বিপজ্জনক মোড় নিতে পারে
- ১০ মে ২০২১, ০১:৩৬
দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এখানে সরকারিভাবে স্বীকার করার আগে জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসআইডি) এ তথ্য প্রকাশ করে। পরে স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। যশোর এলাকার আটজন কোভিড-১৯ রোগীর নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে দু’জনের মধ্যে হুবহু ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। এ ছাড়া ছয়জনের মধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট অথবা এর কাছাকাছি ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক যেসব ধরন বিশ্বে বিপর্যয় হয়ে দেখা দিয়েছে এর মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ আফ্রিকান, ইউকে, ব্রাজিলিয়ান এবং ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মক সংক্রামক। ভারতজুড়ে নারকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে একাধিকবার রূপান্তরিত এই ভাইরাস। একাধিকবার রূপ পাল্টেছে বলে এটিকে বলা হচ্ছে ডাবল মিউট্যান্ট ভাইরাস। আইপিএল, গঙ্গাস্নান, নির্বাচন ইত্যাদি নানা উৎসব নিয়ে মেতে ওঠা ভারতীয়রা এখন তার খেসারত দিচ্ছে। প্রতিদিনই ছাড়িয়ে যাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর আগের রেকর্ড। চিকিৎসা দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে মানুষ। বাংলাদেশের সাথে টিকা সরবরাহের চুক্তি করেও তা ভঙ্গ করেছে দেশটি। পরে অক্সিজেন সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ স্বাস্থ্য খাতের অক্সিজেনের জন্য ভারতের ওপরই নির্ভরশীল বাংলাদেশ। এমনই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও নেপালের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি গুরুতর বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের দেশে মৃত্যুর হার যদিও এই মুহূর্তে কিছুটা কমে এসেছে তবু যেকোনো মুহূর্তে অবস্থার অবনতির আশঙ্কা থেকেই যায়। আশঙ্কার বড় কারণ আমাদের অসতর্কতা। কেবল সাধারণ মানুষই যে অসতর্ক তা-ই নয়, সরকারের পদক্ষেপও যে কাক্সিক্ষত পর্যায়ের এমন বলা যাচ্ছে না। ঈদ সামনে রেখে লাখ লাখ মানুষ সারা দেশে যাতায়াত করছে। স্থানীয়ভাবে গণপরিবহন খোলা, শপিংমলে ভিড়ের চিত্র প্রায় স্বাভাবিক সময়ের মতো। সরকারিভাবে ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে দুই সপ্তাহ আগে। সেই বন্ধের মেয়াদ আবার আজ থেকে আরো ১৪ দিন বাড়ছে। কিন্তু সীমান্তে জনচলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। প্রথম ১৪ দিনের মেয়াদে ভারত থেকে প্রায় তিন হাজার মানুষ বাংলাদেশে ঢুকেছে। তাদের যথাযথভাবে কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে এমনো নয়। তার পরও ১৭ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। ভারত ফেরত এসব মানুষের মাধ্যমে বাংলাদেশীরা বিপন্ন হতে পারে। আর করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে সেই শঙ্কাই যেন বাস্তবে রূপ পেতে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিল। কিন্তু তা নেয়া হয়নি। যেমন অস্ট্রেলিয়া সরকার ঘোষণা করেছে, ভারত থেকে কোনো অস্ট্রেলিয়ান নিজ দেশে ফিরলে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হবে। আমরা এমন কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।
শুধু ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধ করাই যথেষ্ট নয়। অভ্যন্তরীণ চিকিৎসার সব ব্যবস্থাও থাকা দরকার ছিল। কিন্তু সেই অবস্থা নেই। আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ যে চরম নাজুক অবস্থায় রয়েছে; তা কোনো অজানা বিষয় নয়। নতুন কোনো উৎস থেকে টিকা পাওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করতে পারিনি আমরা। যুক্তরাষ্ট্র যে টিকার মজুদ করেছে সেখান থেকে ৪০ লাখ ডোজ চেয়েছে বাংলাদেশ। সেটিও দ্রুত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যুক্তরাষ্ট্র আগে ভারতকে টিকা সরবরাহ করবে। এরপর হয়তো বাংলাদেশ আশা করতে পারে। এরপর দেশে টিকা উৎপাদনের কথা শোনা যাচ্ছে। সেটি এখনো চূড়ান্ত নয়।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক থাকা ছাড়া তেমন কিছু করার নেই। আর সতর্কতা মানে হলো কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। ঘণ্টায় ঘণ্টায় সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড করে হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, মানসম্মত মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং যতদূর সম্ভব ঘরে অবস্থান করা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা