কর্তৃপক্ষ কোথায় গেল?
- ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:২৬
একে তো মহাসড়কে থ্রি হুইলার নিষিদ্ধ, তার ওপর লেগুনার পাদানিতে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এবং বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতসমৃদ্ধ কক্সবাজার শহরটির সংযোজন মহাসড়কের এ দৃশ্য ছাপা হয়েছে নয়া দিগন্তের ২৩ সেপ্টেম্বর সংখ্যায়। সংবাদটির সূচনাতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দেদার চলছে নিষিদ্ধ যানবাহন। এর মধ্যে রয়েছে অননুমোদিত সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, লেগুনা ও মালবাহী ভটভটি। সড়কে এসব যানের কারণে প্রতিনিয়তই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া এসব নিষিদ্ধ যানবাহনের কারণে মহাসড়কে যানজট নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
জানা যায়, সেপ্টেম্বরে এ সড়কে চুনতি এলাকায় বেশ বড় দুর্ঘটনা ছাড়াও গত বছর ২১ মার্চ একই স্থানে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ১৫ জন যাত্রী। তাছাড়া, এ বছর গত ৮ আগস্ট একই মহাসড়কে আমিরাবাদ এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রলিচালক এক পা হারালেন। এর মাত্র পাঁচ দিন আগে এই ঘটনাস্থলের অদূরে মালবোঝাই ট্রাক ধাক্কা দিলে একজন প্রাণ হারান।
আলোচ্য রিপোর্টে জানানো হয়, দেখা গেছেÑ সংশ্লিষ্ট আইনের তোয়াক্কা না করে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর নাকের ডগায় নিষিদ্ধ যানগুলো বিনা বাধায় চলাচল করছে। বন্দরনগরী ও কক্সবাজারের সংযোগকারী সড়কের ঠাকুরদীঘি, পদুয়াবাজার, বটতলী স্টেশন, আধুনগর, চুনতি প্রভৃতি পয়েন্টে বেআইনি গাড়ির স্টেশন রয়েছে। যেমনÑ বটতলীর মহাসড়কের দুই পাশই লেগুনা, অটো ও ব্যাটারি রিকশা এবং ভটভটির দখলে। ফলে সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে প্রায় সময়। এসব যানবাহন রাস্তা তো বটেই, ফুটপাথ পর্যন্ত অন্যায়ভাবে দখল করে রাখছে বিধায় লোকজন হেঁটে যেতেও চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নিরাপদ থেকে যাচ্ছে। অন্য কোনো প্রতিকারও পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী জনগণ। তদুপরি, কোনো ভিআইপি আসার খবরে প্রশাসন নিষিদ্ধ যান চলাচল বন্ধ রাখে। তবে সে ভিআইপি বিদায় নিলেই মহাসড়কে আগের অবস্থা ফিরে আসে। অর্থাৎ নিষিদ্ধ যানবাহনই ‘সিদ্ধ’ হয়ে যায় কর্তৃপক্ষের কাছে।
লোহাগাড়ায় একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট জানিয়েছেন, মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, লেগুনা কিংবা পণ্যবোঝাই ভটভটি নিষিদ্ধ থাকলেও রাস্তার দুই পাশে ৩০ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত দেখার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। আর মোটর স্টেশনে যানজট নিরসনে পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ দিকে দোহাজারি হাইওয়ে থানার ওসির দাবি, এই মহাসড়কে নিষিদ্ধ গাড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানে প্রতিদিন ৭-৮টা যানবাহন ধরে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। ‘মাসোহারা’র বিনিময়ে এসব গাড়ি মহাসড়কে চলতে দেয়ার কথা অসত্য এবং ভিত্তিহীন। অন্য দিকে, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা) লোহাগাড়া শাখা আহ্বায়ক বলেছেন, মহাসড়কে গাড়ি চলাচলে নিষিদ্ধ হলেও এখানে তা চলছে। এতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার এটা বন্ধ করার জন্য।’
দেশের সর্বাধিক গুরুত্ববহ একটা মহাসড়কে যদি আজো এহেন মারাত্মক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়, তাহলে অন্যত্র কী পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সহজেই অনুমেয়। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক জাতীয় আন্দোলনের উদ্গাতা ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা এ মহাসড়কেই প্রাণ হারিয়েছিলেন। এর জের ধরেই তিনি দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করেন সড়ক দুর্ঘটনা রোধে। এ জন্য প্রশাসন তার দায়িত্ব পালনে আর যেন কিছুতেই পিছপা না হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা