অবিলম্বে দূর করুন
- ১১ জুন ২০২১, ০৪:১৪
পানির অন্য নাম ‘জীবন’। সেই পানির সঙ্কট মানুষের এবং যেকোনো প্রাণীর কত বড় সমস্যা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমন জীবন-মরণ সঙ্কটে নিপতিত হয়েছেন খুলনার ৬৮টি ইউনিয়নের জনগণ। গত আট মাস ধরে প্রত্যাশিত মাত্রায় বৃষ্টি না হওয়ায় এই অবর্ণনীয় পরিস্থিতি জন্ম নিয়েছে। গত কয়েক দিনে কিছু বৃষ্টি হলেও তা অনেক ক্ষেত্রেই যথেষ্ট নয়। ইতোমধ্যে দীর্ঘ দিন বৃষ্টিপাতের অভাবে উপকূলের বহু স্থানে পানির স্তর ভূগর্ভের অনেক নিচে নেমে গেছে। এ কারণে নলকূপে পানি উঠছে না। ফলে সাধারণ মানুষ খাবার পানির অভাবে অসাধারণ দুর্ভোগের সম্মুখীন। সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর পরিবেশন করেছে একটি জাতীয় দৈনিক। এর খুলনা অফিসের পাঠানো প্রতিবেদনটিতে ছাপা হওয়া ছবিতে দেখা যায়, বাধ্য হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে খাবার পানি কলসিতে করে আনছেন গ্রামীণ মহিলারা।
বর্ষা মৌসুম শুরু হচ্ছে। এ সময়ে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে হয় বাংলাদেশের বহু স্থানে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় এই পানি সংরক্ষণের প্রকল্পগুলো অনেক ক্ষেত্রে অকার্যকর হয়ে গেছে। ফলে বিস্তীর্ণ জনপদে খাবার পানির অভাবে জনগণের ভোগান্তি অনেক বেড়ে গেছে। অনেক এলাকায় পুকুর খুঁড়ে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে হলেও এই পানির মান, অর্থাৎ বিশুদ্ধতার ঘাটতি অনস্বীকার্য। গত বছরের শেষ দিক থেকে দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় খরাতুল্য বৈরী অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এবার বর্ষায় যদি কাক্সিক্ষত বৃষ্টি হয়, তা হলে প্রকৃতির বুকে হয়তো দূষণের মাত্রা কমবে। কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা না হলে বিশুদ্ধ বা খাবার পানির দুঃসহ সঙ্কট কাটবে না। ফলে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগব্যাধি ব্যাপক হারে দেখা দেয়া বিচিত্র নয়।
খুলনা জেলার দক্ষিণ অঞ্চলে দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা তিনটির বেশির ভাগ ইউনিয়নেই সাধারণ নলকূপ দূরের কথা, এমনকি গভীর নলকূপ দিয়েও মিঠা পানি পাওয়া যায় না লবণাক্ততার দরুন। ফলে কয়রার উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশি, কয়রা, মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর, দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা, তিলডাঙ্গা ও পানখালী এবং পাইকগাছার সব ইউনিয়ন, সেই সাথে বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ও জলমা ইউনিয়নে এবং ফুলতলা ও রূপসা উপজেলার কিছু স্থানে খাওয়ার পানির সঙ্কট দেখা দেয়। সব মিলিয়ে বলা যায়, খুলনা জেলার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষই খাবার পানির সঙ্কটে আছেন। জেলার ৭৮ হাজার গভীর নলকূপের সমস্যা অভিন্ন। গত বছর ভূগর্ভে পানির স্তর ১৮-২২ ফুট নেমেছিল এই উপজেলাগুলোতে। এবার দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও পানি নেমে গেছে ২৫ থেকে ২৭ ফুট নিচে।
কয়রার এক ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্যÑ ‘সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলে খাওয়ার পানির অভাব থাকে সর্বদাই। নলকূপে এক দিকে লবণাক্ততা, অপর দিকে আর্সেনিক। তাই সে পানি মোটেই নিরাপদ নয়।’ কর্তৃপক্ষের মতে, ‘জলাশয় ভরাট এবং গাছপালা উজাড় হয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে মাটির নিচ থেকে পানি তোলা হচ্ছে। বছরজুড়ে প্রকৃতির আচরণ বিরূপ। পানি ব্যবহার করা হচ্ছে গবাদিপশুর খামার, রাস্তা ও বিল্ডিং তৈরি, পাথর-খোয়া ভিজানো, বালু ভরাট প্রভৃতি কাজেও। এতে অপচয়ের পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ পানিশূন্যতা তৈরি হচ্ছে।’
আমরা মনে করি, জনগণকে লবণাক্ততা থেকে রক্ষা এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থ দ্রুত নিশ্চিত করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা