যাদের প্রয়োজন শুধু তাদের দিন
- ১৭ এপ্রিল ২০২১, ০০:০৫
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ দিয়েছে সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। ব্যাংক, শিল্প-কারখানা, হাসপাতাল, সংবাদমাধ্যমসহ জরুরি সেবা খাতগুলো খোলা থাকায় বিধিনিষেধের আওতামুক্ত এসব খাতে কর্মরতরা। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে কাউকে বাইরে বেরুতে হলে তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে মুভমেন্ট পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে পাস সংগ্রহে নির্দিষ্ট অ্যাপসে সহজে ঢুকতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট সময় ও গন্তব্যের জন্য মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হবে। ওই সময় অতিবাহিত হলে কিংবা নির্ধারিত গন্তব্য থেকে অন্য কোথাও যেতে হলে ফের মুভমেন্ট পাস নিতে হবে। এই পাস শুধু জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারযোগ্য। নিত্যপণ্য ও ওষুধপত্র কেনা, চিকিৎসা, কৃষিপণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, লাশের সৎকারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করা যাবে। কিন্তু লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে চলাচলে মুভমেন্ট পাস কাদের জন্য প্রযোজ্য এবং কাদের জন্য প্রযোজ্য নয়, বিষয়টি সুনির্দিষ্ট হওয়ার পরও এই পাস নিয়ে ইতোমধ্যে নানা আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। জরুরি সেবায় নিয়োজিত অনেককে বাইরে বেরিয়ে জরিমানা গুনতে হয়েছে। নিয়মানুযায়ী তাদের মুভমেন্ট পাস লাগার কথা নয়।
জরুরি প্রয়োজনের অজুহাতে বের হওয়ার সুযোগ নিতে পুলিশের মুভমেন্ট পাস নেয়ার হিড়িক পড়েছে। পুলিশের তথ্যমতে, মুভমেন্ট পাস ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ২৪৩ বার হিট হয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধন করতে পেরেছেন পাঁচ লাখ ৯ হাজার ৪৯৪ জন। মুভমেন্ট পাসের ওয়েবসাইটে প্রতি মিনিটে আট হাজার ৭৬৩টি হিট হয়েছে। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হয় তিন লাখ ৫৭ হাজার ১৯০টি। পুলিশ সদর দফতরের গণসংযোগ বিভাগের ভাষ্যমতে, যারা যথাযথ নিয়মে আবেদন করছেন, যাচাই-বাছাই শেষে তাদের পাস দেয়া হচ্ছে। এটি নিয়ে কোনো ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে কি না, তাও যাচাই করা হচ্ছে।
কঠোর লকডাউনের মধ্যে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিনে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় বের হয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। গুনতে হয় জরিমানা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে পড়া বেশির ভাগ মানুষ মুভমেন্ট পাস দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। সঙ্গত কারণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তিন লাখের বেশি মুভমেন্ট পাস নিলেন কারা? দেশব্যাপী চলমান কঠোর লকডাউনের সময় লোকজনকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ যেন চলাচল করতে পারেন, সেজন্য মুভমেন্ট পাসের ব্যবস্থা। লক্ষণীয় হলো, লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মুভমেন্ট পাস নেয়ার হিড়িক পড়েছে মানুষের মধ্যে। ব্যাংক ও বিভিন্ন অফিস খোলার কারণে লকডাউনের প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস তুলনামূলক বেশি চলেছে। অকারণেও কেউ কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছেন।
মহামারীর এই সময়ে দেশের সব নাগরিককের একটু বেশিই সচেতন থাকতে হয়। আপদকালে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের দেশে উচ্চপর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আইনভঙ্গের প্রবণতা প্রবল। বাস্তবে চলমান সময়ের বাস্তবতায় সবারই কঠোরভাবে লকডাউনের নিয়ম মেনে চলা উচিত। তবে এও সত্যি যে, এর মধ্যেও এমন জরুরি বিষয় এসে হাজির হয়; তাতে বাধ্য হয়ে ঘরের বাইরে বেরুতে হয়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই মুভমেন্ট পাস সংগ্রহ করা জরুরি। শুধু শুধু আবেদন করা সুবিবেচনাপ্রসূত নয়। এতে করে অন্যের গুরুতর প্রয়োজন পূরণেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে লকডাউন কার্যকর করতে মুভমেন্ট পাস প্রকৃতই যাদের প্রয়োজন; শুধু তাদের জন্যই ইস্যু করা বাঞ্ছনীয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা