২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধির সংস্কৃতি

পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই

-

সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে মাত্রাতিরিক্ত অর্থব্যয় এবং দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ এখন আর অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। নির্ধারিত মেয়াদ ও ব্যয়ে ছোট-বড় কোনো প্রকল্পের কাজই সম্পন্ন হবে নাÑ এটিই আমাদের উন্নয়নের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিন কিলোমিটারের কম দীর্ঘ একটি খাল খননে ১০ বছর সময় লাগলেও তা আমাদের বিস্মিত করে না।
গতকাল নয়া দিগন্তের একটি খবরে এমনটিই জানা যাচ্ছে। ওই খবরে বলা হয়, চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খননের খরচ ৩২৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে এখন এক হাজার ৩৭৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। তিন বছরে শেষ করার কথা থাকলেও প্রকল্পটি চলছে সাত বছর ধরে। এখন আরো তিন বছর মেয়াদ বাড়ছে।
নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে নেয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এই প্রকল্প বিলম্বিত হওয়ার কারণ নির্ধারিত মেয়াদে ভূমি অধিগ্রহণ করতে না পারা। মামলা-মোকদ্দমা থাকার কারণে সময়মতো ভূমি অধিগ্রহণ করা যায়নি। এ অজুহাত কতটা যুক্তিযুক্ত সে বিচারের দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের এই অস্বাভাবিক ব্যয়প্রস্তাব পর্যালোচনা করে যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনতে বলেছে। এটি লোকদেখানো হলেও কিছু ব্যয় কমানো হতে পারে। যুুক্তিযুক্ত পর্যায় মূল্যায়নের কোনো মানদণ্ড অনুসরণের বালাই এ দেশে এটি এখন আর কেউ বিশ্বাস করেন না। অনেক আগেই তা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আমরা শুধু বলতে পারি, কেবল এই একটি প্রকল্প নয়, দেশে চলমান প্রায় সব প্রকল্পেরই ব্যয় ও মেয়াদকাল বেড়ে যাওয়ার সংস্কৃতি অনাকাক্সিক্ষত। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিজে বিভিন্ন প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো নিয়ে বেশ কয়েকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন; কিন্তু তাতে অগ্রগতি হয়েছে কি না বোঝার কোনো উপায় নেই।
বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় ও মেয়াদ বাড়নোর বহু দৃষ্টান্ত গণমাধ্যমের খবরে নিয়মিত প্রকাশ পায়। ঢাকার কাছের জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়ক উন্নয়নের তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প শেষ হতে সাত বছর লাগা এবং ব্যয় ২০০ গুণ বৃদ্ধির দৃষ্টান্ত আমরা দেখেছি। তিন দফায় এক বছর করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। একবার প্রকল্প সংশোধন ও একবার আন্তঃখাত সমন্বয় করা হয়। সময়ের পাশাপাশি ওই প্রকল্পে খরচ বেড়েছে ২০০ শতাংশ।
শুধু এই প্রকল্প নয়, পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প থেকে শুরু করে গ্রামীণ অবকাঠামোর মতো ছোট প্রকল্পও নির্ধারিত ব্যয়ে ও সময়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থতার জন্য কোনো জবাবদিহি করার তথ্য নিকট অতীতে জানা যায়নি। শাস্তি তো দূরের কথা, তিরস্কারের কথাও শোনা যায়নি। যাদের অর্থে উন্নয়ন হচ্ছে, সেই জনগণ শুধু ভোগান্তি পোহাচ্ছে। বাস্তবে বাংলাদেশে এখন কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল। শুধু একটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের ক্ষেত্রে নয়, এটি সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগের ক্ষেত্রেই সমভাবে সত্য। এতে করে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের যে বিপুল অপচয় হচ্ছে শুধু তা-ই নয়, দীর্ঘ সময় ধরে প্রকল্প এলাকার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এসব বিষয় দেখার দায়িত্বও সরকারেরই; কিন্তু এসব বিষয়ে মনোযোগ দেয়ার মতো সময় বা সুযোগ সম্ভবত কারো নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
সংবাদ-রাজনৈতিক বিষয়বস্তু কমিয়ে দেয়ায় ফেসবুক নিউজ ট্যাব থাকছে না জুনের মধ্যে তৃতীয় ধাপে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হবে : প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন সাকিবের প্রশংসায় পোথাস আদমদীঘিতে ২৩০ চালকল বন্ধ : বেকার ৭ হাজার শ্রমিক সাকিবে উজ্জীবিত বাংলাদেশের লক্ষ্য সিরিজে সমতা কুলাউড়ায় জঙ্গল থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার ঈদগাঁওতে মাদককারবারি গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সকল