২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ফেনী জেলায় বাঁধহীন সড়ক ‘সংস্কার’

টেকসই করাকে গুরুত্ব দিতে হবে

-

কোনো নদীর তীরের রাস্তা বা সড়ক সহজেই ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় বাঁধ কিংবা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার দরকার পড়ে। কিন্তু অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায়, বহুলালোচিত মুহুরী নদীর তীরবর্তী উত্তর সতর নদীর কূল সড়কটি পাকা করা হয়েছে ব্লক অথবা প্রটেক্টিভ ওয়ার্ক ব্যতিরেকেই। এলাকাবাসীর এ অভিযোগের উল্লেøখ রয়েছে নয়া দিগন্তের সংবাদদাতার পাঠানো একটি প্রতিবেদনে। এতে আলোচ্য রাস্তাটির দুর্দশার প্রমাণরূপে একটি ছবিও রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে সড়কটি ধসে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় রেজুমিয়া পুলের উত্তর দিকে নদীতীরে সড়কের নিরাপত্তার জন্য দু’পাড়ে ব্লক ঠিকই আছে। তবে আলোচ্য সড়কের জন্য কোনো প্রটেক্টিভ ওয়ার্ক করা হয়নি। সম্প্রতি প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের ৫০ ফুট গার্ডওয়াল দিয়ে সড়কটির কিছুটা পাকা করা হয়েছে। তবে এতে ঝুঁকি বা নিরাপত্তাহীনতা কাটেনি। উপজেলা সদরের পৌরসভা ও মহামায়া ইউপির মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী হিসেবে সড়কটির গুরুত্ব রয়েছে। তবে এর একাংশ আজো জরাজীর্ণ। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিশু-কিশোর প্রাথমিক শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী ছাড়াও নদী তীরের সড়কের পাশে নির্মীয়মাণ, সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের দরিদ্র অসহায় বাসিন্দারা। এলাকার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘সড়কটি রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। না হয় ঢলের পানিতে যেকোনো মুহূর্তে এটি নদীতে হারিয়ে যেতে পারে।’ এ দিকে সড়ক রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
যে সড়কটি ছাগলনাইয়া পৌরসভার সাথে একটি ইউনিয়নের সংযোগ রক্ষা করবে, সেটি এখন নদীতে চলে যাওয়ার হাত থেকে নিজেকেই রক্ষা করতে পারছে না। যেকোনো সড়ক নির্মাণের পেছনে শুধু অর্থ ব্যয় করাই যথেষ্ট নয়, এর যথাযথ নকশা অনুসরণ, রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ প্রভৃতিও অপরিহার্য। অন্যথায়, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অনেক অর্থের অপচয় হবে এ গরিব দেশে। এটা জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ নিছক ‘পানিতে ঢালা’র শামিল এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। আমাদের দেশে অতীত থেকেই দেখা যাচ্ছে, জনদুর্ভোগ দূর হোক বা না হোক, ক্ষমতাবান ও দুর্নীতিপরায়ণ একশ্রেণীর আমলার দৃষ্টিতে তাদের কথিত অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মনোভাবটা হলো, ‘লাগে টাকা; দেবে গৌরীসেন’ অথবা ‘সরকার কা মাল, দরিয়া মে ঢাল।’ এর ফলে দুর্নীতি, অপচয়, অনিয়মসহ নানাবিধ অন্যায় প্রশ্রয় পায় এবং দেশের সত্যিকার উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায় না। তাই এই গণবিরোধী ধারার অবসান ঘটাতে হবে অবিলম্বে, যাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরিবর্তিত মনোভাব জনগণের সার্বিক কল্যাণে নিয়োজিত হতে পারে।
আমাদের আশা, ছাগলনাইয়াসহ দেশের সর্বত্র টেকসই ও কার্যকর উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হবে। অন্যথায়, জনগণ উন্নয়নের সুফল পাবে না এবং নানা প্রকার অনিয়ম অব্যাহত থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement