২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
চাল উৎপাদনে ধারাবাহিক সাফল্য

সুফলের অংশীদার সবাই

-

চাল আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য। সুখবর হলোÑ দেশে চালের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সাথে সাথে মন খারাপ করার মতো তথ্য হলোÑ উৎপাদন বাড়লেও দাম কিন্তু আনুপাতিক হারে কমছে না, বরং তুলনামূলকভাবে বেশি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে চলতি বছর বোরো মৌসুমে প্রতি কেজি চালের উৎপাদন খরচ ছিল ৩৮ টাকা। সরকার প্রতি কেজি চাল ৪০ টাকা ও ধান ২৭ টাকা দরে কেনার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম সরকারের সংগ্রহ মূল্যের চেয়ে চার-পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিবি) এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক খাদ্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক এক পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশে করোনার এই সময়ে চালের ভোগ বা চাহিদা বেড়েছে। গত বছর দেশে ১৮ লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের সহ-প্রতিষ্ঠান এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট দানাদার খাদ্য আমদানি হয়েছে ৯৮ লাখ টন। চালের পাশাপাশি গমের আমদানিও গত বছর চার লাখ টন বেড়ে ৬৪ লাখ টন হয়েছে। তবে চলতি বছর তা এক লাখ টন কমতে পারে। মূলত চালের উৎপাদন ভালো হলে গমের চাহিদা ও আমদানি কমে যায় বলে মনে করা হয়। গত এক যুগে দেশে গমের ভোগ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
গত বছর বর্ষার আগে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। দেশ চার দফা বন্যাকবলিত হয়। এ বছরও ঘূর্ণিঝড় উপকূলজুড়ে ক্ষতের রেশ রেখে গছে। এত সব দুর্যোগের পরও এবারো বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় চাল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) থেকে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ফুড আউটলুক-জুন ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে চাল উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধির পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে এর বাড়তি দাম। সাথে বেড়েছে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি-বিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে এ বছর চালের উৎপাদন বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুঃখজনক হলো, সরকারি-বেসরকারি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, দেশের চালের বাজার হাতেগোনা কিছু চালকল মালিক নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা ধান কেনা, চাল প্রক্রিয়াজাত করা থেকে শুরু করে দেশের ভেতরে বাজারজাত করা নিয়ন্ত্রণ করেন। এমনকি চাল আমদানি-রফতানিও তাদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে দেশে চালের উৎপাদন বাড়লেও কৃষকের চেয়ে চালকল মালিক গোষ্ঠীর লাভ বেশি হয়। অন্য দিকে কৃষকরা সরকারঘোষিত ধানের দাম পাচ্ছেন না। চালের উৎপাদন বৃদ্ধির সুফল শুধু যাচ্ছে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের পকেটে। এই সুফলের অংশীদার ভোক্তারাও নন। তারাও বঞ্চিত। বেশি দামে চাল কিনে খেতে হচ্ছে তাদের।
চাল উৎপাদনের সাফল্য ধরে রাখতে হলে আমাদের কৃষি যান্ত্রিকীকরণে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। বাজারে চালকল মালিকদের দৌরাত্ম্য কমাতে ধান রাখার সরকারি গুদাম বাড়ানোর বিকল্প নেই। যদিও সরকার অনেক নতুন গুদাম নির্মাণ করছে। সেগুলোর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করতে হবে; যেখানে কৃষক সরাসরি ধান বিক্রি করতে পারবেন। এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে দেশে ধানের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে আশা করা যায়। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি তা হলোÑ ধান-চালের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়ে যাওয়ার সুফল কৃষক এবং ভোক্তাপর্যায়ে সুনিশ্চিত করতে সরকারি নীতি শুধু ব্যবসায়ীবান্ধব নয়, অবশ্যই সর্বজনীন হতে হবে; যাতে সবার ন্যায্য অধিকার ও হিস্যা সংরক্ষিত হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
প্রধানমন্ত্রী ৬ দিনের সফরে বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন রায়গঞ্জে পাটভর্তি ট্রাকে আগুন জামালপুরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা ৪৬তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশ ছোট দেশ কাতার অর্থনীতি ও কূটনীতিতে যেভাবে এত এগোল আশুলিয়ায় ছিনতাইকারীর হামলায় আহত নারীর মৃত্যু ‘মুসলিমদের সম্পদ পুনর্বণ্টন’ অভিযোগ মোদির, এফআইআর সিপিএমের প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিখ্যাত চালকবিহীনবিমানের আবিষ্কারক কটিয়াদীতে আসছেন গাজার গণকবরের ‘বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন’ তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

সকল