২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
উপকূলে লবণ উৎপাদনের ধুম

এ প্রবণতা অব্যাহত থাকুক

-

ঘনকুয়াশা কেটে লবণ উৎপাদনের ধুম পড়েছে উপকূলজুড়ে। মাঠে অপরিশোধিত (ক্রুড) লবণের দাম বেশি পাওয়ায় লবণ চাষে আগ্রহ বেড়েছে লবণচাষিদের। এ পর্যন্ত মাঠে উৎপাদিত লবণ পাইকারি বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ৪৭০ টাকা করে। ধোলাই খরচ ৩০ টাকা ছাড়াই লবণ বিক্রি করে বাড়তি দাম পেয়েছেন এই চাষিরা- এমনটাই জানালেন লবণ প্রকল্পের জিএম জাফর ইকবাল ভুঁইয়া। এদিকে প্রতি মণ লবণ উৎপাদনে গড়ে খরচ পড়ছে ২৫০ টাকার মতো। সে ক্ষেত্রে লবণ চাষ ও বিক্রিতে স্বস্তিতে রয়েছেন চাষিরা।
গত শনিবার পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছে দুই লাখ ১৬ হাজার ৭১৭ টন। একই সময়ের মধ্যে গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ৬১ হাজার ৬৭৮ টন। এই মৌসুমে তার প্রায় চারগুণ বেশি লবণ উৎপাদন হয়েছে।
অন্য দিকে, একই সময়ে মাঠে প্রতি মণ অপরিশোধিত লবণ বিক্রি হয়েছে ৪৭০ টাকা। সেই লবণ চট্টগ্রামের মাঝিরঘাট ও পটিয়া ইন্দ্রপোলের লবণ শিল্পে কেনা হয়েছে ৬০০ টাকা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ লবণ মিলমালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির চৌধুরী।
এ পর্যন্ত দেশের ৭৫টি মৌজার মধ্যে ৫৫টি মৌজায় চাষিরা লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেছেন। আগামী মাস ফেব্রুয়ারির আগে চাষিরা সব মৌজায় লবণ উৎপাদনে মাঠে নামবেন। তখন লবণ উৎপাদন আরো বহুগুণ বাড়তে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে ২৪ লাখ ৮৩ হাজার টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্য দিকে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৭৫ মৌজায় ৬৩ হাজার ২৯১ একর লবণ মাঠে ৩৭ হাজার ২৩১ জন চাষি লবণ উৎপাদনে নিয়োজিত ছিলেন। তবে বৈরী আবহাওয়ায় ২৩ লাখ ৩৫ হাজার টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ৩২ হাজার টন, যা দেশের লবণ উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
দেশে বর্তমানে গড়ে প্রতি মাসে লবণের চাহিদা প্রায় পৌনে দুই লাখ টন। বিসিকের লবণ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল বলেন, সরকার লবণ শিল্প ও চাষিদের স্বার্থরক্ষায় বিদেশ থেকে লবণ আমদানির শুল্কহার ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৯ শতাংশ করেছে। এ ছাড়া চলতি বছর বিসিকের উদ্যোগে নামমাত্র সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। চাষিরা রেয়াতি সুদে এক লাখ ৫৩ হাজার টাকার কৃষিঋণ সুবিধাও পাচ্ছেন। এসব কারণে এবার লবণ চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের।
জানা গেছে, প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর থেকে পরের বছরের ১৫ মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদন মৌসুম ধরা হয়। সাধারণত লবণ উৎপাদন মৌসুম শুরু হওয়ার পরে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গড়ে সাত থেকে আট হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়ে আসছে। কিন্তু মার্চ থেকে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত রোদের প্রখরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর উৎপাদন বহুগুণে বেড়ে যায়। গত মৌসুমের শেষ পর্যায় থেকে অপরিশোধিত লবণের পাইকারি দাম বাড়তে শুরু করে, যা এ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। মাঠে পাইকারি লবণের ভালো দাম পাওয়ায় এবার মৌসুম শুরু হওয়ার এক মাস আগেই লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমে পড়েন লবণচাষিরা।


আরো সংবাদ



premium cement