২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সারের দাম বেশি; কপির আকার ছোট

সরকার অবিলম্বে সুনজর দিন

-

সহযোগী একটি দৈনিকের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি এক প্রতিবেদনে জানান, কুড়িগ্রাম জেলার আগাম ফুলকপি চাষে কৃষকরা এবার লাভবান হলেও সঠিক সময়ে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে বিলম্বের দরুন সবজির ফলন যেমন আশানুরূপ হয়নি, তেমনি ফুলকপির আকারও হয়নি তাদের আশা মোতাবেক। এমন অভিযোগ খোদ চাষিদেরই। এদিকে, মুনাফার প্রত্যাশায় ঋণ নিয়ে জমির পরিচর্যা, কীটনাশক, সার এবং অতিরিক্ত শ্রমমূল্য মেটাতে গিয়ে তাদের হিমশিম খাওয়ার মতো দুরবস্থা। অন্য দিকে, প্রশাসনের দাবি, ‘সার ডিলারদের কাছে যথেষ্ট সার আছে। তাই কোনো সমস্যা সংশ্লিষ্ট কারো হবে না।’
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার দেশের উত্তরাঞ্চলের এ জেলায় সোয়া সাত হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করার টার্গেট। অবশ্য আগাম শাকসবজি লাভজনক বলে এবার ৩ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে এর আগাম চাষাবাদ করা হয়েছে। তাই ফুল ও বাঁধাকপি বাজারে এসেছে। গতবার সবজি চাষ করে বড় ধরনের লোকসান দিয়েছেন এই চাষিরা। ফলে এবার স্বল্প পরিসরে চাষ করেও লাভ হচ্ছে তাদের। তবে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের অভিযোগ, সারের বেশি দাম এবং যথাসময়ে এ কারণে জমিতে সার না দেয়ার দরুন ফুলকপির ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। এর আকারও ছোট হয়ে গেছে। ফলে সংশ্লিষ্ট কৃষকরা এখন হতাশাগ্রস্ত ও বিক্ষুব্ধ।
এ জেলার রাজারহাটের মহিধর গ্রামের জনৈক কৃষক বলেছেন, সার থাকলেও আমরা কোনো সার পাই না। সারের ডিলাররা বলেন, ‘স্লিপ আনতে হবে’। এদিকে, সরকারি কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজাররা বলেছেন, ডিও অর্থাৎ আধা সরকারি আদেশ পাইনি। এ ধরনের হয়রানির শিকার হলে কি কোনো কৃষিকাজ করা যায়? শেষাবধি, পাঁচ দিন যাবত ঘুরে সুপারভাইজার থেকে ২৫ কেজি সারের জন্য স্লিপ পেয়েছি। কিন্তু সময় মতো সার দেয়া যায়নি বলে সবজির ফলন ভালো নয়। ফুলকপি আকারে ছোট হয়ে গেছে এবার। অন্য এক কৃষক জানালেন, সার আছে ডিলারের গুদামের মধ্যে। অথচ আমরা যদি তার কাছে যাই, তখন বলা হয় ডিও নেই। এদিকে, খোলাবাজারে সারের বস্তা ১৪০০ টাকা। সেটি এর প্রায় অর্ধেক দামে সরকার কৃষকদের দেয়ার কথা। মহিধর গ্রামের এক লোক জানিয়েছেন, ‘এবার ফুলকপির দাম অতীতের তুলনায় বেশি। এ বছর আমি ধরা খাইনি। এর আগে প্রতিবার ধরা খেয়েছি। সার ঠিক সময়ে পেলে লাভ আরো বেশি হতো।’ মোট কথা, সারের অভাবে কপির আকার আগের তুলনায় ছোট।
কুড়িগ্রামের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর কৃষিবিদ বিপ্লব মোহন্ত জানান, ‘আগাম ফুলকপি চাষে কৃষকদের বেশি লাভ হচ্ছে। এ জন্য সার যথেষ্ট আছে আমাদের হাতে। তাই আশা করি, শীতকালে কৃষকদের চাষে কোনো প্রকার সমস্যা হবে না। ফলে সবজি চাষের টার্গেট পূরণ করা সম্ভব হবে।’
সরকার বা প্রশাসনের অবিলম্বে চাষিদের বিভিন্ন সমস্যার দিকে সুনজর দেয়া দরকার। অন্যথায় তারা বিষম অসুবিধায় পড়বেন, যা থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো উপায় থাকবে না।


আরো সংবাদ



premium cement