২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমানোর সিদ্ধান্ত

অনেকেই বেকায়দায় পড়বে

-

দেশে করোনার প্রভাবে অর্থনীতিতে একধরনের মন্দাভাব বিরাজ করছে। কবে নাগাদ আমাদের অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরে আসবে তা-ও কারো পক্ষে বলা সম্ভব নয়। বিভিন্ন জরিপ মতে, মহামারীর কারণে কিছুসংখ্যক বাদে বাকি সবার আয় কমেছে। টিকে থাকতে বেশির ভাগ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে বাধ্য হচ্ছে। অন্য দিকে দেশে ব্যবসার পরিবেশ অনুকূল না থাকায় অনেকেই গচ্ছিত অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেন। কারণ দেশে যেভাবে সাধারণের অর্থ বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারকরা নয়ছয় করছে, সে জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ সঞ্চয়পত্রের দিকে না ঝুঁকে সাধারণ মানুষের কোনো বিকল্প নেই। তবে সঞ্চয়পত্রে যারা বিনিয়োগ করেন তাদের অনেকের সংসার চালাতে এমনিতেই কষ্ট হয়। কোভিড সেই কষ্ট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু সরকার সেই সঞ্চয়পত্রের মুনাফাও এবার কমালো। সরকারি নতুন প্রজ্ঞাপনে অবসরভোগী, নারী ও মধ্যবিত্তের আয় কমবে। ফলে যারা সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভরশীল, তাদের বেশির ভাগই সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্তে বেকায়দায় পড়বেন। এটি তাদের দুঃখ বাড়াবে বৈ কমবে না।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, আইআরডি সচিব সম্প্রতি একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রীর কাছে। এতে বলা হয়, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দিতে গিয়ে সরকারের সুদ ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এতে অর্থনীতিতে সৃষ্টি হচ্ছে ভারসাম্যহীনতা। সঞ্চয় কর্মসূচিতে অতিমাত্রায় বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি রোধ করা প্রয়োজন। আরো বলা হয়েছে, পাঁচ বছরে সরকারের সুদ ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে গেলেও সঞ্চয় কর্মসূচির বিপরীতে এ ব্যয় হয়ে গেছে তিন গুণ। ভবিষ্যতে তা আরো বাড়বে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, সার্বিক বিবেচনায় দেশের সুষ্ঠু অর্থনীতি বজায় রাখার স্বার্থে সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক রকম হার, ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক রকম হার এবং ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরেক রকম হার করা হয়েছে। তবে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হারে সরকার হাত দেয়নি। যে ছয় সঞ্চয় কর্মসূচির জন্য নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তার মধ্যে চারটি হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। এগুলো হচ্ছেÑ পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্র। এগুলোর মুনাফার হার কমানো হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-সাধারণ হিসাব ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-মেয়াদি হিসাব। এ দু’টি সঞ্চয় কর্মসূচি। সাধারণ হিসাবের সুদের হার আগেরটাই আছে। মেয়াদি হিসাবের মুনাফার হার কমানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কেউ পুনর্বিনিয়োগ করলে তখন তার নতুন বিনিয়োগের অংশটুকুর ক্ষেত্রে নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। শুধু ব্যক্তি নয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্যও প্রযোজ্য হবে নতুন এ মুনাফার হার। গত মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার আগ পর্যন্ত যাদের যে বিনিয়োগ আছে, তারা আগের হারেই মুনাফা পাবেন।
যদিও অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন, সঞ্চয়পত্রের বিক্রি যেভাবে বাড়ছিল, তাতে সরকারের ওপর ক্রমান্বয়ে চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল। ব্যাংক খাতেও সুদের হার এখন কম। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত ঠিক আছে। তবে বাস্তবতা হলো, অবসরপ্রাপ্ত বিপুলসংখ্যক মানুষ, যাদের আয়ের আর কোনো উৎস নেই, তারা সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভরশীল। তাদের কথা চিন্তা করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান মুনাফার হার বজায় রাখতে পারে সরকার। একই সাথে কোভিড পুরোপুরি চলে যাওয়ার পর সরকার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হতো। এ কথা বলা অসঙ্গত নয় যে, এই সময়ে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হয়নি। যারা সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় চলেন, তারা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২

সকল