১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সেতুর অভাবে ১০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ

জনস্বার্থে প্রকল্প নেয়া হোক

-


বর্তমান সরকার দেশে ক্ষমতায় রয়েছে টানা প্রায় ১৫ বছর ধরে। এই ১৫ বছরে দেশবাসী উন্নয়নের গল্পগাথা শুনছেন প্রতিনিয়ত। অবশ্য এ কথা ঠিক যে, এই সময়ের মধ্যে দেশে বড় বড় কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে এসব প্রকল্পে উন্নয়নের নামে ব্যাপক দুর্নীতিও হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেসব অভিযোগের সন্তোষজনক জবাব সরকারের পক্ষে নেই। সরকারের তরফ থেকে কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় দুর্নীতির অভিযোগগুলো জনমনে ডালপালা মেলেছে।
তবু উন্নয়নকাজ হচ্ছে। কিন্তু এই উন্নয়ন সারা দেশে সমানভাবে হচ্ছে এমন দাবি করার অবকাশ আছে কি? উন্নয়ন যে সমভাবে হচ্ছে না তার নমুনা আমরা পাই নয়া দিগন্তে প্রকাশিত দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতার পাঠানো এক প্রতিবেদন থেকে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু একটি সেতুর অভাবে ১০ গাঁয়ের মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের খাশিয়ামারা নদীর একটি খালের ওপর একটি বাঁশের সাঁকো। খালটির এক পাড়ে শিমুলতলা গ্রাম। অন্য পাড়ে মানে সাঁকোর পশ্চিম পাড়ে দু’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। টিলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সমুজ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। দুই পাড়ের মধ্যবর্তী খালটির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে দীর্ঘ এক সাঁকো। তবে বর্ষায় ভারী বর্ষণে সাঁকোটি তলিয়ে যায়। প্রতি বছর এলাকাবাসী চাঁদা তুলে নিজেদের অর্থায়নে বাঁশ নিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে তাদের যোগাযোগব্যবস্থা সচল রেখেছেন, যাতে শিক্ষার্থীসহ ১০ গ্রামের মানুষের সাঁকো দিয়ে যাতায়াতে বিঘ্ন না ঘটে। কিন্তু প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে তাদের পারাপার হতে হয়।
শিমুলতলাসহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুধু একটি মাত্র সেতু না থাকায় এ এলাকার রাস্তাঘাটসহ অন্যান্য উন্নয়নও যেন থেমে আছে। সাঁকো পার হয়ে তাদের যেতে হয় উপজেলা সদর, জেলা সদর ও স্থানীয় বাজারে। দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো পারাপার হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসে। সাঁকো পারাপারে ছোটখাটো দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের পাঁচ দশকের দাবি খালের ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের। তবে সেই দাবি এখনো তাদের কাছে অধরাই রয়ে গেছে। একটি সেতুর জন্য তারা ৫২ বছর ধরে অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন।

নয়া দিগন্তের প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দুর্ভোগের শিকার হয় অনেকে। জরুরিভাবে হাসপাতালে নেয়ার সময় দীর্ঘ পথ ঘুরে সড়কে উঠতে হয়। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও শুধু আশ্বাসে আটকে আছে তা। আশ্বাস শুনে শুনে ১০ গ্রামের বাসিন্দারা এখন বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন। এমনকি সেতু নির্মাণের জন্য অনেকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলেও সেটি এখনো নির্মিত হয়নি।
১০ গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি সেতু নির্মাণের অর্থ সরকারি তহবিল থেকে বরাদ্দ দেয়া খুব কষ্টসাধ্য কোনো ব্যাপার নয়। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগই টাকা বরাদ্দের জন্য যথেষ্ট বলে আমরা মনে করি। তাই ওই ১০ গ্রামের হাজারো বাসিন্দার মতো আমাদেরও কথা, ওই এলাকার জনদুর্ভোগ লাঘবে খাশিয়ামারা নদীর সংশ্লিষ্ট খালের ওপর দ্রুততম সময়ে একটি পাকা সেতু নির্মাণে প্রকল্প নেয়া হোক।

 


আরো সংবাদ



premium cement