২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
দু’হাত হারিয়েও ক্ষতিপূরণ পাননি

নির্মাণশ্রমিকদের দেখবে কে?

-

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে এক নির্মাণশ্রমিকের নিদারুণ বঞ্চনার ঘটনা ঘটেছে। রিটন মিয়া নামের সে রড-শ্রমিক অরক্ষিত বিদ্যুৎ লাইনের কারণে দু’টি হাতই হারালেন। পরে হোসেনপুরের ইউএনও, ইউপি চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট বিল্ডিংয়ের মালিক ও শ্রমিকনেতাদের সামনে স্থির হয়, মালিক তাকে সাড়ে চার লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবেন। একটি জাতীয় দৈনিকে এ খবর ছাপানো পর্যন্ত ২০ দিনে অসহায় রিটন মিয়া একটি টাকাও পাননি ক্ষতিপূরণরূপে। এ খবর দিয়েছে খোদ ওই পত্রিকা।
উল্লেখ্য, প্রতিনিয়ত নির্মাণশ্রমিকরা মারাত্মক অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এ দেশে। কিন্তু এর আজো প্রতিকার হচ্ছে না সরকারের উদাসীনতায়। আলোচ্য রিটন মিয়াকে এবার ঈদ করতে হয়েছে কোনো সাহায্য পাওয়া ছাড়াই। এটা যেন ‘গোদের উপর বিষফোঁড়া’। মালিকদের সম্মতিতেই সাব্যস্ত হয়েছিল, ঈদুল ফিতরের আগেই রিটনকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি। জানা যায়, এ অবস্থায় নিরানন্দের মধ্যেই রিটন মিয়ার ভাগ্যহত পরিবারের ঈদ কেটেছে। এখন তিনি স্ত্রী ও পাঁচটি সন্তান নিয়ে চরম দুর্দিনে পড়েছেন। দুর্গত পরিবারটি চোখে মুখে অনিশ্চয়তার অন্ধকার দেখছে শুধু।
এ পরিস্থিতিতে ৮ মে কিশোরগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। এ দিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘ওই মালিক সরকারি জায়গা দখল করেছেন এবং সেখানে বাড়ি তোলা হচ্ছে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানও তা জানেন।’ অথচ জনপ্রতিনিধি হিসেবে এ ব্যাপারে তাদের দায়িত্ব অনেক। স্থানীয় গোবিন্দপুর চৌরাস্তায় ২২ জানুয়ারি কাজ করার সময় রিটনের উভয় হাত বিদ্যুতের স্পর্শে ঝলসে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নিয়ে তার দু’হাতই কেটে বাদ দিতে হয়। জানা গেছে, স্থানীয় একটি দুষ্টচক্র পঙ্গু রিটন মিয়াকে তার প্রাপ্য অর্থ না দিয়ে নিজেরাই মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে চায়। আর সংশ্লিষ্ট মালিকও টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কেবল ‘খোঁজ নেবেন’ বলেছেন। এ দিকে দরিদ্র রিটনের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
আমরা আশা করি, কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এ ব্যাপারে প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায়, ন্যায়বিচার থেকে নির্মাণশ্রমিক রিটন মিয়াকে বঞ্চিত হতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement