোথাও মানুষের ভোট দেয়ার সুযোগ রাখা হয়নি।
ভোট মানুষের মতপ্রকাশের সর্বোত্তম উপায়। পছন্দের নেতৃত্ব বেছে নেয়ার পন্থা। সংবিধান দেশবাসীর স্বাধীন মতপ্রকাশের যে অধিকার দেয় তার অন্যতম প্রায়োগিক দিক নির্বাচন। কিন্তু বিগত ১৫ বছরে বর্তমান সরকারের অধীনে দেশের জনগণ সাংবিধানিক সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত।
শুধু জাতীয় বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নয়, সরকারের নিয়ন্ত্রণ সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত। এমনকি সামাজিক, পেশাজীবী ও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোও সরকার-সমর্থকরা গায়ের জোরে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। কোনো পেশাজীবী বা ব্যবসায়ী সংগঠন এখন নিজের পেশার বা জীবিকার প্রশ্নে কথা বলতে পারছে না। ভিন্নমত প্রকাশের ন্যূনতম সুযোগ কারো নেই। ব্যবসায়িক ক্ষতি বা সমস্যা-সঙ্কটের কথা উচ্চারণ পর্যন্ত করতে পারছেন না কেউ।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ব্যবসায়ী সংগঠনে ভোট ‘উধাও’, বছরের পর বছর নেতৃত্বে সরকার-ঘনিষ্ঠরা। বেশির ভাগ জেলা বণিক সমিতি কিংবা পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সরকার-ঘনিষ্ঠ কিংবা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের পদধারী ব্যবসায়ীরা। ফলে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো হয়ে গেছে সরকারের তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকারি দলের সম্প্রসারিত শাখা। তার নমুনা দেখা গেছে সম্প্রতি এফবিসিসিআইয়ের সভা ডেকে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার নির্বাচিত করার উদাত্ত আহ্বান জানানোর ঘটনায়। অথচ বিদ্যুতের অভাবে, ডলার সঙ্কটে এলসি খুলতে না পেরে কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হওয়ায় এই সংগঠনের মতো শত ব্যবসায়ী যে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে- এসব নিয়ে তারা টুঁ শব্দটি করতে পারছেন না। নেতারা যা ইচ্ছা তাই করছেন। সংগঠনকে সরকারের অনুগত সংস্থায় পরিণত করছেন।
উল্লিখিত খবরে জানা যায়, নিট পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন-বিকেএমইএ, আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন-রিহ্যাব, প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারকদের সংগঠন-বিপিজিএমইসহ অনেক পণ্যভিত্তিক বড় সংগঠনে এখন আর ভোট হয় না। সবখানে নেতৃত্বে সরকার-ঘনিষ্ঠ কিংবা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের পদধারী ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ও সহ-সভাপতি কে হবেন, তা ঠিক করে দেয় সরকার। গত কয়েকটি নির্বাচনে সভাপতি পদে সরকার-সমর্থিত প্রার্থীর বিপরীতে কেউ প্রার্থী হতে পারেননি।
আইনজীবী সমিতিগুলোর নির্বাচন নিয়ে যেসব কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়েছেন সরকার-সমর্থক আইনজীবীরা সেসব মিডিয়ার সুবাদে সবার জানা। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের সংগঠন রাওয়া পর্যন্ত এড়াতে পারেনি সরকারের হস্তক্ষেপ। সেখানেও নির্বাচন বাতিল করা হয় নিবন্ধনদাতা সরকারি দফতরের চিঠি দিয়ে। এ জন্য বেছে নেয়া হয় কিছু ঠুনকো অজুহাত। এভাবে গোটা দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক চর্চা একরকম নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। তবে সরকারের ক্ষমতা নিষ্কণ্টক হয়েছে সেটি ঠিক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা