২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অর্থনীতির চাপ সামলাতে হিমশিম

জ্বালানি তেলের দাম সঙ্কট আরো বাড়াবে

-

অর্থনীতি ভয়াবহ চাপে পড়েছে। নিয়ম না মেনে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া এবং সর্বব্যাপ্ত অনিয়ম, দুর্নীতি ইত্যাদি মোটা দাগে অর্থনীতিতে ধসের কারণ। অবস্থা এমন হয়েছে, এখন দৈনন্দিন ব্যয় সামলাতেও সরকারকে জোড়াতালি দিতে হচ্ছে। আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার উদ্যোগ সে জোড়াতালির উদাহরণ। নেয়া হয়েছে ব্যাপক কৃচ্ছ্রতার নীতি। বিশাল বিশাল উন্নয়ন প্রকল্প দূরের কথা; এখন চালু প্রকল্প বাস্তবায়নও কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেক প্রকল্প একনেকে পাশের পর বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিপজ্জনক পর্যায়ে এবং রিজার্ভ বাড়ানোর উপায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে অর্থের জন্য আইএমএফের কাছে হাত পাততে হচ্ছে। কিন্তু সেটি পেতে হবে কঠিন শর্তে। সে শর্ত অসহায়ের মতো প্রতিপালন করতে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ। ঋণ পেতে আইএমএফের শর্ত জ্বালানি খাতে ভর্তুকি তুলে দিতে হবে। তা-ই করতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী যত বলুন না কেন, আইএমএফের ঋণের সাথে তেলের দাম বাড়ানোর সম্পর্ক নেই, সেটি বাস্তবে উল্টে দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বলেছেন, ঋণ দিতে যেসব শর্ত জুড়ে দিয়েছে আইএমএফ, এর মধ্যে রয়েছে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি কমানো। অর্থনীতিবিদরাও একই কথা বলছেন।
সরকারের উন্নয়নের বাণী এখন আর শোনা যায় না ক্ষমতাসীনদের মুখে। এখন অনটনের আগুন থেকে ঘর সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। কিন্তু আগুন সামলানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সেগুলো আগুনে পানির পরিবর্তে ঘি ঢালা হয়ে যাচ্ছে কি না ভেবে দেখার অবকাশ আছে।
কয়েক দিন আগে সারের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এক সপ্তাহ না যেতে নজিরবিহীনভাবে বাড়ানো হলো সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম। এ বাড়ানোর প্রক্রিয়া বৈধ নয় বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেখানে কর্তৃপক্ষের নিজেরই বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে, সেখানে পণ্যমূল্য বাড়ানোর প্রক্রিয়া বৈধ না অবৈধ সে বিতর্ক অর্থহীন। কিন্তু এই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে সেটি বিবেচনার দাবি রাখে।
তেলের দাম বাড়ায় তীব্র সঙ্কটে পড়বে দেশের সবচেয়ে বড় বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের গার্মেন্ট খাত। এর মধ্যে বেড়েছে পরিবহন ভাড়া। ফলে বাড়বে জিনিসপত্রের দাম এবং মুদ্রাস্ফীতি। এসবের সাথে শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে হবে। কারখানা লোকসানে পড়বে। অনেক কারখানা বন্ধও হতে পারে। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি বলেছেন, তেলের দাম বাড়ায় রফতানি খাত হুমকির মুখে পড়েছে। বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেছেন, পুরনো কার্যাদেশে বিপুল লোকসান হবে। অনেক কারখানা নতুন অর্ডার নিতে পারবে না। সেগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। প্রভাব পড়বে কৃষি খাতেও। সারের দাম ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধির চার দিনের মাথায় তেলের দাম প্রায় ৪৩ শতাংশ বাড়ানোয় এ খাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্টরা। এমন এক সময়ে এটা করা হলো যখন আমন চারা রোপণ শুরু হয়েছে। ফলে অনেক কৃষক জমির আবাদ কমিয়ে দেবেন। এতে সামগ্রিকভাবে দেশের মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র্যের হার বাড়বে।
উন্নয়ন কার্যক্রমেও তেলের বাড়তি দামের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এগুলো রয়েছে ব্যয়বৃদ্ধির শঙ্কায়। এ অবস্থায় চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় চলমান ৭১৭টি প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে কৃচ্ছ্রতা কর্মসূচির আওতায়। এ দিকে গণপরিবহন ভাড়া বেড়েছে ২২ শতাংশ। বাজারে নিত্যপণ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে এর মধ্যে। দমবন্ধকর অবস্থায় মানুষ শ্বাস নেয়ার সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বললেন এমপি জয় পঞ্চপল্লীর ঘটনায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে যা দরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার নির্দেশ সরকার ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু বাকৃবির এক্স রোটারেক্টরর্স ফোরামের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত পাবনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ১ দাগনভুঞায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় আ’লীগ নেতাকে শোকজ দখলে থাকা ৪ গ্রাম আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেবে আর্মেনিয়া

সকল