১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সরকারি কলেজেও সমস্যার পাহাড়

অবিলম্বে সমাধান করুন

-

একটি সহযোগী দৈনিক জানায়, চট্টগ্রামের ৮৩ বছরের পুরনো স্যার আশুতোষ কলেজে জমে উঠেছে সমস্যার স্তূপ। পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী এসব সমস্যার মধ্যেই অধ্যয়ন করতে বাধ্য হচ্ছেন। সরেজমিন দেখা যায়, কলেজের সীমানাপ্রাচীর না থাকায় ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খেলার খোলা মাঠ, বেশ ক’টি পুকুরসমেত বহু দামি জায়গা এখন অন্যের দখলে। টয়লেটের দুর্গন্ধ ও ঝুঁকিপূর্ণ জরাজীর্ণ ভবনে শিক্ষকরা পাঠদান করছেন। দু’টি জীর্ণ ভবন ধসে পড়তে পারে যেকোনো সময়ে। তখন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়া বিচিত্র নয়।
কক্ষ সঙ্কটে একটি শ্রেণীর পরীক্ষা হলে অন্যান্য শ্রেণীর ক্লাস নেয়া বন্ধ রাখতে হয়। কলেজের ছাদ থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ে। কলেজে মাত্র একটি নলকূপ দিয়ে খাবার পানির সমস্যা মিটে না। দু’টি শৌচাগারে পানি নেই। প্রস্রাবের দুর্গন্ধের দরুণ ক্লাসরুমে থাকা যায় না। এই সরকারি কলেজে কোনো মিলনায়তন নেই। ভবনের ছাদ থেকে পড়া পানিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে লাইব্রেরির মূল্যবান বইপত্র। কেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি গবেষণাগারের যন্ত্রাংশ অবহেলার শিকার। শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো কমনরুম নেই। কলেজ সূত্র জানায়, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের পদ মাত্র দুই-তিনজনের। এর আটটি পদই ফাঁকা। অতিথি শিক্ষক দিয়ে ঘাটতি মোকাবেলা করতে হয়। এ কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের আবাসনের কোনো ব্যবস্থাই নেই। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ১৬টি পদের বিপরীতে মাত্র তিনজন কাজ করছেন।
এ দিকে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর জরাজীর্ণ ভবনগুলো শনাক্ত করে ‘বিপজ্জনক’ বলে শুধু সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে। সীমানাপ্রাচীরের অভাবে অরক্ষিত কলেজে অবাঞ্ছিত বহিরাগতদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কলেজের ১৯ একরেরও বেশি সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাচ্ছে।
স্নাতক শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন তারেক বলেছেন ‘এই সুপ্রাচীন বিদ্যাপীঠের বেহাল অবস্থায় দুঃখ লাগে। তবুও পরিকল্পিত উদ্যোগ নেই সঙ্কট সমাধানের।’ স্যার আশুতোষ কলেজের প্রিন্সিপাল ড. পার্থ প্রতিম ধর বলেছেন, ‘এই কলেজে দুই বিষয়ে অনার্স, স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ২৩৭। এখানে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের পদ সৃজন করা প্রয়োজন। আটটি পদে কোনো শিক্ষকই নেই। মাত্র তিনজন কর্মচারী নিয়ে কলেজটি চালানো অত্যন্ত দুঃসাধ্য। এসব বিষয় উপরে জানানো হয়েছে।’
১৯৩৯ সালে কানুনগোপাড়ার শিক্ষাব্রতী রেবতী রমন দত্ত তার শিক্ষক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন ভাইস চ্যান্সেলরের নামে এ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে এটি সরকারি করা হয়েছে। কলেজের সমস্যাগুলো অবিলম্বে সুরাহা করা হবে বলে আমরা আশা করছি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement