কৃষকের দুর্ভোগ দূর করতে হবে
- ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০০:০৫
বাংলাদেশের দরিদ্রতম ও সর্বাপেক্ষা অনুন্নত জেলাগুলোর অন্যতম, কুড়িগ্রাম। অথচ এ জেলার বিচ্ছিন্ন জনপদ রৌমারীর বিভিন্ন স্থানে বসতি ও স্থাপনা নির্মাণের দরুন পানি নিষ্কাশন ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এ অবস্থায় ডুবে গেছে চাক্তাবাড়ি-যাদুরচর মাস্টারপাড়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪০০ হেক্টর আবাদি জমি। সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে এর মধ্যে প্রায় আড়াইশ হেক্টরের (এক হেক্টর সমান প্রায় আড়াই একর) ফসল। এতে এলাকার শত শত কৃষিজীবী চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন। অবিলম্বে নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করতে কৃষকরাসহ এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার রৌমারী সংবাদদাতার পাঠানো সচিত্র প্রতিবেদনে এ তথ্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে- রৌমারী সদর ইউনিয়নের চাক্তাবাড়ি থেকে যাদুরচর ইউনিয়নের কর্তিমারী মাস্টারপাড়া পর্যন্ত পানি জমে আছে জলাবদ্ধতার কারণে। চাক্তাবাড়ি-ধনারচর বেড়িবাঁধের একটি অংশ ভেঙে গিয়ে পানি ঢুকে গোটা এলাকা তলিয়ে দিয়েছে। ধনারচর নতুন গ্রামে পানি বের হওয়ার জন্য ব্রিজ থাকলেও সেটা বন্ধ করে দিয়ে বসতি স্থাপিত হয়েছে। কর্তিমারী বাজারেও পানি নিকাশের পথ রুদ্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। নিষ্কাশনের আর উপায় না থাকায় বিশাল এলাকাতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে সোয়া ৭০০ কৃষকের ২৫০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। তাই তারা এখন দিশাহারা। কৃষকদের বক্তব্য, জলাবদ্ধতা অনেকের সব ফসলই নষ্ট করে দিয়েছে। এই পানি জমে থাকলে সরিষা এবং অন্যান্য ফসল চাষ করা আর সম্ভব হবে না। তারা জানিয়েছেন, গত বছর বন্যায় বেড়িবাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হলেও তা মেরামত করা হয়নি। ফলে এ বছর বন্যার পানি সহজেই ঢুকে পড়েছে। তবে নিষ্কাশনের পথগুলো বন্ধ বলে বানের পানি আর নামতে পারছে না। এই অবস্থায় জলাবদ্ধতায় ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের প্রশ্ন : ‘জমিতে চাষ আবাদ করতে না পারলে আমরা কিভাবে বাঁচব?’ এ দুশ্চিন্তায় তাদের ঘুম আসে না।
এদিকে, যাদুরচর ইউনিয়নের একজন কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বন্যায় চাক্তাবাড়িতে বাঁধ ভেঙে সে এলাকা এবং আশপাশের নতুন গ্রাম ছাড়াও সদর ইউনিয়নের কোনো কোনো স্থানও প্লাবিত হয়েছে। এতে সোয়া ৭০০ কৃষকের ৪৪৫ হেক্টর জমি ডুবে যায়। আংশিক ক্ষয়ক্ষতির ১৯৫ হেক্টর জমি ছাড়া বাকি সব ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত পানি না সরলে নভেম্বরে বীজতলা তৈরি এবং রবি ফসল আবাদ করা যাবে না। অন্য দিকে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বক্তব্য, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা মোতাবেক প্রণোদনা দেয়া হবে। তবে এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনই বড় কাজ।’ ইউএনওর কথা হলো, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে তা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হবে।’ তবে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন নিজেরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। পাউবোর ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হলে তখন কী করা হবে, তা-ও বলা হয়নি।
কৃষিপ্রধান এ দেশের প্রাণতুল্য কৃষক সমাজের ভূমিকার ওপর কৃষিভিত্তিক জাতীয় অর্থনীতি নির্ভর করছে। তাই অবিলম্বে তাদের যাবতীয় অসুবিধা দূর করার জন্য জলাবদ্ধতা নিরসন, বাঁধ মেরামত, পর্যাপ্ত প্রণোদনাসহ সব পদক্ষেপ সরকার নেবে বলে দেশের মানুষের প্রত্যাশা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা