হাসপাতাল নিজেই ‘গুরুতর অসুস্থ’
- ২৭ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
চিকিৎসকের ঘাটতির সাথে দায়িত্ব পালনে কথিত অনীহার পাশাপাশি, রোগীদের চাপে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিশেষত শিশু বিভাগে মারাত্মক অচলাবস্থা বিদ্যমান। একটি জাতীয় দৈনিকের সচিত্র প্রতিবেদনে প্রসঙ্গক্রমে আরো জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত ওষুধপত্র সঙ্কটের দীর্ঘকালীন অভিযোগ ছাড়াও স্বল্পসংখ্যক বেডে এর ক’গুণ বেশি রোগী থাকায় শিশু ওয়ার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ শাখায় সুষ্ঠু চিকিৎসা লাভ করা সম্পূর্ণরূপে ‘সৌভাগ্যের বিষয়’ বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সব মিলিয়ে এই মেডিক্যাল কলেজ বা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালটি নিজেই যেন আজ গুরুতর অসুস্থ রোগী যার অবিলম্বে সুচিকিৎসা দরকার বলে ওয়াকিবহাল ব্যক্তিরা মনে করছেন।
জানা যায়, ঠাণ্ডাজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বহু শিশুর এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও আউটডোরে সুচিকিৎসা মিলছে না। ফলে হাসপাতালের ইনডোরে রোগীর চাপ বাড়ছে। বরিশাল মহানগরীসহ অত্র অঞ্চলের একমাত্র নির্ভরযোগ্য শিশু চিকিৎসাকেন্দ্র এই হাসপাতালের শিশু বিভাগে মাত্র ৩৮টি শয্যা। অথচ এখানে নিয়মিত রয়েছে গড়ে শতাধিক শিশু রোগী। যেমন, গত ১৬ অক্টোবরও এ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল ১১৫ জন শিশু। তা ছাড়া মাত্র ৪ শয্যার শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিল প্রায় ৮ গুণ, ৩১ জন। এ অবস্থায় বিশাল হাসপাতালটির শিশু বিভাগের মেঝেতেও এখন রোগীর ঠাঁই হচ্ছে না। অভিভাবকরা বলেছেন, কর্তব্যরত চিকিৎসকরা যদি নিয়মিত শিশু রোগীদের সুষ্ঠুভাবে চিকিৎসা করতেন, তা হলে অন্তত বর্তমানের অর্ধেক রোগী সুস্থ হতে পারত। তখন নতুন রোগীদের এখানে ভর্তি করা যেত। এখন অলিখিতভাবে কেবল অত্যন্ত জরুরি রোগীদেরই শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে। এদিকে, এ বিভাগে রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রারের ১০টি পদে মাত্র একজন রয়েছেন। ফলে অতীব জরুরি মুহূর্তে বিপন্ন রোগীদের সুচিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় না। তখন নার্সদের ওপর অনেকটাই নির্ভর করতে হয়। অভিযোগ, এখানে শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপকরা হাসপাতালে নিয়মিত রোগী না দেখে হসপিটাল ডিউটির সময়েও রোগীদের দেখেন নিজ চেম্বারে। রোগীদের স্বজনের অভিযোগ, এতেই ওই চিকিৎসকরা বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করে থাকেন। স্বয়ং শিশু বিভাগীয় প্রধান স্বীকার করেছেন চিকিৎসকের অভাবে তার বিভাগে সুষ্ঠু চিকিৎসা কঠিন হয়ে গেছে। সহকারী অধ্যাপকদের কর্তব্যে গাফিলতি নিয়ে অবশ্য তিনি মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন, পুরো হাসপাতালটির চিত্র প্রায় অভিন্ন। শিশু বিভাগও এর অন্তর্ভুক্ত। তবুও এখানে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে সম্ভব মতো সব করা হচ্ছে। আর শেবাচিম পরিচালক বলেছেন, শিশু বিভাগে রোগীদের চাপ খুব বেশি। ঠাণ্ডা রোগের দরুন সম্প্রতি রোগী কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড না থাকায় অনেককে মেঝেতেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সহকারী অধ্যাপকদের দায়িত্বে অবহেলায় ‘কিছু’ অভিযোগ তিনি পেয়েছেন বলে জানান। সেবার মান বজায় রেখে কাজ দ্রুত করতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। যেহেতু সহকারী অধ্যাপক ও তদূর্ধ্বরা মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের আওতাভুক্ত, তাই সেখানেও এ বিষয়ে কথা বলছেন তিনি।
‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’- এ স্লোগান বাংলাদেশে বহু পুরনো। কিন্তু এর বাস্তবায়ন সুদূর পরাহত হবে যদি জাতির ভবিষ্যৎতুল্য শিশুরা সুচিকিৎসা বঞ্চিত থাকে। তাই দেশের সব হাসপাতালের সব সমস্যার স্থায়ী সুরাহা করে এগুলোকে রুগ্ণ দশা থেকে মুক্ত করাই সময়ের দাবি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা