২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রোহিঙ্গাদের দিয়ে মাদক চালান

অপরাধী চক্রকে ধরা হোক

-

 


আমাদের দেশে মাদকের বিস্তার প্রায় সর্বত্র। তরুণ ও যুবসমাজ এর ছোবলে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হলেও অন্যরাও এতে কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে সরকার উপর্যুপরি চিরুনি অভিযান চালিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওইসব অভিযানে মাদক কারবারিদের অনেকে প্রাণ হারিয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে মাদকের উচ্চ ব্যবহার ও চোরাচালান কোনোটাই কমেনি। বিশেষ করে কক্সবাজার টেকনাফ অঞ্চল মিয়ানমার থেকে আসা মাদকের রুট হিসেবে থেকে গেছে। সহযোগী একটি দৈনিক এ নিয়ে এক সরেজমিন প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ওপর ভর করে মাদকের চোরাচালান হচ্ছে। প্রতিবেদক অকুস্থলে গিয়ে মাদক প্রবেশের বিষয়ে অনুসন্ধান করেছেন। রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে একটি অংশ মাদক পাচারের সাথে জড়িত হলেও তাদের চিহ্নিত করার জোরালো চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। একই কারণে সেখানকার স্পর্শকাতর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুকতা আরো বাড়ছে।
পত্রিকাটির প্রতিনিধি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক পাচারের একটি সরেজমিন চিত্র তুলে ধরেছেন। কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম ধামনখালী। সীমানার মিয়ানমার অংশের গ্রামের নাম কুমিরখালী। দুটো গ্রামের মাঝে বয়ে গেছে নাফ নদীর শাখা একটি সরু ধারা। মাদক চোরাকারবারিরা এই পয়েন্টটি ব্যবহার করে। নজরদারির অভাবে অপরাধ সিন্ডিকেটের এখানে স্বাধীন আনাগোনা থাকে। রাত ১১টার পর এসব এলাকায় মানুষ ঘরের বাইরে থাকে না। দল বেঁধে চোরাকারবারিরা মাথায় বস্তা নিয়ে মিয়ানমার থেকে স্থানীয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দিকে যায়। দলের বেশির ভাগ সদস্য মাথায় বস্তাওয়ালা সদস্যদের পাহারা দেয়। তারা থাকে সশস্ত্র। বস্তা নিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির অগোচরে ঢুকে পড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। এগুলোতে থাকে ক্ষতিকর মাদক আইস ও ইয়াবা। খবরে জানা যাচ্ছে, প্রতি রাতে বাধাবিপত্তি ছাড়া এভাবে মাদক ঢোকে ওই ক্যাম্পে। ইয়াবা ও আইস চোরাচালানের আগেকার প্রধান রুট ছিল টেকনাফ। এই প্রতিবেদকের মতে এটি পরিবর্তিত হয়ে এখন উখিয়ার পয়েন্টটি ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা।

এই রোহিঙ্গা ক্যাম্প হয়ে উঠছে মাদক চোরাকারবারির প্রধান আখড়া। এটিকে তারা মিয়ানমারের পর বাংলাদেশে প্রবেশের প্রথম পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে। তারপর বিভিন্ন পথ হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের ৬৪ জেলায়। পার্শ্ববর্তী চাকমাকাটা, কোয়াঞ্চিবন, টেকবুনিয়াসহ আরো কয়েকটি পয়েন্ট চোরাচালানের জন্য ব্যবহার হচ্ছে। সেখানে সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী হয়েছে কিছু দিন আগে বিজিবি লক্ষ্য করে তারা গুলি ছুড়েছে। মাদকের পাশাপাশি অস্ত্র চোরাচালানও হচ্ছে এই এলাকা দিয়ে। এ সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা হিসেবে নবী হোসেন নামের এক রোহিঙ্গার নাম জানা যাচ্ছে। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, চোরাচালানের মাধ্যমে সে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছে। তার সাথে জড়িত এমন ৩০ সহযোগীর নাম ও পরিচয়ও পাওয়া গেছে। তবে এদের বিরুদ্ধে সফল কোনো অভিযান এখনো দেখা যাচ্ছে না। এদের রয়েছে এক বিশাল সিন্ডিকেট। সীমান্তের উভয় পারে মিলে তাদের হাজার হাজার সদস্য রয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে বিগত কয়েক বছরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি দেখা গেছে। তাদের নিজেদের মধ্যে গড়ে উঠেছে অপরাধ সিন্ডিকেট। আধিপত্য বিস্তারে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে প্রায়ই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ দেখা দেয়। একপক্ষ অপরপক্ষকে উৎখাত করতে তারা গুপ্ত অভিযান চালাচ্ছে। এ ধরনের অভিযানে নিয়মিত রোহিঙ্গারা প্রাণ হারাচ্ছে। এই সুযোগে একগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের জনপ্রিয় নেতাদেরও হত্যা করছে। মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রোহিঙ্গাদের মধ্যে উগ্রপন্থার চর্চা সবার জন্য আশঙ্কার। সেখানে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কার্যকর রয়েছে। তার পরও পরিস্থিতির কেন অবনতি হচ্ছে সেটি আমাদের প্রশ্ন।
পত্রিকার প্রতিবেদক সরেজমিন মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান চক্রের যে ফিরিস্তি দিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য এই চক্রকে শণাক্ত করে নির্মূল করা খুব কঠিন এমন মনে হয় না। মাদকের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর আইস ও ইয়াবা। এর প্রধান রুট রোহিঙ্গাদের ওপর ভর করে চলছে। এমনটি মানা যায় না। আমরা মনে করি, অচিরেই এই চক্রকে সমূলে উচ্ছেদ করা হোক। রোহিঙ্গাদের জন্যও সেটা ভালো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
জামালপুরে সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার অবৈধ গাড়ি কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগে বিভেদ শরীয়তপুরে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভুট্টার আবাদ মিরসরাইয়ে ৩ দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি আলুতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা ফরিদপুরের পদ্মাপাড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ২৩ এস্কেভেটর ও ৮ ট্রাক ফেলে পালালো বালুদস্যুরা বরগুনায় দুই সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা গলাচিপায় নির্বাচনী মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নাটোরে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীবকে শোকজ হোসেনপুরে গ্রামের গ্রাহকরা দিনে এক ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না ঈদগাঁওতে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ৭ প্রার্থীকে জরিমানা গাজীপুরে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম উদ্বোধন

সকল