বিএডিসির আর সঙ্কোচন নয়
- ১৮ জুন ২০২১, ১৫:২৬
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন বা বিএডিসি অর্ধশতাব্দীরও বেশি আগে থেকে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানরূপে ভূমিকা পালন করে, তথা কৃষির নানা ক্ষেত্রে অবদান রেখে আসছে। একসময় বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে বিএডিসির বিপুলসংখ্যক কর্মী থাকলেও বিগত আশির দশকে হঠাৎ এর কার্যক্রম অনেকটা সঙ্কোচনের পর থেকে জনবল মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিএডিসি জাতীয় জীবনে উল্লেখযোগ্য তৎপরতা প্রদর্শন করছে এরপরও। এবার অভিযোগ উঠেছে এর আলুবীজ শাখা বিলুপ্তির প্রয়াসের। সংশ্লিষ্ট চাষিরা বলছেন, শাখাটি ধ্বংস করার ‘চক্রান্ত চলছে’। এ অভিযোগে ‘বিএডিসি চুক্তিবদ্ধ কৃষক ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদ’ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে সম্প্রতি।
সংগঠনটির বক্তব্য, বিএডিসির একটি চক্র বেসরকারি কয়েকটি সংস্থার যোগসাজশে এ সংস্থার সুনাম নষ্ট করে আলুবীজ শাখাকে ধ্বংসের প্রান্তে নিয়ে গেছে এবং আলুবীজের ব্যাপারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের করায়ত্ত হলে চাষিরা লোকসানের দরুন সর্বস্বান্ত হয়ে যাবেন। এ প্রসঙ্গে আলুবীজের মূল্যহ্রাসের বিষয় প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে। আলোচ্য সংগঠন প্রধানের অভিযোগ, ‘উৎপাদনলক্ষ্যের চেয়ে কম আলু হওয়ায় এবং শ্রমিক ও বালাইনাশক বেশি লাগায় আলুবীজের উৎপাদন ব্যয় কেজিপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকায়। অতীতে বিএডিসি উৎপাদন খরচের চেয়ে ২৫ শতাংশ অধিক দাম কৃষকদের দিয়েছিল আলুবীজের জন্য। সে হিসাবে আলুবীজের দাম এ বছর দেয়ার কথা ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু জানানো হয়েছে, দাম ২২ টাকার বেশি দেয়া হচ্ছে না। এপ্রিলে প্রথম বিজ্ঞপ্তি মারফত এ দাম ছিল আলুবীজের গ্রেডভেদে মাত্র ১৬ থেকে ১৯ টাকা। গত তিন বছর ধরে আলুর ভিত্তি বীজের মান নেমে যাওয়ায় প্রত্যয়িত বীজও মানসম্মত হচ্ছে না।’ এ যুগে পর পর কয়েক বছর বীজের মান খারাপ হওয়ার কারণ ‘বোধগম্য নয়’ বলে তিনি দাবি করেছেন। তার আরো অভিযোগ, কৃষকরা আলুবীজ বপনের সময়ে বিএডিসির বীজ পাওয়া যায় না। অথচ তখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আলুবীজ বিক্রি করে থাকে। ফলে বিএডিসির বীজ অবিক্রীত থেকে যায়।
আলুচাষিরা বিএডিসির আলুবীজ সংগ্রহের দাম সাড়ে ৩৭ টাকা আগের মতো রাখার দাবি জানিয়েছেন। আলোচ্য ফোরামের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ বিএডিসির নিজস্ব খামারে বীজ উৎপাদন ও সংগ্রহ এবং আলুবীজের মূল্য নির্ধারণের সময় যথাযথ আলোচনা ও পর্যবেক্ষণ, মামলাসহ চলমান প্রক্রিয়ায় জড়িত কাউকে হয়রানি না করা, ফোরামের বিষয়ে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ না হওয়া, আলুবীজ বিতরণ, চাষের জমি বণ্টন, ঋণ কার্যক্রম প্রভৃতি ব্যাপারে পরামর্শের নিরিখে সিদ্ধান্ত এবং বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা।
আলুচাষিরা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ‘সর্বস্বান্ত’ হওয়ার যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, তা কতটা বাস্তবসম্মত আমাদের জানা নেই। তবে আমাদের সবার প্রত্যাশা, বিএডিসিকে আর সঙ্কুচিত করা হবে না। বিশেষত পর পর তিন বছর আলুর বীজের মান নেমে যাওয়া এবং এ বীজ বাজারে বিলম্বে আসার ব্যাপারে অবিলম্বে তদন্ত ও প্রতিকার জরুরি। অন্যথায়, আলুচাষিদের সমস্যা থেকেই যাবে। কৃষিভিত্তিক এ দেশে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন যেন যথাযথ ভূমিকা রেখে যেতে পারে, এ জন্য সরকার তার দায়িত্ব পালনে ত্রুটি রাখবে না বলেই আমরা আশা করি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা