২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অর্থনীতির দিকেই সবার নজর

সুশাসন নিশ্চিত করুন

-

দেশে এখন সব মহলের আলোচনার মুখ্য বিষয় অর্থনীতি। রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের পাশাপাশি সবাই এখন ব্যবসায়, বাণিজ্য, ব্যাংকিং, আমদানি-রফতানি ইত্যাদি খাতের ঘটনাবলির দিকে নজর রাখছেন। উন্নয়ন সহযোগী দেশ বা সংস্থার প্রতিনিধিদের আসা যাওয়াও বেড়েছে। তাদের বক্তব্যও খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা করছেন অর্থনীতি খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও আগ্রহী মানুষ।
অর্থনৈতিক খাতে বর্তমানে যে পরিস্থিতি তা খুব আশাব্যঞ্জক নেই। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। ডলারের অভাবে আমদানি সঙ্কোচন নীতি চলছে। এমনকি পবিত্র রমজান মাসের প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে জানা গেল, দেশে ব্যবসার পরিবেশের আরো অবনতি হয়েছে। গত রোববার প্রকাশিত বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জরিপ রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে বড় বাধা দুর্নীতি। আছে অবকাঠামোর অভাব, ঋণপ্রাপ্তির সমস্যা এবং প্রশাসনিক অদক্ষতা, যা ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য প্রতিকূল। আছে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ। সরকারি খাতের সেবা পেতে যে ঘুষ দিতে হয় বেড়েছে তার পরিমাণও। জরিপে অংশ নেয়া দুই-তৃতীয়াংশ বা ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মকর্তা দুর্নীতিকে ব্যবসার বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। কোন কোন জায়গায় দুর্নীতি হচ্ছে, জরিপে সেটিও উঠে এসেছে। ৬৪ শতাংশ কর্মকর্তা করদানে, ৫৪ শতাংশ ব্যবসায়িক লাইসেন্স নিতে, ৪৯ শতাংশ গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ নিতে এবং ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তা আমদানি-রফতানিতে দুর্নীতির কথা বলেছেন। আর্থিক খাতে আছে সুশাসনের অভাব, পঙ্গু পুঁজিবাজার, বিদেশী বিনিয়োগ আনতে সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যাডিমন গিন্টিং আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হতে হলে জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক খাত শক্তিশালী করতে হবে। করতে হবে ব্যাংক খাতের সমন্বিত ও সার্বিক সংস্কার। এ সংস্কার প্রক্রিয়ায় খেলাপিঋণ কমানোর কৌশল থাকতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নজরদারিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে হবে।
এর আগেও আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতাসংস্থার প্রতিনিধিরা আর্থিক খাতের সংস্কারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাদের পরামর্শ সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কতটা আমলে নিয়েছেন তা স্পষ্ট নয়। বরং রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক কথাবার্তা বলার প্রবণতা যেন বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যেমন অর্থনীতির তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার বাড়ানো এবং চীনের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে চিহ্নিত করেন। এটি দেশের আর্থিক খাতে বিদ্যমান বিশৃঙ্খলা এবং সুশাসনের অভাবের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা মনে হতে পারে। আবার সরকারি ভাষ্যে তুলে আনা হচ্ছে আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নবৃত্তান্ত। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অর্থনীতির হালনাগাদ চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে কানাডার কোনো এক অনলাইন প্রকাশনার উদ্ধৃতি দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান এখন বিশ্বে ৩৫তম।
২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার হবে এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার এমন প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। দেশের গড় প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নিচে নামলেও ২০৪০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করবে বলে দাবি করা হয়।
বর্তমানে ঋণপত্র (এলসি) খোলা নিয়ে যে পরিস্থিতি বিদ্যমান এবং আমদানি যেভাবে সঙ্কুচিত, তাতে অর্থনীতির গতি কতটা মন্থর হবে সে বিষয়ে সরকারের কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। সরকার সম্ভবত আইএমএফের সাড়ে চার’শ কোটি ডলারের ঋণ পাওয়ার অপেক্ষায় আছে। সেটি পেলে একটু দম নিতে পারবে সরকার। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সুশাসন নিশ্চিত বা সংস্কার করা না গেলে দেশের অর্থনীতিতে ওই ঋণ কোনো ফল বয়ে আনবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
রাঙ্গামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬ প্রতিবাদ সমাবেশকারীদের গ্রেফতারের নিন্দা জামায়াতের ‘সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না’ ফরিদপুরে বেইলি ব্রিজ অপসারণ করে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি বাংলাদেশকে এভিয়েশন হাব হিসেবে গড়তে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য অশ্লীল নৃত্য পরিবেশনের অভিযোগে ৫ জন‌ আটক ঈশ্বরদীতে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ তীব্র তাপদাহে খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করল একতা বন্ধু উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গলাচিপায় পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে : ইসি

সকল