২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
কুষ্টিয়ায় মা-শিশুসন্তানসহ তিন খুন

অপরাধী যেন ছাড় না পায়

-

স্ত্রী-শিশুসন্তান ও স্ত্রীর কথিত প্রেমিককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছেন পুলিশের এক এএসআই। কুষ্টিয়া শহরে গত রোববার সকালে নির্মম এ ঘটনা ঘটে। খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত এএসআই সৌমেন রায় সরকারি পিস্তল দিয়ে প্রথমে স্ত্রীর কথিত প্রেমিক শাকিলকে এরপর স্ত্রী আসমাকে এবং সবশেষে তার পাঁচ বছরের শিশুপুত্র রবিনকে গুলি করে হত্যা করেন। সৌমেন ছিলেন আসমার তৃতীয় স্বামী। আসমা সৌমেনের দ্বিতীয় স্ত্রী। আসমা ছাড়াও সৌমেনের আরেক স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। পুলিশ সৌমেনকে আটক করেছে। তাকে রোববার রাতেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন দাবি করেছেন, নিহত যুবক শাকিলের সাথে তার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল। তাই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তিনি।
পাঁচ বছর আগে সৌমেন ও আসমার বিয়ে হয়। আসমা তার দ্বিতীয় স্বামীর ঔরসে জন্ম নেয়া শিশুসন্তান রবিনকে নিয়ে সৌমেনের সাথে বসবাস করতেন। দুই বছর আগে সৌমেন কুষ্টিয়া থেকে খুলনায় বদলি হন। তখন তিনি স্ত্রীকে কুষ্টিয়ায় বাসা ভাড়া করে দেন। রোববার তিনি আসমাকে তার কর্মক্ষেত্র খুলনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু আসমা তাতে রাজি হননি। তিনি সৌমেন বা শাকিল কারো সাথেই সম্পর্ক রাখবেন না বলে জানান। সৌমেন তখন শাকিলকে ফোন করে ডেকে আনেন। তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে শাকিল এবং পর পর স্ত্রী ও সন্তানকে গুলি করে হত্য করেন।
সৌমেন ও আসমার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্রে যা জানা যাচ্ছে, তাতে ধারণা করতে সমস্যা হয় না যে, উভয়েরই কিছু সমস্যা ছিল। ঘটনার সময় তিনি বেআইনিভাবে সরকারি পিস্তল ও গুলি নিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি সবসময়ই গর্হিত ও অগ্রহণযোগ্য। আসমার সাথে শাকিলের সম্পর্ক ছিলÑ এ দাবি কতটা সত্য আমরা জানি না। স্বামীর সাথে কর্মস্থলে যেতে আসমা কেন অস্বীকৃতি জানালেন সেটি মূল প্রশ্ন। পুরো বিষয়টি মানবিক সম্পর্কের জটিলতা থেকে উদ্ভূত বলা যায়। সমাজবিজ্ঞানীরা এর যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। তবে সাধারণভাবে আমরা বলতে পারি, সমাজে পরকীয়ার বিস্তারের নানা উপকরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। গল্প, উপন্যাস, কাব্য, চলচ্চিত্র, পর্নোগ্রাফিÑ সব কিছুতেই গর্হিত সম্পর্কের রমরমা উপস্থাপন তরুণ-তরুণীদের স্বাভাবিকভাবেই আকৃষ্ট করে। বিভ্রান্তির দিকে নিয়ে যায়। এ তিন খুনের ঘটনা সেই বাস্তবতারই প্রতিফলন কি না এখনই চূড়ান্তভাবে তা বলা যাবে না। অন্য মোটিভও থাকতে পারে।
কিন্তু সৌমেন যেকোনো বিবেচনায় একজন খুনি। আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। হয়তো সর্বোচ্চ শাস্তি হবে; কিন্তু একটি কথা না বললে নয়, সেটি হলোÑ দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বাস্তব অবস্থা খুব ভালো নয়। ক’দিন পরপরই চাঞ্চল্যকর সব হত্যার ঘটনা ঘটছে। নৃশংসভাবে খুন হচ্ছে মানুষ। এর পেছনে সার্বিক রাষ্ট্রীয় পরিবেশ পরিস্থিতির প্রভাব অস্বীকারের উপায় নেই। যে দেশে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে সরকারি দফতরে টেন্ডারের জন্য মহড়া দেন অথচ তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না, সে দেশে কোনো কারণে সংক্ষুব্ধ হলে যে কেউ আইন হাতে তুলে নিতে দ্বিধা করবেন নাÑ এটি অস্বাভাবিক নয়। তার ওপর যদি তার হাতে থাকে সরকারি অস্ত্র; তা হলে তো কথাই নেই। খুলনার পুলিশ সুপার বলেছেন, খুনির উপযুক্ত বিচার হবে। আমরা শুধু একজন খুনির বিচার নয়, দলীয় পরিচয় নির্বিশেষে আইন ভঙ্গকারী যেকোনো অপরাধীর যথাযথ বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত হবে এটাই দেখতে চাই।


আরো সংবাদ



premium cement
ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মরণসভা টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ, আদেশ ২৯ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাব সদস্য আফতাব হোসেনের ইন্তেকাল শনিবার থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রস্তুত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার হলেন সাব্বির আহমেদ ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধানবিরোধী নয় গাজীপুরে জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করার নিন্দা অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন গোল্ডেন মনির ৪২২ যাত্রী নিয়ে কুয়ালালামপুর গেল ইউএস-বাংলার এয়ারবাস মুগদায় গৃহবধূর ওপর পেট্রলবোমা নিক্ষেপ একজন গ্রেফতার চট্টগ্রামে ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ওয়ার্কফোর্স শীর্ষক কর্মশালা

সকল