১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
২ হাজার কিমি জলপথ হারিয়ে যাচ্ছে

একে বাঁচাতে হবে সবাইকে

-

নয়া দিগন্তের বেড়া (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও উজানে ভারতের পানি প্রত্যাহারের প্রভাবে দেশের দুই হাজার কিলোমিটার নৌপথ হারিয়ে গেছে। এই নৌপথ ফিরে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন নেদারল্যান্ডসভিত্তিক একদল বিশেষজ্ঞ। শতাধিক নদী ক্ষীণ ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার, কম বৃষ্টিপাত এবং অপরিকল্পিত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনসহ নানা কারণে ৪০ বছরে তিন শতাধিক নদী ও সহস্রাধিক বিল শুকিয়ে গেছে। নলকূপেও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। দেখা দিয়েছে সেচ সঙ্কট। বৃদ্ধি পেয়েছে আর্সেনিকের মাত্রা। গত কয়েক বছরে উত্তরাঞ্চলের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষি, মৎস্য, শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকার ক্ষতির পাশাপাশি এই অঞ্চলের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে গেছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ভূ-উপরিস্থ সেচের পানির সঙ্কট। উত্তরাঞ্চলের সহস্রাধিক বিল ও তিন শতাধিক শাখা-প্রশাখা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ভূ-উপরিস্থ পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময়ের খরস্রোতা বড়াল, নন্দকুজা, ভদ্রাবতী, সরস্বতী, ইছামতি, গুমানী, আত্রাই, করতোয়া, ফুলঝোর, তুলসী, ছোট যমুনা, ধরলা, দুধকুমার, তিস্তা, ঘাঘট, বাঙ্গালী, জিঞ্জিরাম, বুড়িতিস্তা, যমুনেশ্বরী, মহানন্দা, টাঙ্গন, পুনর্ভবা, ত্রিমোহনীসহ তিন শতাধিক নদী শুকিয়ে যাওয়ায় এই অঞ্চলের প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার জলপথ ফিরে পাওয়া যাবে না।
গোয়ালন্দ থেকে বিহারের পাটনা পর্যন্ত স্টিমার চলাচল করত। অপর দিকে, যমুনা নদী হয়ে বেড়া, নগরবাড়ী, ভারেঙ্গা, নাকালিয়া, সিরাজগঞ্জ ও কালীগঞ্জ হয়ে স্টিমার আসাম প্রদেশে যেত। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সেই জলপথ এখন নেই।
পাঁচ দশকের ব্যবধানে দেশে সেচযন্ত্র, গভীর ও অগভীর নলকূপের সংখ্যা প্রায় ৩৭ লাখ। সেচের জমি বেড়েছে ২২ লাখ হেক্টর। এসব সেচযন্ত্রে বড় নদী, ছোট নদীগুলোর সাথে যুক্ত অসংখ্য খাল, হাওর, বিল থেকে সেচ দেয়া হয়। নদ-নদী, খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় সেচব্যবস্থা ভূগর্ভস্থ পানির উপরেই নির্ভরশীল। ভারত দু’দেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় আমাদের সেচব্যবস্থা পুরোপুরি সেচযন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।


পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. মো: জুবায়ের ফেরদৌস বলেন, উজানে পানির উৎসগুলোর প্রায় সব ক’টিতেই ভারত প্রবাহ আটকে দিয়েছে। এসব নদ-নদীর কয়েকটি ছাড়া বাকিগুলোর মূল উৎস হিমালয়। এসব প্রবাহকে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় জলপথ ও প্রাকৃতিক পানির উৎস শুকিয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে অনেক অঞ্চলের নৌ-যোগাযোগ ও সেচ কার্যক্রম।
বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞরা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, দেশের ২৪ হাজার কিলোমিটার জলপথের সবটুকু ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। যদি ছয় হাজার কিলোমিটার জলপথও বাঁচিয়ে রাখা যায়, তা হলেও এ দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু এই জলপথটুকুও টিকিয়ে রাখতে পারেনি কোনো সরকার।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, নদ-নদীগুলোও আমাদের দেশের অর্থনীতির বুনিয়াদ। এখানে কৃষি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবেশ সব কিছু নদীনির্ভর। নদী বাদ দিয়ে দেশ বা মানুষের উন্নয়ন কল্পনাও করা যায় না। ভারত অভিন্ন নদীর পানি একতরফা নিয়ন্ত্রণ করছে। এর প্রভাবে কয়েক বছরে উত্তরাঞ্চলের কৃষি, মৎস্য, শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। পঙ্গু করে দিচ্ছে আমাদের অর্থনীতিকে। নদী বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী কামরুন নেছা বলেন, ভারত একতরফাভাবে পানি প্রবাহের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করায় বাংলাদেশের মহাবিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী।
জলপথ বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। তাই একে বাঁচাতে প্রধানত সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে এবং সবাইকে সহায়তা করতে হবে। অন্যথায় আমাদের অর্থনীতি বাঁচবে না। তখন হয়ে যাবে অপূরণীয় ক্ষতি।


আরো সংবাদ



premium cement
মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সকল