১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
দুগ্ধশিল্পে চরম বিপর্যয় নেমেছে

অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে

-

এবার লকডাউনে পাবনা ও সিরাজগঞ্জের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় দুগ্ধশিল্পে নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। করোনাভাইরাসের মাধ্যমে সৃষ্ট কোভিড মহামারীর উপর্যুপরি তাণ্ডবের প্রেক্ষাপটে বারবার সরকার সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করছে আর দুগ্ধশিল্পের খামারিদের লোকসান বাড়ছে। এবার লকডাউনে উক্ত অঞ্চলের দুগ্ধ উৎপাদক তথা খামারিদের এক দিনেই প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের খামার মালিকেরা অনেকে দুগ্ধবতী গাভী বেচে দিতেও বাধ্য হয়েছেন। পাবনার বেড়ায় এবং সিরাজগঞ্জের কোথাও কোথাও এটা সবিশেষ লক্ষণীয়।
নয়া দিগন্তের পাবনা প্রতিনিধির পাঠানো খবরে আরো জানা যায়, বাঘাবাড়ীস্থ মিল্কভিটাসহ ২০টির মতো দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ টার্গেট মোতাবেক দুধ সংগ্রহ করছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দুধ কিনছেন না বিধায় পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের দেড় লাখ খামারিকে উদ্বৃত্ত পাঁচ লাখ লিটার দুধ নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হয়। তাই অনেকে তাদের দুধ রিকশা ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মাত্র ৩০-৩৫ টাকা লিটার দরে বিক্রি করতে বাধ্য হন। আর নন-ফ্যাট দুধের প্রতি লিটার মাত্র ৫ থেকে ১০ টাকা করে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এক দিকে দুধের দাম কম, অন্য দিকে গো-খাদ্যের খরচ বেড়ে গেছে। ফলে লোকসানের মুখে বহু দুগ্ধখামার আর চালু রাখা যায়নি।
জানা গেছে, পাবনা ও সিরাজগঞ্জে দৈনিক দুধ উৎপাদন হয়ে থাকে ১৫ লাখ থেকে সাড়ে ১৬ লাখ লিটার। এর মধ্যে দেড় লাখ লিটার বাঘাবাড়ীস্থ মিল্কভিটা কিনে নেয়। অন্য ছয়টি বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিচ্ছে সাড়ে চার লাখ লিটার। আর ‘প্রাণ’ এক লাখ লিটার দুধ কিনে বাজারে বিক্রি করছে। সবক’টি প্রতিষ্ঠান মিলে ৭-৮ লাখ লিটার দুধ প্রতিদিন সংগ্রহ করে থাকে। বাকি বিপুল পরিমাণ দুধ ঘোষ সম্প্রদায়সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে থাকেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে তারা দুধ কিনেন না। কারণ তখন মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকে এবং ছানার চাহিদা এ জন্য কমে যায়। লকডাউনের সময়ে ব্যবসায়ীরা উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, বগুড়া, নাটোর, নওগাঁসহ বিভিন্ন এলাকায় দুধ সরবরাহ করতে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে, গ্রামে ফেরি করে দুধ বেচলে উৎপাদন ব্যয়ও উঠে আসে না।
অপর দিকে, গরুর খাদ্যসামগ্রীর দাম হঠাৎ প্রতি বস্তায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে সাধারণ খামারিরা এখন দিশাহারা। দুধের দাম কমে যাওয়ায় বড় খামারিরা সব ননী তুলে ডিপফ্রিজে দুধ সংরক্ষণ করছেন। কেউ কেউ ঘি তৈরি করে মজুদ করছেন। যারা এসব করতে পারেন না, তাদের ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় ননীবিহীন অর্থাৎ নন-ফ্যাট দুধ মাত্র পাঁচ টাকা দরেও বেচতে হয়েছে। ফ্যাট তুলে নেয়ার পরও দুধের গুণগতমান অক্ষুণœ থাকে। তবুও এই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে। পাবনার ফরিদপুর উপজেলার একজন খামারি জানান, তার এলাকায় দুধ কেজিপ্রতি মাত্র ২৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। অন্য দিকে, ৪৫ কেজি ওজনের একবস্তা ভুসি কয়েক দিন আগেও ১২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বেড়ে তা হয়েছে দেড় হাজার টাকা।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘খামারিদের স্বার্থে বড় বড় কোম্পানিকে বলা হয়েছে, এ সময়ে দুধ নেয়ার পরিমাণ কমানো যাবে না। খামারিদের বাকি দুধ সঠিকভাবে বিক্রির জন্য গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। দুধ থেকে গেলে তা এ গাড়িতে থাকবে যা কর্তৃপক্ষ মনিটরিং করবে।’
আমরা মনে করি, গো-খাদ্যের মূল্য কমানো, দুধের উপযুক্ত বিপণন, ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনা প্রদান, প্রভৃতি পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মোরেলগঞ্জে সৎভাইকে কুপিয়ে হত্যা দুবাই পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণ কি কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরানো? এ দেশের ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে : ডাঃ শফিকুর রহমান পিছিয়েছে ডি মারিয়ার বাংলাদেশে আসার সময় ইরানে হামলা : ইস্ফাহান কেন টার্গেট? মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

সকল