রাজধানীবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই
- ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০৫
বিশ্বের মেগাসিটির মধ্যে কোনটিতে যোগাযোগ সবচেয়ে কঠিন এমন জরিপ করা হলে নিঃসন্দেহে রাজধানী ঢাকাকেও প্রথম স্থানে পাওয়া যাবে। রাস্তার স্বল্পতা ও সরু হওয়া চলাচলে অসুবিধার একমাত্র কারণ নয়। যখন তখন যেকোনো সড়কে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি এর অন্যতম প্রধান কারণ। বছরের একটা নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় রাস্তা বিশেষ কারণ ছাড়া খোঁড়াখুঁড়ি করা বারণ হলেও সেই নিয়ম মানা হয় না। ঠিকাদাররা অন্য নিয়মকানুনও মানে না। একবার কাটে বিদ্যুৎ বিভাগ, আরেকবার কাটে ওয়াসা, আবার কাটে বিটিসিএল, কখনো সিটি করপোরেশন নিজে। সংস্কারকাজে জনসাধারণের দুর্ভোগ কমাতে সিটি করপোরেশনের কথিত জনপ্রতিনিধিদেরও খুঁজে পাওয়া যায় না।
সহযোগী একটি দৈনিক অভিজাত আবাসিক এলাকা বনানীতে সড়কের কাটাকাটির একটি খবর দিয়েছে। কোনো ধরনের পরিকল্পনা ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটির এই মেয়াদহীন সংস্কার এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব করে তুলছে। এজন্য কাউকে মই লাগাতে হয়েছে, গাড়ি আটকা পড়েছে গ্যারেজে, কেউ গাড়ি রাখছেন রাস্তার ওপারে রাস্তায়, তারা চুরির আতঙ্কে ভুগছেন। পাইপ ড্রেন স্থাপনে এলাকার তিনটি সড়কে গভীর করে কাটা হয়েছে। রাস্তার অংশবিশেষ নয়, পুরো রাস্তাই কাটা হয়েছে। গ্যাসের পুরনো পাইপ বের হয়ে আছে, খোঁড়া রাস্তার বাকি অংশে মাটির স্তূপ, তার ওপর রাখা হয়েছে সিমেন্টের মোটা পাইপ। এখানে তিনটি সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এই এলাকায় রয়েছে দুই শ’-এর মতো অট্টালিকা, বসবাস করেন ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ। কিছু ভবনের নিচতলায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে আছে। দুই মাস ধরে দুর্বিষহ ভোগান্তি চলছে। শুরুতে বাড়িগুলোর গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির লাইন কাটা হয়। এগুলোর সংযোগ পেতে তাদের একটি চক্রকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
পত্রিকাটি রাজধানীর একটি এলাকায় অসময়ে খোঁড়াখুঁড়ির খবর দিলেও মূলত ঢাকা শহরের বহু জায়গায় অব্যাহত খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। বনানী একটি অভিজাত এলাকা। এখানে সরকারের প্রভাবশালী লোকেরা বসবাস করেন। সেখানে সংস্কারকাজ করতে গিয়ে কোনো ধরনের নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। তাহলে ঘনবসতিপূর্ণ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র এলাকায় সড়কের সংস্কারকাজে ভোগান্তি কোন অবস্থায় পৌঁছে সেটা কল্পনীয়। প্রতিবেদনে পশ্চিম কাফরুলের ইকবাল রোডে ওয়াসার একটি প্রকল্পের কথাও বলা হয়। সড়ক এমনভাবে কাটাকাটি করা হয়েছে, সেখানকার মানুষজনের চলাফেরা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বহু দিন ধরে লাটে উঠেছে। সড়ক খনননীতিমালা রয়েছে। সে অনুযায়ী ১ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সড়কে কোনো ধরনের মেরামত কাটাকাটি খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। জরুরি ভিত্তিতে এই সময়ে কাজ করতে হলে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। এজন্য বাড়তি ফি নেয়ার ব্যবস্থাও আছে। সব প্রকল্পের একটি মেয়াদে শেষ হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ ঠিকাদাররা এই নিয়মকানুন মানছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা নিজেদের সুবিধামতো সড়কে সংস্কারকাজ চালায়।
পানি বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন জরুরি সেবার প্রয়োজনে খুঁড়তে হয়। তবে জনসংখ্যার তুলনায় ঢাকায় রাস্তা একেবারে অপ্রতুল-এই বিষয়টি মাথায় রাখা হয় না। আমরা মনে করি, বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয় দরকার। মানুষের চলাচলের সহজতার বিষয়টি সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। এর সাথে প্রকল্প একটি নির্ধারিত মেয়াদে শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে। সিটি করপোরেশনের প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ কাজে সমন্বয় করে কাজ করলে কিছুটা নিস্তার পাওয়া যেতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা