২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়ম

মূলত প্রশাসন দায়ী

-

নয়া দিগন্তের কয়রা (খুলনা) সংবাদদাতা এক প্রতিবেদনে জানান, খুলনার কয়রা উপজেলায়, গত (২০২১-২২) ও চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে সেখানে স্থানীয় সরকার উন্নয়ন প্রকল্প-৩ বাস্তবায়ন, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে কয়রায় ২৬৫টি প্রকল্পের প্রায় চার কোটি এবং চলতি অর্থবছরে সদর ইউনিয়নে কাগজে-কলমে নামেমাত্র কাজ দেখিয়ে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের ১৮ লাখ টাকা তুলে নেয়ার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বিরুদ্ধে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়, কয়রা সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর স্লুইসগেট সংলগ্ন রাস্তায় মাটি ভরাট করা ও লঞ্চঘাট থেকে স্লুইসগেট অভিমুখে রাস্তা সংস্কারে ইটের সোলিংয়ে দু’টি প্রকল্পে আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। স্থানীয়দের দাবি, স্লুইসগেটের রাস্তাটি তারা স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ভরাট করেছেন এবং লঞ্চঘাটের রাস্তায় পুরনো ইট তুলে সেখানে কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়েছেন। প্রকল্প কমিটির সভাপতি থাকার কথা কয়রা সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য লুৎফর রহমানের। তবে তিনি ওই প্রকল্প সম্পর্কে ‘কিছুই জানেন না’ বলে জানান।
জানা গেছে, একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মিজানুর রহমান কোহিনুর একটি জাপানি সংস্থার অর্থায়নে ও জেজেএস প্রকল্পের সাড়ে চার লাখেরও বেশি টাকার গণশৌচাগারটি তার নিজ বাড়িতে নির্মাণ করে নিয়েছেন। শৌচাগারটি কয়রা বাজারের ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করা হলেও ওই ইউপি সদস্য পারিবারিকভাবেই তা ব্যবহার করছেন।
জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার বাবদ ‘কাবিখা’, ‘কাবিটা’ ও টিআর কর্মসূচির আওতায় ৩৬৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, ৩৩৭ টন চাল ও ২০৭ টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়। বেশ কয়েকটি প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি স্থানে যে কাজ হয়েছে, তার কোনো চিহ্নই নেই। কয়েকটি প্রকল্পে কিছু কাজ হলেও বেশির ভাগ প্রকল্পেই নামেমাত্র কাজ করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। উপজেলার আনাদি ইউনিয়নে ‘খাজরা খেয়াঘাট থেকে আমাদি আবাসন অভিমুখে সড়ক পাকাকরণ’ প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল দুই লাখ টাকা, যা কোনো কাজ না করেই তুলে নেয়া হয়েছে। ওই এলাকার খেয়ার মাঝি আবু মুছা জানান, রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি। তাই যাতায়াতকারীরা বড়ই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বাগালি ইউনিয়নের আট লাখ টাকা বরাদ্দের ‘শ্রীফলতলা ওলি সানার বাড়ি থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত’ রাস্তাটি যেনতেনভাবে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। মোসলেম সানা, আবদুল ওহাব, শামসুর গাজীসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে দায়সারাভাবে রাস্তার কাজ করা হয়েছে।
এদিকে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে মুজিবশতবর্ষে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৯০টি ঘরে যাতায়াত করা নিয়ে ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা পাইকগাছায় সুবিধাভোগীদের রাস্তা নির্মিত হলেও কয়রা উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের গাফিলতির কারণে ওই ঘরগুলোতে যাওয়ার রাস্তা নাজুক। কয়রা সদর ইউনিয়নে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পে ১৮ লক্ষাধিক টাকার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও বাস্তবায়ন হয়নি গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রাস্তা নির্মাণের।
‘কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে বেশির ভাগ প্রকল্পের টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। কোথাও কাজ হয়েছে নামেমাত্র। জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির যোগসাজশে এসব বরাদ্দ লোপাট হয়।’
উপজেলা ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা’ জিএম সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি এ উপজেলায় নতুন এসেছেন। ‘শুনেছেন’, কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় বরাদ্দের টাকা ছাড়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমিনুর রহমান বলেন, ‘কয়রায় আমার যোগদানের আগে এসব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তার পরও আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব।’


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল